সকালে উঠে কাজে যাওয়ার তাড়া নিয়ে রাতে জলদি শুয়ে পড়লেন, কিন্তু ঘুম আসছে না। আর ঘুমাতে দেরি হওয়ায় সকালে উঠতে সমস্যা হয়, অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে সারাদিন শরীর আড়ষ্ট হয়ে থাকে। এই ধরনের সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন।
প্রায় ৪ লাখেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে নিয়ে করা নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামান্য হাঁটাহাঁটি করা এই ঘুমের সমস্যা দূর করতে বেশ কার্যকর।
গবেষকরা দেখেন, অলস সময় কাটানোর তুলনায় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁটাহাঁটি, অ্যারোবিক্স, যোগ ব্যায়াম, ভার-উত্তোলন, সাইকেল চালানো, বাগান করা, খেলাধুলা করা ইত্যাদির সঙ্গে ঘুম ভালো হওয়ার সম্পর্ক আছে।
অপরদিকে, ভিন্নধরনের শারীরিক পরিশ্রম, যেমন বাসার বিভিন্ন গৃহস্থালী কাজ করা এবং সন্তানের দেখাশোনা করার সঙ্গে ঘুম ভালো না হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
গবেষণার প্রধান গবেষক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ পেনসালভানিয়ার পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিনের মাইকেল গ্রান্ডনার বলেন, “শুধু হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে যারা ব্যায়াম করেন তাদের ঘুম ভালো হয় তা এই গবেষণায় দেখা যায়। তবে দৌড়ানো, যোগ ব্যায়াম, খেলাধুলা, বাগান করার মাধ্যমে এই সুফলগুলো আরও বেশি মাত্রায় পাওয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন, “যাদের শারীরিক পরিশ্রমের সিংহভাগই গৃহস্থালী কার্যকলাপ এবং শিশুদের দেখাশোনা করার মধ্যে থাকে, তাদের অপর্যাপ্ত ঘুমের সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা বেশি।”
শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে যে ভালো ঘুমের সম্পর্ক আছে তা এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠিত। তবে ভালো ঘুম হওয়ার উপর কোনো নির্দিষ্ট ধরনের শারীরিক পরিশ্রমের প্রভাব আছে কিনা তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে এই গবেষণা।
গবেষণার জন্য ৪ লাখ ২৯ হাজার ১১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ঘুম এবং শারীরিক পরিশ্রম বিষয়ক তথ্য ব্যবহার করা হয়। তথ্যগুলো দিয়ে যারা শারীরিক পরিশ্রম করেন না এবং যারা হাঁটাহাঁটি করেন উভয়ের ঘুমের পরিমাণের সঙ্গে অন্যান্য ধরনের শারীরিক পরিশ্রমের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা।
যারা এক মাস ধরে কোনো শারীরিক পরিশ্রম করেননি তাদের ক্ষেত্রে গৃহস্থালী কাজকর্ম এবং শিশুদের দেখাশোনা করা ছাড়া অন্যান্য সবধরনের শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গেই ঘুম ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ার সম্পর্ক আছে।
সিয়াটলে ৬ জুন খেকে ১০ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া অ্যাসোসিয়েটেড প্রফেশনাল স্লিপ সোসাইটিসের ২৯তম সম্মেলন ‘স্লিপ ২০১৫’-তে এই গবেষণা উপস্থাপন করা হয়।