সাজসজ্জার টুকিটাকি

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের দোকান ও শপিংমলগুলোতে বিরতিহীনভাবে চলছে কেনাবেচা। ক্রেতাদের সঙ্গে পণ্যের গুণাগুণ ও দরদাম করতে করতে বিক্রেতারা হাফিয়ে উঠছেন। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্রেতারাও ছুটছেন মার্কেটের দিকে।

মরিয়ম মনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2015, 10:43 AM
Updated : 15 July 2015, 10:45 AM

নতুন জামাকাপড়ের সঙ্গে নতুন গহনা অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ। অঙ্গসজ্জায় গহনার সঙ্গে চাই প্রসাধনী।

গতকাল নগরীর বিভিন্ন কসমোটিকস দোকানে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সি নারীদের ভিড়। কিনছেন কানের দুল, লিপস্টিক, গলার হার, আলতা, ব্রেসলেট, পারফিউম ইত্যাদি। কসমেটিকস ব্যবসায়ীরা জানালেন, সারা বছর কেনাবেচা থাকলেও ঈদে ক্রেতার সংখ্যা বেড়ে যায়।

নগরীর বিপণী বিতান ও শপিংমলগুলোতে কসমেটিকসের যেমন চাহিদা রয়েছে তেমনি ফুটপাতেও আছে এর চাহিদা। নিম্নবিত্তের লোকজন ফুটপাত থেকে ক্রয় করছেন কসমেটিকস সামগ্রী। এসব কসমেটিকস সামগ্রীর মধ্যে দামেরও রয়েছে ফারাক। রাজধানীর নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, মেট্রো শপিং মল, বসুন্ধরা শপিং সেন্টার, মিরপুরের শাহ আলী প্লাজাসহ বিভিন্ন অভিজাত বিপনী বিতানে কসমেটিকস দোকানগুলোতে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়: পারফিউম বা সুগন্ধি ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা, বডি স্প্রে আড়াইশ থেকে ৫শ’ টাকা, মেইকআপ ও ফেইস মেইকআপ বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ থেকে ৩ হাজার টাকায়, আই লাইনার ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা, আই ব্রাউ ২০ থেকে ৫০ টাকা, আইশ্যাডো ৩০ থেকে ২শ’ টাকা, লেন্স ১৫০ থেকে ৫শ’ টাকা, নেইল পলিস ৫০

থেকে ২শ’ টাকা, বাজুবন্ধ ৩শ’ টাকা, লিপস্টিক ৩০ থেকে ১৫০ টাকা, কাজল ৫০ থেকে ৩শ’ টাকা, চুলের রং ৫০ থেকে ৫শ’ টাকা, টিপ ২০ থেকে ১শ’ টাকা, গ্লিটার ৫০ টাকা, আলতা ৪০ থেকে ১শ’ টাকা, স্নো ৫০ থেকে ১শ’ টাকা, ক্রিম একশ থেকে ৫শ’ টাকা, পাউডার ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্যান্ড ২০ থেকে ৫০ টাকা, ফিতা ১০ টাকা, কাটা ২০ থেকে ৬০ টাকা, নূপুর এক থেকে দুইশ টাকা, কাচের চুড়ি ৫০ থেকে ১শ’ টাকা, বালা ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা, কানের দুল ১শ’ থেকে ৫শ’ টাকা, গলার হার দেড়শ থেকে ৫শ’ টাকা ও ব্রেসলেট ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসব দোকানে সিটি গোল্ডের চুড়ি পাওয়া যাচ্ছে ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকায়। মোটা সিটি গোল্ডের চুড়ির দাম কিছুটা কম। এগুলো পাওয়া যাচ্ছে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায়। তবে ফুটপাতে এসব বিক্রি হচ্ছে আরও কমদামে।

রূপচর্চায় সচেতন নারীদের কসমেটিকসের পাশাপাশি ভ্যানেটি ব্যাগ ও পার্সও কিনতে দেখা গেছে। এসব ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।

কসমেটিকসের পাশাপাশি জুয়েলারির দোকানগুলোতেও এখন ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ইমিটেশনের ওপর স্টোন ও পার্লের কাজ করা আধুনিক গহনার সঙ্গে রয়েছে গোল্ড প্লেটের ওপর স্টোনের কাজ করা রাজস্থানী, জয়পুরি ও কাশ্মিরী গহনা। এবারের ঈদেও গহনার বাজার ডায়মন্ড কাট স্টোনের দখলে রয়েছে।

এছাড়া নতুন এসেছে ইমিটেশনের ওপর পার্ল ও বিভিন্ন রংয়ের স্টোনের হালকা কোরিয়ান সেট, লকেট, ব্রেসলেট, চুড়ি ও সিরামিকের কাজ করা থাইল্যান্ডের আংটি। রংয়ের ভিন্নতার কারণে ড্রেসের সঙ্গে মানিয়ে কেনা যাবে এসব গহনা।

নারীর সাজসজ্জা থেকে অনেক সময় বাদ পড়ে যাওয়া পায়ের অলংকার আঙলেট এবার ঈদে অন্যতম আকর্ষণ। জয়পুরি এই আঙলেট ছাড়াও আছে কাশ্মিরী ঝুমকা, পিকক সেট ও রাজস্থানী গহনা।

নগরীর ছোট বড় মার্কেটগুলোতে ইমিটেশন, কাঠ, স্টোন ও বিভিন্ন জিনিস দিয়ে তৈরি গহনা ও কসমেটিকের দোকানগুলোতে এসেছে নানান ধরনের গহনা। শুধু নিম্নবিত্ত নয়, উচ্চ মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও ভিড় জমিয়েছে এসব দোকানগুলোতে। এখানে রয়েছে কানের ঝুমকা, চুড়ি, আংটি, মালা, হেয়ার ক্লিপ, পায়ের নূপুর ও আরও বাহারি রকমের গহনা। বিভিন্ন ডিজাইনের ব্রেসলেট পাওয়া যাচ্ছে এইসব দোকানগুলোতে। বিভিন্ন ডিজাইনের কাঠের তৈরি মালা এবং চুড়িও পাওয়া যাচ্ছে।

নিউ মার্কেটে গয়না কিনতে আসা তাসফিয়া তাবাসসুম নামে এক ক্রেতা বলেন, “ঈদে নতুন পোশাকের পাশাপাশি গয়নাও কেনা হয় প্রতিবছর। কসমেটিক সামগ্রীর সঙ্গে জুয়েলারি গয়নারও প্রয়োজন হয়।”

রাজধানীর বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে জানা গেলন, নতুন ডিজাইনে তৈরি করা পুতি, কড়ি, শেল, সুতা, কাঠ, পিতলসহ নানা ধরনের গয়নার প্রতি বর্তমান প্রজন্মের তরুণীদের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।