আরামের পোশাক ফতুয়া

দৈহিক গড়ন ও বয়স বুঝে ফতুয়া বেছে নিলে দেখতে লাগবে বেশ।

ইরা ডি. কস্তাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2015, 11:02 AM
Updated : 27 May 2015, 11:02 AM

প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে ঘর থেকে বের হতে প্রয়োজন আরামদায়ক পোশাক। এজন্য অনেক মেয়েই বেছে নিচ্ছেন ফতুয়া।

হালকা কাজ, আরামদায়ক কাপড় আর দামও হাতের নাগালে থাকার কারণে ফ্যাশন সচেতন মেয়েদের দৈনন্দিন পোশাকের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এই পোশাক।

বর্তমান চাহিদার বিষয় মাথায় রেখে দেশীয় ফ্যাশন ঘরগুলো তাদের সংগ্রহে রেখেছে বিভিন্ন রং ও ধরনের ফতুয়া। পাশাপাশি কাটছাঁটেও এসেছে ভিন্নতা।

দেশীয় ফ্যাশন ঘর সাদাকালো’র কর্ণধার তাহসীনা শাহিন ফতুয়া পরার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় কিছু বিষয় তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশের আবহাওয়ার ক্ষেত্রে সুতি কাপড়ের কোনো বিকল্প নেই। আর এই গরমে সুতির কাপড়ে তৈরি ফতুয়াই আরামদায়ক।”

দৈহিক গড়ন ও বয়স বুঝে ফতুয়া বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন তাহসীনা শাহিন।

“যাদের স্বাস্থ্য কিছুটা ভালো তাদের জন্য লম্বা ফতুয়া বেছে নেওয়া উচিত। তাছাড়া নিচের দিকে কিছুটা ছড়ানো এবং দু’পাশে কাটা আছে এমন ফতুয়া তাদের দৈহিক গঠনের সঙ্গে মানানসই। অন্যদিকে যারা কিছুটা শুকনা তাদের জন্য দু’পাশে কাটা ছাড়া এবং ছড়ানো ফতুয়া পরা ভালো।” বলেন শাহিন।

হাল ফ্যাশনে প্যান্ট, জিন্স, লেগিংস, জেগিংস, পালাজ্জো, ধূতি, পায়জামা ইত্যাদি দিয়ে ফতুয়া পরে থাকে। সেক্ষেত্রে কী ধরনের প্যান্ট বা পায়জামার সঙ্গে পরা হচ্ছে সেটার সঙ্গে মানিয়ে ফতুয়া পরার পরামর্শ দেন তাহসিনা শাহিন।

বিশেষ করে প্রিন্টেড লেগিংস বা পালাজ্জোর ক্ষেত্রে অবশ্যই এক রংয়ের ফতুয়া বেছে নিতে হবে বলে জানান তিনি।

শাহিন বলেন, “যারা একটু মোটা তারা প্রিন্টের ফেব্রিকের ফতুয়া পরতে পারেন। এতে তাদের গড়ন কিছুটা স্বাভাবিক মনে হবে। অন্যদিকে যারা শুকনা তারা একরঙা বা কাজ করা ফতুয়া পরতে পারেন।”

দেশীয় ফ্যাশন ঘরগুলোতে ফতুয়া এখন বেশ সহজলভ্য। ‘সাদা-কালো’, ‘রঙ’, ‘কে ক্রাফট’, ‘অঞ্জন’স’, ‘দেশাল’, ‘নগরদোলা’, ‘বিবিয়ানা’, ‘মায়াসির’ ইত্যাদি ফ্যাশন ঘরগুলোতে পাওয়া যাবে বিভিন্ন ধরনের এবং হাল ফ্যাশনের ফতুয়া।

গরমে সুতির পোশাক বেশ আরামদায়ক। মডেল: ঝরা। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক।

তাছাড়া ‘স্মার্টেক্স’, ‘ইয়েলো’, ‘এক্সটেসি’, ‘ক্যাটস আই’, ‘ফ্রিল্যান্ড’ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতেও বিভিন্ন ধরনের মেয়েদের ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে।

কথা হয় বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের দেশীদশ’য়ে ‘কে ক্রাফট’য়ের শাখা ব্যবস্থাপক নাসিরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “টিনএইজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েরাই ফতুয়া বেশি কেনেন। এই গরমে সুতি কাপড়ের উপর ব্লক, বাটিক, হাতের কাজ ইত্যাদির ফতুয়া বেশি জনপ্রিয়। সাড়ে ৭শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকার মধ্যে ফতুয়া পাওয়া যায়।”

একই জায়গায় ‘অঞ্জন’স’য়ের বিক্রয় প্রতিনিধি হিরা বলেন, “আমাদের ফতুয়াগুলো তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের সুতি কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে। নিচে ঘের দেওয়া, দুপাশে কাটা, গোল, কোণা ইত্যাদি স্টাইলের ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে। স্লিভলেস এবং ছোট হাতার ফতুয়াই বেশি জনপ্রিয় এই গরমে। মান এবং ডিজাইনভেদে দাম ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা।”

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী সায়মা বলেন, “এই গরমে প্রতিদিন ক্লাস আর বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরির জন্য সব থেকে আরামদায়ক পোশাক আমার কাছে ফতুয়া। আর সালোয়ার কামিজের মতো ফতুয়া পরতে বেশি চিন্তাও করতে হয় না। যেকোনো জিন্স বা প্যান্টের সঙ্গে ফতুয়া পরে একটি স্কার্ফ নিয়ে নিলেই হয়ে গেল। তাছাড়া স্কার্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গেও ফতুয়া বেশ মানানসই। তাই ফতুয়া আমার বেশ লাগে।”

রাজধানীর ছোট বড় প্রায় সব মার্কেটেই বিভিন্ন ধরনের ফতুয়া পাওয়া যায়। আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, বদরুদ্দোজা মার্কেটগুলোতে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে এই পোশাক।

ছবির মডেল: ঝরা ও জাকিয়া উর্মি। ছবি: আসাদুজ্জামান প্রামানিক।

পোশাক সৌজন্যে: মায়াসির।