‘দুর্দান্ত ১০ বছর’

যাদের ঘিরে, যাদের জন‌্য সঙ্কটে-সম্ভাবনায় আবর্তিত হয়েছে সংবাদের চাকা, তাদের সঙ্গে এক মঞ্চে মিলে প্রতিষ্ঠার ১০ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2016, 03:34 AM
Updated : 23 Oct 2016, 08:02 AM

সরকার আর রাজনৈতিক দলের নীতি-নির্ধারক; বিচারপতি-আইনজীবী, ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তা, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মী-ক্রীড়াবিদ-সংগঠক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা আর নানা ক্ষেত্রে বাঁক বদলের সাক্ষীরা সঙ্গী হচ্ছেন আনন্দঘন এই উদযাপনে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন মুখপাত্র জানান, রোববার রাত ৮টায় রাজধানীর র‌্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের বলরুমে বসবে এই মিলনমেলা।

দশকপূর্তি উপলক্ষে সাড়ে ৮টায় প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বক্তব্য শেষে নৈশভোজের মধ‌্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে। অনুষ্ঠানটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

‘ডটকম’ জগতে বাংলাদেশের সংবাদকে নিয়ে যাওয়ার দিশারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “নতুন একটি প্রজন্মের জন‌্য, নতুন একদল পাঠকের পরিবর্তনশীল রুচি ও পছন্দের কথা মাথায় রেখে কাজ করা ছিল কঠিন। উত্তাল দশটি বছর আমরা সেই চ‌্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি আনন্দের সঙ্গে।”

শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালের প্রথমার্ধে। অন্যান্য বার্তা সংস্থার মতো ‘বিডিনিউজ’ তখন সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য খবর সরবরাহ করত। দেশের অন্য সংবাদ সংস্থাগুলো টেলিপ্রিন্টারে খবর সরবরাহ করলেও বিডিনিউজ এ কাজটি শুরু করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

২০০৬ সালে বার্তা সংস্থাটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা বদলের পর এর খোল-নলচে বদলে যায়। সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর নেতৃত্বে নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের প্রথম ডটকম কোম্পানির রূপ দেয়। নতুন আঙ্গিকে এর পরিচয় হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন মুখপাত্র বলেন, “ওই বছর অক্টোবরে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর রাজপথে রক্তক্ষয়ী সহিংসতার মধ‌্যে বাংলাদেশ যখন ছদ্মবেশী সামরিক শাসনের এক নতুন অধ‌্যায়ের দ্বারপ্রান্তে, অনিশ্চিত সেই সময়ে ২৩ অক্টোবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম উৎসুক পাঠকের জন্য সমস্ত কন্টেন্ট উন্মুক্ত করে দেয়। যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্রের।”

পাঠকদের জন্য ২৪ ঘণ্টা দেশ-বিদেশের সর্বশেষ ঘটনার খবর বাংলা ও ইংরেজি- দুই ভাষায় বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ নিয়ে আসা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এরপর এক দশকে নিয়মিত উপহার দিয়েছে নতুন নতুন সংবাদ সেবা।

দিনে দিনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাজের ব্যাপ্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি মিলেছে পাঠক, শুভানুধ্যায়ীদের সাড়া। সব ধরনের পাঠকের পছন্দ মাথায় রেখে যুক্ত হয়েছে বিষয়ভিত্তিক আলাদা পোর্টাল।

প্রতি মাসে দশ কোটি পেইজ ভিউ এবং এক কোটি ইউনিক ভিজিটর নিয়ে পরিণত হয়েছে একক পাঠক সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংবাদ মাধ্যমে; পাঠকের কাছে বিবেচিত হচ্ছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ‌্য সংবাদ প্রকাশক হিসেবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম মুখপাত্র বলেন, ইন্টারনেটে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে একটি ব্রাউজার থেকে একটি ওয়েবসাইটে ‘একসেস’ করাকে একটি ‘ইউনিক ভিজিট’ ধরা হয়, যা প্রকাশনা শিল্পে মুদ্রিত সংবাদপত্রের প্রচার সংখ্যার সঙ্গে সমতুল্য।

“অর্থাৎ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম যদি মুদ্রিত সংবাদপত্র হত, তাহলে এর প্রচার সংখ্যা এক কোটিতে দাঁড়াত। এই সংখ‌্যা দেশের সব মুদ্রিত সংবাদপত্রের সম্মিলিত প্রচার সংখ‌্যার বহুগুণ বেশি।”

২০১৩ সালের মে মাসে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও তাণ্ডবের দিনে ১০ লাখেরও বেশি পাঠক তাৎক্ষণিক সংবাদের জন্য চোখ রেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে। 

ওই বছর ১২ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘হিট’ ছিল প্রায় ১৭ লাখ। ফাঁসির খবর পেতে সেই রাতে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই এ সাইটে আসেন ২ লাখ পাঠক।

২০১৫ সালের ১৯ মার্চ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে হিট ছিল ১৫ লাখের বেশি।

আর চলতি বছর ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘হিট’ ১৭ লাখ ২৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়, যা এ যাবত কালের সর্বাধিক।

সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে থেকেও পাঠক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সঙ্গে পাচ্ছে সর্বক্ষণ। ২০১১ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম যখন পঞ্চম বর্ষপূতি উদযাপন করে, ফেইসবুকে তাদের ফ্যান সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ২৫৭। পরের পাঁচ বছরে তা ৭২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

সময়ের উদ্ভাবনী মেজাজকে ধারণ করে গত দশ বছরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়েছে ‘মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট’। সেই সঙ্গে আছে মোবাইল ফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিউজ অ্যালার্ট সার্ভিস, ইংরেজি ও বাংলায় ব্রেকিং নিউজ, যে সেবায় তারাই বাংলাদেশে পথিকৃৎ।