‘সম্প্রচার আইন ও সম্প্রচার কমিশন’ গঠন শিগগিরই: ইনু

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও চাকরির পরিবেশ উন্নয়নে খুব শিগগিরই ‘সম্প্রচার আইন ও সম্প্রচার কমিশন’ গঠন করা করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2016, 04:47 PM
Updated : 21 Nov 2016, 05:15 PM

সোমবার ‘বিশ্ব টেলিভিশন দিবস ২০১৬’ উপলক্ষে সেগুন বাগিচায় অবস্থিত বাগিচা রেস্টুরেন্ট প্লাটিনাম হলে আয়োজিত ‘সম্প্রচার সাংবাদিকতা অগ্রগতি-উন্নয়নঃ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। 

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ।

সম্প্রচার আইন ও কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি গণমাধ্যমকে একটি ‘প্রাতিষ্ঠানিক রূপ’ দেওয়া হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আশা করি ২০১৭ সালের শুরুতে আমরা সম্প্রচার আইন ও সম্প্রচার কমিশন করতে যাচ্ছি। আইন ও কমিশন গঠন করার মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের একটি ধাপ সম্পন্ন করা হবে।”

গণমাধ্যমকে গণতন্ত্রের ‘প্রহরী সংস্থা’ হিসেবে অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রকে নিরাপদ করতে এর ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পাশাপাশি গণমাধ্যমেরও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রয়োজন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের উপর চালানো বিভিন্ন হামলা ও নির্যাতনের কথা তুলে ধরে কর্মক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

আলোচনায় তথ্য মন্ত্রী সাংবাদিকদের উপর চালানো আক্রমণের পেছনে দেশের মাফিয়া-চক্র ও জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসীদের দায়ী করে ২০১৭ সালের শুরুতে আইন ও কমিশন করে কর্মক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তথ্যমন্ত্রী ইনু।

জাসদের এই নেতা বলেন, সম্প্রচার আইন ও কমিশন শুধু জঙ্গিবাদী তৎপরতা থেকে নয়- রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, যে কোনো ক্ষমতা অপব্যবহারকারীদের হাত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সংবিধান প্রদত্ত অধিকার সংরক্ষণ করে সাংবাদিকদের অব্যাহতভাবে গণতন্ত্র চর্চার সুবিধা করে দেবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের চাকরি বিধিমালা ও পরিবেশ উন্নয়নে নবম ওয়েজ বোর্ডে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কলাকুশলী ও সাংবাদিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান হাসানুল হক।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সংবিধানে যে আইন আছে তাতে সম্ভব হচ্ছে না বিধায় ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর করা আইন এনে তাতে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

অতীতে করা ওয়েজ বোর্ডে  প্রিন্ট মিডিয়ার কলাকুশলী ও সাংবাদিকদের বেতন-ভাতার কথা উল্লেখ থাকলেও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের বেতন-ভাতার বিষয়ে নির্দেশনা ছিল না বলে বহু দিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।

দেশের মিডিয়াগুলোর স্বত্বাধিকারী ও মালিকপক্ষকে নতুন প্রণীত আইন মেনে স্ব স্ব মিডিয়ার নিয়মনীতি ও কর্ম সংগ্রহ নীতি তৈরি করার কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

এই গোল টেবিল বৈঠকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিথি এ কে এম আব্দুল মোমেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জনসহ দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশের পরিচালক রিদওয়ান করীম তুহিন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী এম এম বাদশাহ।

জাতিসংঘ ১৯৯৬ সালে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন মিডিয়া মিউজিয়াম অব বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করে আসছে।