প্লাস্টিকের জিনিসপত্র

খোঁজখবর ও দরদাম।

নাইব মুহাম্মদ রিদোয়ানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2015, 11:22 AM
Updated : 30 April 2015, 11:29 AM

তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী এবং হালকা বলে বর্তমানে কাঠের পাশাপাশি প্লাস্টিকের আসবাবপত্র এবং উপকরণের বাজারও বেশ ভালো।

রাজধানীর বিভিন্ন শপিং সেন্টার এবং বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে জানা গেল বর্তমানে বাজারে আরএফএল, পারটেক্স, ক্রোমা, বেঙ্গল, হামকো, পলিকন এবং বিভিন্ন চাইনিজ ব্র্যান্ডের প্লাস্টিকের আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালি জিনিসপত্রের বিক্রি বেশি হচ্ছে।

এসব আসবাবপত্র ও উপকরণের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের চেয়ার, টেবিল, সোফা, আলমারি, ওয়ারড্রোব, কিচেন রেক, লন্ড্রি বাস্কেট, বালতি, স্টোরেজ বক্স, হটপট, ড্রাম, কনটেইনার ইত্যাদি।

চেয়ার

নিউমার্কেটের ‘চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ’য়ে পাওয়া যাবে ‘আরএফএল’ ব্র্যান্ডয়ের চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য প্রায় সকল আসবাবপত্র। এক্ষেত্রে আরএফএল ‘খানদানি’ চেয়ারের দাম পড়বে প্রতিটি ৮৩৫ টাকা। একই ব্র্যান্ডের হাতওয়ালা ‘রয়্যাল’ চেয়ার পাওয়া যাবে ৭২০ টাকায়। গদিসহ আরএফএল সোফা চেয়ার কিনতে হলে গুনতে হবে ১ হাজার ৩শ’ টাকা।

নিউমার্কেট থেকে ‘বেঙ্গল’য়ের আর্ম চেয়ার পাওয়া যাবে ডিজাইন ভেদে ৬৮০ টাকা থেকে ৮শ’ টাকায়। একই ব্র্যান্ড্রের হাতাবিহীন চেয়ার পাওয়া যাবে ৫৬০ টাকা থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকায়।

এছাড়াও রাজধানীর পুরান ঢাকার নওয়াবপুর রোড থেকে কিনে নিতে পারেন পারটেক্স ব্র্যান্ডের রিল্যাক্স, স্লিম কিংবা গার্ডেন চেয়ার। এক্ষেত্রে ডিজাইনভেদে চেয়ারগুলোর দাম হবে সাড়ে ৪শ’ থেকে ১ হাজার টাকা।

টেবিল

বনানী সুপার মার্কেট থেকে বেঙ্গল’য়ের ‘সিক্স সিটার’ টেবিল কিনতে পাওয়া যাবে ৩ হাজার ২শ’ থেকে ৪ হাজার ২শ’ টাকায়। ডাইনিং টেবিল হিসেবে বা অফিসের কাজে একসঙ্গে অনেকজনের বসার জন্য এই টেবিল ব্যবহার করা যেতে পারে। একই ব্র্যান্ডের ‘ফোর সিটার’ টেবিল পাওয়া যাবে ২ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার ৩শ’ টাকায়।

আরএফএল’য়ের ছয় সিট টেবিল পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৪শ’ টাকায়। একই প্রতিষ্ঠানের ফোর সিট টেবিল পাওয়া যাবে ৩ হাজার ৫৭০ টাকায়। এছাড়া আরএফএল’য়ের চার থেকে ছয় সিটের চেয়ার ও টেবিল একসঙ্গে সেট হিসেবে কিনতে হলে গুনতে হবে সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার ৭শ’ টাকা।

‘পারটেক্স’ ব্র্যান্ডের রাউন্ড বা স্কয়ার টেবিল পাওয়া যাবে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। একই ব্র্যান্ডের টি টেবিল এবং সিঙ্গেল রিডিং টেবিল পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায়।

ওয়ারড্রোব ও আলমারি

বর্তমানে ক্রেতাদের মধ্যে কাঠের পরিবর্তে প্লাস্টিকের আলমারি কিংবা ওয়ারড্রোব কেনার আগ্রহ ব্যপক।

মার্কেটে কিনতে আসা গৃহিনী আয়েশা আক্তার এই বিষয়ে বলেন, “চাকুরীর সুবাদে যাদের ঢাকায় বসবাস তাদের জন্য প্লাস্টিকের ওয়ারড্রোব বা আলমারির বিকল্প নেই। এগুলো যথেষ্ট হালকা বলে বাসা পরিবর্তনের সময় কম ঝক্কি পোহাতে হয়। তাছাড়া প্লাস্টিকের আসবাবপত্রগুলো খুব আধুনিক এবং আকর্ষনীয়।”

