মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় এবং জন্মের দুই বছর পর্যন্ত সময়ে বায়ুদূষণের সংস্পর্শে শিশুর ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারস’ (এএসডিএস)-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে, নতুন এক গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে।
এসডিএস হল মেলামেশায় ঘাটতি এবং সাড়া দেওয়ার সমস্যার উপর ভিত্তি করে চিহ্নিত করা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা। যা শৈশবে দেখা যায়।
গবেষণার প্রধান লেখক, যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক হেলথের মহামারি-সংক্রান্ত বিদ্যার অধ্যাপক এভেলিন টালবট বলেন, “অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস হল সারা জীবনের সমস্যা যা সেরে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং চিকিৎসাব্যবস্থাও কম। তাই এই সমস্যার ঝুঁকির কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি, যেমন বায়ুদূষণ।”
তিনি আরও বলেন, “গবেষণায় বায়দূষণের সঙ্গে এএসডিএস’য়ের শুধু একটা সম্পর্ক পাওয়া গেছে, নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। এই সম্পর্কিত সম্ভাব্য জৈব প্রক্রিয়া নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।”
দক্ষিণ-পশ্চিম পেনসিলভেনিয়ার ছয়টি বিভাগে এএসডি’তে আক্রান্ত এবং আক্রান্ত নয় এমন পরিবারগুলোর জনসংখ্যার-ভিত্তিতে, নিয়ন্ত্রিত ঘটনা নিয়ে এই গবেষণা করা হয়
পরিবারের মায়েরা গর্ভবতী হওয়ার আগে, গর্ভাবস্থায় কোথায় থাকতেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন গবেষকরা। এবং প্রত্যেকের বায়ুদূষণের ধরণ যা পিএম টু পয়েন্ট ফাইভ নামে পরিচিত সেটার সংস্পর্শে যাওয়ার পরিমাণ পরিমাপ করা হয়।
সবচেয়ে সাধারণ এবং ক্ষতিকারক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই বিশেষ ধরণের বায়ুদূষণকে। একে চিহ্নিত করা হয় বাতাসে ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে কম ব্যাসের বায়ুকণার উপস্থিতির ভিত্তি করে, যা জ্বলন্ত কাঠ, কয়লা, গাড়ির ধোয়া ইত্যাদি উৎস থেকে আসে।
মায়ের গর্ভে এবং জন্মের দুই বছর পর পর্যন্ত শিশু কতটা পিএম টু পয়েন্ট ফাইভের সংস্পর্শে এসেছে তার উপর ভিত্তি করে গবেষকরা দেখেন, যারা বেশি এর সংস্পর্শে এসেছে তাদের এএসডি’তে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
শিশুর এএসডি’তে আক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ, যেমন মায়ের বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং গর্ভাবস্থায় ধূপমান করা ইত্যাদি নিয়ে বিবেচনা করেই গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন।
এনভাইরোনমেন্টাল রিসার্চ জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।
ছবি: রয়টার্স।