ডিজিটাল মিডিয়ায় সম্পাদকীয় রূপরেখার প্রয়োগে জোর

ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অপতথ্য ছড়ানো রোধ করতে ডিজিটাল গণমাধ্যমে সম্পাদকীয় রূপরেখার প্রয়োগ ও গণমাধ্যম বিষয়ক জ্ঞান উন্নত করা উপর জোর দিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের ডিজিটাল ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটির কমিশনার মারিয়া গাব্রিয়েল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2018, 08:09 AM
Updated : 12 June 2018, 08:34 AM

সোমবার জার্মানির বনে শহরের ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সেন্টারে বিশ্ব গণমাধ্যম সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটালাইজেশন ইন ইউরোপ: হাউ ডাজ ইউরোপ মিট দ্য চ্যালেঞ্জেস' শিরোনামে মূল প্রবন্ধে তিনি এই আহ্বান জানান।

১২০টি দেশের প্রায় ২ হাজার সাংবাদিক, গণমাধ্যম উদ্যোক্তা, কর্মী, এনজিওকর্মী, ব্লগার এবং সংবাদসংশ্লিষ্টরা মিলিত হয়েছেন এবারের গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামের সম্মেলনে৷

গাব্রিয়েল বলেন, “ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সমাজকে আরো গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করার সুযোগ এনেছে। কিন্তু অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে এমন গতিতে এমন মাত্রায় অপতথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে যে, আমাদের গণতন্ত্র এমন প্রপঞ্চের সঙ্গে আগে মুখোমুখি হয়নি।”

“কিছু প্লাটফরম মিডিয়া আউটলেটের সঙ্গে সম্পর্কিত গতানুগতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে; বিষয়বস্তুর সংগ্রাহক ও পরিবেশক হিসেবে তারা সংবাদ বাণিজ্যে ঢুকছে। কিন্তু এই ধরনের কর্ম সম্পাদনকারীর সম্পাদকীয় রূপরেখা ও সক্ষমতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

“মুক্ত, বৈচিত্র্যময়, স্বাধীন ও টেকসই গণমাধ্যম বহুত্ববাদের পূর্বশর্ত।”

প্রকাশক ও বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য স্বনিয়ন্ত্রিত একটি বিধিমালা প্রণয়নসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে গণমাধ্যম খাতের রূপান্তরের বিষয়টি তুলে ধরেন গাব্রিয়েল। আন্তঃদেশীয় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য আর্থিক সহায়তা এবং সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রকল্প হাতে নেওয়া এই পদক্ষেপগুলোর অন্যতম।

একটি গবেষণার বরাত দিয়ে উন্নত গণমাধ্যম শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আবেদন জানান। গবেষণাটিতে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী ৬০ শতাংশ মানুষ সত্যিকারের সংবাদ ও ভুল তথ্যের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না।

তিনি বলেন, আসছে ইউরোপীয় সপ্তাহে নাগরিকদের গণমাধ্যম বিষয়ক জ্ঞান উন্নত করতে শিক্ষামূলক পদক্ষেপ জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

গাব্রিয়েল বলেন, “আমাদের প্রত্যেককে ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই বহুত্ববাদ ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে গণমাধ্যম শিল্পকে অবশ্যই উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রকে নিশ্চিত করতে হবে।”

সোমবার সকাল ১০টায় বন শহরের ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সেন্টারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের প্রেসিডেন্ট আরমিন লাশেট৷

সম্মেলনের আয়োজকদের পক্ষ থেকে মঞ্চে আসেন ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পিটার লিমবুর্গ৷ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল।

সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকেও গণমাধ্যমের শীর্ষ কর্মকতা, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক  ও ব্লগারসহ মিডিয়ার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যোগ দিচ্ছেন৷

চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (নির্বাহী) ফরিদুর রেজা সাগর, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীন, আরটিভির প্রধান নির্বাহী আশিক রহমান, রেডিও ভূমির প্রধান কর্মকর্তা শামস সুমন এবং ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক ও বার্তাকক্ষ প্রধান জাহিদুল কবির সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।