গোড়ালি ব্যথার প্রাকৃতিক সমাধান

পায়ের গোড়ালির হাড়ের নিচের অংশে ক্যালসিয়াম জমে কিছুটা বাড়তি অংশ তৈরি হয়। জীবনের কোনো একসময় অনেকেই এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে কোনো উপসর্গ না থাকায় বুঝতে পারেন না।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 June 2015, 01:18 PM
Updated : 19 July 2016, 11:04 AM

যখন ক্যালসিয়াম জমে যাওয়া অংশের চারপাশের কোষকলায় প্রদাহ হলে তখনই ব্যথা হয়।

এই সমস্যা হওয়ার বিভিন্ন কারণ আছে। যেমন শক্ত মেঝেতে অতিরিক্ত লাফালাফি এবং দৌড়ানো। ভুল মাপের বা পুরনো জুতা পরা, অতিরিক্ত শারীরিক ওজন ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স এবং ডায়াবেটিস থেকেই এই রোগ হতে পারে।

সাধারণত গোড়ালির হাড় বেড়ে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। হাঁটা বা দৌড়ানোর সময় উপসর্গটি ধরা পড়ে। ভুক্তভোগীদের মতে, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথা তীক্ষ্ণ হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে ব্যথা কমে আসে।

এই সমস্যার একটি সমাধান হল অপারেশনের মাধ্যমে গোড়ালির হাড়ে জমে যাওয়া বাড়তি ক্যালসিয়াম অপসারণ করা। তবে শতকরা ৯০ ভাগ ভুক্তভোগী অপারেশন ছাড়াই সমস্যাটি থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন। এসব চিকিৎসার মধ্যে আছে থেরাপি, বিশেষধরনের জুতা ব্যবহার বা জুতায় ‘অর্থোটিক’ ডিভাইস ব্যবহার, পেইনকিলার ইত্যাদি।

এছাড়াও আছে কিছু প্রাকৃতিক উপায়। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট।

বরফ

শারীরিক পরিশ্রম করার ১৫ মিনিট আগে গোড়ালির যে স্থানে ব্যথা হয় সেখানে বরফ ধরে রাখতে পারেন। প্রয়োজন অনুযায়ী বার বার বরফ ব্যবহার করা যাবে। বরফ ব্যবহার ক্যালসিয়াম জমে যাওয়া অংশটির চারপাশের কোষকলায় প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগার

এই টকজাতীয় তরল মাখানোর মাধ্যমে গোড়ালিতে জমে থাকা ক্যালসিয়ামের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া বলে মনে করা হয়। অ্যাপল সাইডার ভিনিগারে এক টুকরা ব্যান্ডেজের কাপড় ডুবিয়ে আক্রান্ত গোড়ালির উপর বসিয়ে বেঁধে রাখা যেতে পারে। এই পদ্ধতি ব্যবহারের সময় বিশ্রামে থাকলে ভালো উপকার মিলবে।

বাঁধাকপির পাতা

প্রদাহরোধকারী উপাদানযুক্ত বলে পরিচিত বাঁধাকপির পাতা আক্রান্ত গোড়ালিতে বেঁধে রেখেও ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। ব্যবহারের আগে পাতাটিকে সামান্য গরম করে নরম করে নিয়ে লাগাতে হবে। শুকিয়ে গেলে তা পরিবর্তন করে নতুন পাতা লাগাতে হবে।

বেইকিং সোডা

বেইকিং সোডায় কয়েক ফোঁটা পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে মাখিয়ে রেখে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আক্রান্ত স্থানে পেস্ট মাখানোর পর এক টুকরা পরিষ্কার ব্যান্ডেজের কাপড় তার উপর বসিয়ে বেঁধে দিতে হবে।

নারিকেল তেল

আক্রান্ত স্থানে নারিকেল তেল সামান্য গরম করে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়। গোড়ালিতে জমে থাকা বাড়তি ক্যালসিয়াম গলিয়ে ফেলতে সাহায্য করে এই তেল। পাশাপাশি ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।

ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড

স্বাস্থ্যকর ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের শক্তিশালী প্রদাহরোধকারী উপাদান গোড়ালির ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এজন্য ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট কিংবা তেলযুক্ত সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যেতে পারে।

তিসির তেল

গোড়ালির হাড় বেড়ে যাওয়ার চিকিৎসায় ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত এই তেল ব্যবহা করা যেতে পারে। এক টুকরা ব্যান্ডেজের কাপড় বা সাধারণ কাপড় তিসির তেলে ডুবিয়ে আক্রান্ত স্থানে তোয়ালে বা প্লাস্টিকের কাগজ দিয়ে বেঁধে রাখলে উপকার পাওয়া যায়।

ছবি: রয়টার্স।