অতিরিক্ত ‘পেস্টিসাইড’ বা কীটনাশক ব্যবহার করা ফল ও সবজি খেলে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যেতে পারে।
Published : 01 Apr 2015, 06:37 PM
হাভার্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, স্বল্প বা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা ফল বা সবজি যারা খান তাদের চাইতে বেশি মাত্রার কীটনাশক ব্যবহৃত ফল বা সবজি খাওয়া মানুষের শুক্রাণু এবং বীর্যের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম।
তাই বাবা হতে চাইলে ভালো করে ধুয়ে এসব খাওয়ার অভ্যাস করুন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউট্রিশন অ্যান্ড এপিডিমিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জরজে চাভারো বলেন, “কীটনাশক ব্যবহৃত ফল ও সবজি খাওয়ার সঙ্গে মানুষের প্রজননস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলার ক্ষেত্রে যে সম্পর্ক রয়েছে সে ব্যাপারে এটাই প্রথম প্রতিবেদন।”
এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গবেষকরা এনভায়ারমেন্ট অ্যান্ড রিপ্রোডাকটিভ হেল্থ (ইএআরটিএইচ)’য়ে নথিভুক্ত ১৫৫জন পুরুষের তথ্য ব্যবহার করেন।
হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গবেষণার জন্য ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৩৩৮টি বীর্যের নমুনা যুক্ত করার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করা হয়।
গবেষকরা ফল এবং সবজিগুলো দুটি শ্রেণিতে ভাগ করে। একটি শ্রেণিতে ছিল অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা ফল ও সবজি, যেমন- পেপারস বা ক্যাপসিকাম, পালংশাক স্ট্রবেরি এবং আপেল। আর অন্য শ্রেণিতে ছিল স্বল্প থেকে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় কীটনাশ ব্যবহার করা খাদ্য, যেমন- মটর, শিম, জাম্বুরা এবং পেঁয়াজ।
তারপর তারা অন্যান্য বিষয় যেমন ধূমপান এবং ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’ সমন্বয় করেন— এই দুটি বিষয়ই শুক্রাণুর মানের উপর প্রভাব ফেলার ক্ষেত্রে পরিচিত।
ফলাফলে দেখা গেছে, স্বল্প মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা খাবার অল্প পরিমাণে বা দৈনিক ০.৫ সার্ভিয়ের কম যারা খেয়েছেন তাদের চাইতে যেসব পুরুষ উচ্চমাত্রার কীটনাশক ব্যবহার করা ফল ও সবজি খেয়েছেন অর্থাৎ দিনে ১.৫ সার্ভিয়ের বেশি, তাদের শুক্রাণুর পরিমাণ ৪৯ শতাংশ কম। আর স্বাভাবিকের চাইতে ৩২ শতাংশ কম পরিমাণ বীর্য পাওয়া গেছে।
কম পরিমাণ শুক্রাণুর পাশাপাশি তদের নির্গত হওয়ার পরিমাণও স্বাভাবিকের চাইতে কম ছিল।
তবে এই গবেষণা ফল ও সবজি খাওয়ার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করার জন্য নয়।
ইতি টানতে গিয়ে গবেষণার লেখকরা উল্লেখ করেন, “সত্যি বলতে আমরা দেখেছি স্বল্প মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা ফল ও সবজি বেশি খাওয়া একদিক দিয়ে লাভজনক। তাই অর্গানিকভাবে উৎপন্ন করা ফল-সবজি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে অথবা জানা মতে যেসবে বেশিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।”
ছবি: রয়টার্স।