‘আল কায়েদার বার্তা কোথা থেকে প্রচার, সরকার জানে’

বাংলাদেশে জিহাদের ডাক দিয়ে জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার অডিও বার্তাটি কোথা থেকে প্রচার করা হয়েছে- সরকার তা জানতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2014, 01:16 PM
Updated : 18 Feb 2014, 12:32 PM

সোমবার বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া অংশে নৌবাহিনীর বার্ষিক মহড়া দেখার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ওই বার্তা কোথা থেকে ট্রান্সমিট করা হয়েছে তা পাওয়া গেছে। তবে কে করেছে, তা পাওয়া যায়নি।

তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত প্রকাশ করা হচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি ইন্টারনেটে আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ এক অডিও বার্তা প্রচারিত হয়, যাতে বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানো হয়।  

গত বছরের হেফাজতকাণ্ডের সূত্র ধরে আল-কায়েদার ওই বার্তায় রাজপথে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের বিচার নিয়েও সংগঠনটির ক্ষোভ স্পষ্ট হয়েছে।

তারিক আহমেদ বলেন, “আগে যে ফেসিলিটিজ তারা (আল কায়েদা) পেত, তা এখন পায় না বলেই হুমকি দিচ্ছে। কারা সুবিধা দিত সে বিষয়ে বলছি না।”

“হুমকি দিক আর না দিক, তা সবসময়ই আছে। আমরাও সবসময় প্রস্তুত।

তারিক সিদ্দিক বলেন, “আগে তাদের (আল কায়েদা) একটা পলিসি ছিল। আমরা তোমাদের এখানে আসব-থাকব তবে তোমাদের ক্ষতি করব না। এখন আর সে পলিসি নেই।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসেই বলেছেন, এদের বের করে দাও। অনেককে বের করে দেয়া হয়েছে। আগে অনেক সরকারি সংস্থাও তাদের সুবিধা দিয়েছিল। তাই তার (প্রধানমন্ত্রীর) জীবনের ঝুঁকি অনেক আগে থেকেই আছে।”

সাগরে যুদ্ধের মহড়া

সোমবার সকাল ১১টা থেকে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া অংশে শুরু হয় ‘এক্সারসাইজ সি থান্ডার ২০১৪’ শিরোনামের মহড়ার চূড়ান্ত দিন। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া চার পর্বের মহড়া শেষ হয় সোমবার।

মহড়ার জন্য গঠিত কাল্পনিক দুটি নৌবাহিনী ইস্টল্যা- ও ওয়েস্টল্যা- এদিন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ক্ষেপনাস্ত্রবাহী দুই পক্ষের জাহাজ ১৬ কিলোমিটার দূরে রক্ষিত লক্ষ্যবস্তুতে মিসাইল দিয়ে আঘাত হানে। 

এছাড়া সাবমেরিন ধ্বংসের জন্য রকেট ডেপথ চার্জ এবং জাহাজে আঘাত হানার জন্য এন্টি সারফেস ফায়ারিং করা হয়।

এবারের মহড়ায় অংশ নেয় যুদ্ধজাহাজ, ফ্রিগেট, করভেট, ওপিভি, মাইন সুইপার, পেট্রোল বোট, গানবোট, টর্পেডো, পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টার।

মহড়া দেখার পর তারিক আহমেদ গভীর সমুদ্র বন্দর, নৌ বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধি, ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিষয়ক মামলাসহ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন।

তিনি বলেন, “চারপাশে চীন, ভারত ও মিয়ানমার থাকায় বাংলাদেশ ভূ-রাজনৈতিকভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানকার সি স্ট্রাটেজি খুব গুরুত্বপূর্ণ।”

সোমবার মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল ফরিদ হাবিব, কমডোর কমান্ডিং বিএন ফ্লোটিলা কমডোর এম খালিদ ইকবাল, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহম্মদ, ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমদ, বানৌজা বঙ্গবন্ধুর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন এস এম মনিরুজ্জামান প্রমুখ।