নানান ফলের ভিড়ে লটকনের গুণের কথা আজও অনেকের অজানা।
লটকন একটি পুষ্টিকর ফল। এতে ভিটামিন ও খাদ্যশক্তিসহ নানারকম খনিজ উপাদান রয়েছে।
বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। দিনে দুতিনটি লটকন খেলে শরীরের ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণ হয়।”
এছাড়াও রয়েছে নানা রকম পুষ্টি উপাদান যা শরীরকে সুস্থ রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রুচি বাড়াতে লটকন বেশ উপকারী।
এই ফলে নানা রকম খনিজ উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম উল্লেখযোগ্য। এইসব উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রোমিয়াম থাকে।
রক্ত ও হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারী আয়রন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৫.৩৪ মি.গ্রা আয়রন থাকে।
লটকনে ভিটামিন বি পাওয়া যায়। প্রতি ১০ গ্রাম লটকনে ১০.০৪ মি.গ্রা ভিটামিন বি ওয়ান ও প্রতি ১০০ গ্রামে ০.২০ মি.গ্রা ভিটামিন বি টু পাওয়া যায়।
খাদ্যশক্তির ভালো উৎস লটকন। দেহ সক্রিয় রাখতে ও দৈনন্দিন কাজ করতে খাদ্যশক্তি প্রয়োজন হয়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় যা আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বলেন জানান, ফারাহ মাসুদা।
লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
লটকনে কিছু পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
লটকন গা গোলানো ও বমি বমিভাব দূর করতে পারে। পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে লটকন।
এছাড়াও গরমে তৃষ্ণা মিটাতে লটকন খাওয়া যায় বলে জানান ফারাহ মাসুদা। কারণ এতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি।
ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতাও ঔষধির কাজ করে। এর পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানারকমের অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।
লটকনের বীজ গনোরিয়া রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। ডায়ারিয়া দূর করতে লটকনের পাতার গুঁড়া বেশ ভালো ফল দেয়।
লটকনের নানারকম গুণ থাকার পরও একবারে বেশি লটকন না খাওয়ার পরামর্শ দেন ফারাহ মাসুদা। কারণ এতে করে অনেক সময় ক্ষুধা মন্দা দেখা দেয়।