অনেকেই সাধারণ গলা ব্যথা আর টনসিলের ব্যথার মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে টনসিলের ব্যথাকে সাধারণ গলা ব্যথা মনে করেই এড়িয়ে যান। ফলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কোয়ালিটি ইম্প্রুভমেন্ট সেক্রেটরিয়েট তনামি চাকমা বলেন, “বৃষ্টিতে ভিজলে বা অতিরিক্ত গরমে আইসক্রিম বা ঠাণ্ডা কোমল পানীয় পান করলে টনসিল ফুলে যেতে পারে। আলজিহবার দু’পাশে দুটি পিণ্ড রয়েছে, যা লাল হয়ে যায় বা বেশি ইনফেকশন হলে সাদা হয়ে থাকে।”
অনেকেই মামস এবং টনসিল— এই দুই সমস্যা গুলিয়ে ফেলেন। কারণ দুই অসুখের ক্ষেত্রেই গলাব্যথা হওয়া এবং ফুলে যাওয়ার সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে তনামি জানান, মামস হলে গলা এবং গাল একসঙ্গে ফুলে যাবে। আর টনসিল হলে শুধু গলা বিশেষ করে মুখের ভিতরে আলজিহবার দুপাশে ফুলে যায়।
তনামি বলেন, “টনসিলাইটিস বাচ্চাদের বেশি হলেও, যেকোনো বয়সেই এই সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।”
তীব্র গলাব্যথা, কানব্যথা, জ্বর, খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, গলার স্বর ভারী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি টনসিলের লক্ষণ।
“মূলত ঠাণ্ডার কারণেই টনসিলাইটিস হয়ে থাকে। তাই গলায় ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না। গলায় মাফলার বা এই ধরনের কাপড় পেঁচিয়ে রাখতে হবে যেন গলায় ঠাণ্ডা না লাগে। তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ও জ্বর থাকলে জ্বরের ওষুধ খেতে হবে।” পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক।
তাছাড়া টনসিল ফুলে গেলে প্রচুর ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তনামি। টনসিলের ইনফেকশন ঠেকাতে মুখের ভেতরে পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। গরম পানি ও লবণ দিয়ে গার্গল করলে উপকার পাওয়া যায়।
যাদের টনসিল ও ঠাণ্ডার সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত গার্গল করার পরামর্শ দেন এই ডাক্তার।
টনসিল হলে তুলসী-চা, লেবু ও আদা দিয়ে চা ইত্যাদি পান করলে আরাম পাওয়া যায়। ঠাণ্ডাজাতীয় যে কোনো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে।
সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই টনসিল ভালো হয়ে যায়। তবে টনসিল বেশি ফুলে গেলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ রোগসংক্রমণ বেড়ে গেলে অস্ত্রোপচার করানোরও প্রয়োজন হতে পারে।
যাদের বেশ কয়েকবার ভুগতে হয়েছে তাদেরও টনসিলের অস্ত্রোপচার করাতে হতে পারে। তাই প্রায়ই টনসিলের সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান এই চিকিৎসক।