বর্তমানে বাজারে ক্রোমা, আরএফএল এবং বেঙ্গলের প্লাস্টিক ওয়ারড্রোব ও আলমারি পাওয়া যাচ্ছে। চার ড্রয়ার বিশিষ্ট এসকল ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক ওয়ারড্রোব পাওয়া যাবে ব্র্যান্ড ভেদে ৪ হাজার ৪শ’ থেকে ৫ হাজার ২শ’ টাকায়।

পাঁচ ড্রয়ারের মধ্যে কিনতে হলে গুনতে হবে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এই ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় মিনি ওয়ারড্রোব পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ৫৮০ টাকায়।

এছাড়া প্লাস্টিকের আলমারি পাওয়া যাবে আকারভেদে ২ হাজার ৭শ’ থেকে ৬ হাজার ৮শ’ টাকায়।

কিচেন টুলস

মনের মতো করে রান্নাঘর সাজাতে কিনে নিতে পারেন প্লাস্টিকের সব জিনিসপত্র। এক্ষেত্রে আরএফএল’য়ের কিচেন র‌্যাক পাওয়া যাবে ১ হাজার ৬শ’ টাকায়। পারটেক্স’য়ের কিচেন র‌্যাক পাওয়া যাবে ৫শ’ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায়।

‘বেঙ্গল’য়ের কিচেন বাস্কেট কিনতে হলে খরচ করতে হবে ৫০ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। এছাড়া চাল, ডাল কিংবা অন্যান্য জিনিস রাখার জন্য কিনে নিতে পারেন ‘হামকো’ বা ‘পলিকন’ ব্র্যান্ডের স্টোরেজ বক্স। আকারেভেদে এই বক্সগুলোর দাম পড়বে ৩০ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা।

এছাড়া রান্নাঘরে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের বাটি, বক্স, মগ, জার ইত্যাদি কিনে নিতে পারেন ৫০ থেকে ৪শ’ টাকার মধ্যে। প্লেট রাখার জন্য ডিশ র‌্যাক পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায়। মাইক্রোওভেনে ব্যবহারের জন্য বিশেষ বাটি সেট পাওয়া যাবে ২শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়।

ড্রাম ও কন্টেইনার

যারা শহরে বসবাস করেন তাদের জন্য পানি রাখার ড্রাম বা কন্টেইনার নিত্য প্রয়োজনীয় উপকরণ। ‘হামকো’র ড্রাম বালতি পাওয়া যাবে আকারভেদে সাড়ে ৩শ’ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। এই ড্রাম বালতিতে ৩০ থেকে ১০০ লিটার পানি রাখা যায়।

তিন থেকে ২০ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বেঙ্গল এবং পলিকন ব্র্যান্ডের কন্টেইনার পাওয়া যাবে ৫০ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকায়।

এছাড়া পারটেক্স’য়ের সাদা প্লাস্টিক বালতি পাওয়া যাবে ১২০ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকায়।

অন্যান্য

প্লাস্টিকের অন্যান্য জিনিসপত্রের মধ্যে লন্ড্রি বাস্কেট সাড়ে ৬শ’ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা, হটপট আড়াইশ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকা এবং বুক সেলফের দাম ৮শ’ থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা।

এছাড়াও প্লাস্টিক টুল বা মোড়া পাওয়া যাবে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় এবং টিফিন বক্স কিংবা ওয়াটারপট পাওয়া যাবে ৫০ থেকে ২শ’ টাকায়।

ব্যবহারবিধি

প্লাস্টিকের জিনিসপত্র সাধারণত সহজে নষ্ট হয় না। তাই একটু সতর্ক থাকলেই বছরের পর বছর ধরে প্লাস্টিকের আসবাবপত্র ব্যবহার করা যায়।

এ সম্পর্কে নিউমার্কেটের চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি মো. সুজন বলেন “প্লাস্টিকের জিনিসপত্রে কাঠের মতো ঘুণে ধরা বা বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার ঝামেলা নেই। তবে অতিরিক্ত চাপে বা জোর দিলে অনেক সময় প্লাস্টিকের জিনিস ভেঙে যেতে পারে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

যেখানে পাবেন

ঢাকা শহরের নিউমার্কেট, চকবাজার, পুরান ঢাকার নওয়াবপুর রোডের মার্কেটগুলো, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, বনানী সুপার মার্কেটসহ দেশের প্রায় সকল ছোট বড় প্লাস্টিকের দোকানে এই আসবাবপত্র এবং নিত্য দরকারী উপকরণগুলো পাওয়া যাবে।

লম্বা সময় ধরে ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের জুড়ি নেই। তাছাড়া প্লাস্টিকের এসব দ্রব্য বেশ আকর্ষণীয় এবং অভিনব। তাই নিজের ঘর সাজাতে কিংবা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের জন্য আজই কিনে নিতে পারেন প্লাস্টিকের এই জিনিসপত্র।

ছবি: ফুয়াদ তানভীর অমি।