রূপচর্চায় ঘরোয়া উপাদান

ত্বক সুন্দর করতে পার্লারে গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়। তবে ঘরে বসেই সাধারণ সমস্যা সমাধান করা যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2015, 09:56 AM
Updated : 17 April 2015, 10:17 AM

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট অবলম্বনে ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ত্বকচর্চার পন্থা জানানো হল।

শুষ্ক ত্বক

এই ধরনের নানারকম সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় ত্বকে মৃত চামড়ার একটি আলাদা আস্তরণও তৈরি হয়। এ সমস্যা দূর করতে ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন।

শুষ্ক ত্বকের যত্নে চাই ভিটামিন সি এবং এ। ছবি: অপূর্ব খন্দকার।

একটি কলা, আধা কাপ কুমড়া, দুই টেবিল-চামচ কুমড়াদানার তেল, এক কাপের চারভাগের একভাগ টক দই। সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে আলতোভাবে ঘষে নিতে হবে। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

এই মাস্কে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। আর ভিটামিন এ ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। এই মাস্কে আরও আছে জিঙ্ক, যা ব্রণ দূর করতেও সহায়তা করবে।

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা

চোখের নিচের কালি বা কালো দাগ দূর করতে লাগবে ঠাণ্ডা শসা ও জোজোবা তেল।

ঠাণ্ডা শসা পাতলা করে কেটে নিতে হবে। তারপর টুকরাগুলো চোখের উপর দিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে চোখের চারপাশে জোজোবা তেল লাগিয়ে ঘুমাতে হবে।

শসার ভিটামিন বি এবং জলীয় উপাদান চোখের চারপাশের ত্বকের জন্য উপকারী। এতে চোখে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় আর জোজোবা  তেল চোখের চারপাশের ত্বকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য করে। আর তেল অবশ্যই রাতে লাগাতে হবে।

ত্বকের লালচেভাব

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে দরকার ঠাণ্ডা শসা। মডেল: রিবা। ছবি অপূর্ব খন্দকার।

ঘরে তৈরি মাস্ক দিয়ে রোদেপোড়া সমস্যা দূর করা যায়। মডেল শান্তা রহমান। ছবি: নয়ন কুমার।

রোদেপোড়া বা অতিরিক্ত গরমে ত্বকে র‌্যাশ হতে পারে বা ত্বক পুড়ে লালচে হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা দূর করতে ঘরেই তৈরি করা যায় প্রতিষেধক।

মাস্কটি তৈরি করতে লাগবে এক কাপের চারভাগের একভাগ সমান অ্যালোভেরা জেল, এক টেবিল-চামচ লেবুর রস। দুটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকে সরাসরি লাগাতে হবে। অ্যালোভেরা রোদেপোড়ার কারণে ত্বকে জ্বালাপোড়া করা ও লালচেভাব দূর  করতে সাহায্য করবে। আর লেবুর ম্যালিক অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সাহায্য করবে।  

কিউটিকলসের যত্ন

নখের চারপাশের চামড়া অনেক সময় শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। তাই পুরো হাতের সঙ্গে নখ ও নখের চারপাশের চামড়া বা কিউটিকলের যত্ন নেওয়াও দরকার।

এরজন্য প্রয়োজন অ্যালোভেরা জেল, মধু ও অলিভ অয়েল।

একটি পাত্রে অ্যালোভেরা জেল, মধু ও তেল নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি নখের চারপাশে কিউটিকলে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট মালিশ করতে হবে। অ্যালোভেরা ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া ত্বকের প্রদাহ দূর করতেও কার্যকর এই মিশ্রণ।

শুষ্ক ঠোঁট

হাত সুন্দর রাখতে নখের আশপাশের চামড়ার যত্ন নিতে হয়।

শুষ্ক ঠোঁট কোমল করতে দারুণ কার্যকর জোজোবা তেল। মডেল: মডেল: আলিশা। ছবি: ই স্টুডিও।

শুষ্ক ঠোঁট কোমল করতে দারুণ কার্যকর জোজোবা তেল এবং সিয়া বাটার। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এর যেকোনো একটি ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম ও কোমল হবে।

পা ঘামা সমস্যার সমাধান

শীতকাল ছাড়াও গরমের সময় অনেকেরই পা ঘামে এবং পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সমাধানে দারুণ কার্যকর বেকিং সোডা ও সাদা ভিনিগার।

পা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে পায়ে বেকিং সোডা ছড়িয়ে দিলে পা শুষ্ক ও দুর্গন্ধমুক্ত থাকবে। তাছাড়া পানিতে খানিকটা ভিনিগার মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখলেও উপকার পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে তিন থেকে চারবার পা ভিনিগার মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে পা পরিষ্কারও থাকবে আবার পায়ে ঘাম ও দুর্গন্ধ হওয়ার সমস্যাও কমে আসবে।

শুষ্ক চুল

রুক্ষ ও শুষ্ক চুলের সমস্যা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন শ্যাম্পু বা প্রসাধনী ব্যবহার করেও এ সমস্যা দূর করা যায় না। তবে লেবু, অলিভ অয়েল আর সাদা ভিনিগার ব্যবহার করেই দূর করা যায় রুক্ষ চুলের সমস্যা।

তিন টেবিল-চামচ লেবুর রস, অলিভ অয়েল এবং সাদা ভিনিগার, খানিকটা কুসুম গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ভালোভাবে চুলে ও মাথার ত্বকে লাগিয়ে মালিশ করতে হবে। এরপর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। লেবু চুল ঝলমলে করতে সাহায্য করে আর সাদা ভিনিগার ক্ষতিগ্রস্ত চুল সারিয়ে তুলে।

উষ্কখুশকো চুল

নারিকেল তেল চুলের জন্য উপকারি। মডেল: সালমিন। ছবি: ই স্টুডিও।

চুল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেগ পেতে হয়! এক কাজ করুন, হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা নারিকেল-তেল নিয়ে হালকা করে চুলে লাগিয়ে নিন। এতে চুল নমনীয় থাকার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণও করা যাবে।

খুশকি

খুশকি দূর করতে ঘরেই তৈরি করা যায় ঘরোয়া হেয়ার প্যাক।

প্যাক তৈরি করতে লাগবে, চার টেবিল-চামচ বাদামতেল, দুই টেবিল-চামচ চটকে নেওয়া পাকাকলা ও এক টেবিল-চামচ টক দই।

সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে পাঁচ থেকে ১৫ মিনিট মালিশ করতে হবে। বাদাম তেলের ভিটামিন ই মাথার ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে। কলার ভিটামিন বি ত্বকে ও চুলে পুষ্টি জোগায়। আর টক দই মাথার ত্বকের মৃতকোষ দূর করে ও ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।