এই যুগে সব বয়সিরাই আগের তুলনায় বেশি ফ্যাশন সচেতন। তাই দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় এই শীতবস্ত্রের স্টাইলেও এসেছে পরিবর্তন।
মোটা কাশ্মিরি শালের কদর না কমলেও বাজার দখল করেছে চায়না শাল। নরম, রঙিন আর দামে সস্তা হওয়ার কারণে চীনা শালে বাজার ছেয়ে গেছে। তাছাড়া রংয়ের বৈচিত্র্য এবং পাতলা হওয়ার কারণে এই শীতে তরুণীদের মধ্যে চায়না শালের কদর কিছুটা বেশি।
নিউমার্কেট ও গাউছিয়ার ভিতরের দোকানসহ ফুটপাথেও পাওয়া যাচ্ছে এই শাল।
নিউমার্কেটের একজন ফুটপাথের শাল বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, “পাতলা ওড়নার মতো শালের চাহিদা সব থেকে বেশি। ধরণ ভেদে শালের দাম দেড়শ টাকা থেকে ৪শ’ টাকার মধ্যে।”
গাউছিয়ার বাবুল গার্মেন্টের বিক্রেতা বলেন, “বিভিন্ন কোয়ালিটির শাল পাওয়া যাচ্ছে এখন বাজারে। কাশ্মিরি ভারি শাল, কাশ্মিরি সিল্ক শাল, চায়না শাল, দেশি শাল ইত্যাদিই বেশি জনপ্রিয়। চায়না শালের দাম ৩শ’ টাকা। আর অন্যান্য শালের দাম ৩শ’ থেকে ১৮শ’ টাকার মধ্যে।”
মেয়েদের সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, টপস, ফতুয়া ইত্যাদির সঙ্গে মিলিয়ে চাদর বেশ মানানসই। আর শীতমৌসুমে ফতুয়া, কুর্তি বা টপসের সঙ্গে ওড়না বা স্কার্ফের বদলে চাদর নেওয়ার প্রাধান্যই বেশি। ফ্যাশনও হল, শীত থেকেও বাঁচা গেল।
হাল ফ্যাশনে শালের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে হাসিনা ইয়াসমিন বলেন, “এখন তরুণীদের মধ্যে তাগা বেশ জনপ্রিয়, আর টপস, কুর্তি এবং কামিজের সঙ্গে ওড়নার বদলে পাতলা শালগুলো ব্যবহার করছেন তারা। এটি যেমন ফ্যাশনেবল তেমনি আরামদায়ক।”
তিনি আরও জানান— ভিসকস, অ্যান্ডি সিল্ক, ধুপিয়ান ইত্যাদি কাপড়ের শালগুলোর উপর হাতে কাজ ও নকশিকাঁথার নকশায় কিছু ‘এক্সক্লুসিভ’ শাল রাখা হয়েছে।
“মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও ফ্যাশনের জন্য বেছে নিচ্ছেন শাল। আগে শুধু পাঞ্জাবির সঙ্গে শাল পরলেও এখন টি-শার্ট, শার্ট প্রায় সব পোশাকের সঙ্গেই শাল বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। ছেলেদের শালের কালেকশনে নীল, কালো, বাদমি, ছাই ইত্যাদি রং বেশি প্রধান্য পেয়েছে।” বলেন ইয়াসমিন।
আড়ংয়ে চাদর তৈরিতে ভিন্ন ধরনের কাপড় ব্যবহারের পাশাপাশি নকশায়ও আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। সুতি, অ্যান্ডি সিল্ক, খাদি, ভিসকস, ধুপিয়ান ইত্যাদি ফেব্রিকের উপর টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, কাঁথা স্টিচ, হাতের কাজ, মেশিন অ্যাম্ব্রোয়ডারি করা নানান রকম নকশা দেওয়া হয়েছে।
তবে সিল্ক কাপড়ের উপর নকশিকাঁথার বিশেষ নকশায় কিছু ‘এক্সক্লুসিভ’ শাল রয়েছে আড়ংয়ে। দাম ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির আজমীর স্টোরে কাশ্মিরি শাল পাওয়া যাবে। দাম শুরু সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে।
নিউ মার্কেটের লেডি ওয়ার্ল্ড দোকানের মালিক আক্তার হোসেইন জানান, কাশ্মিরি শালের দাম ১ হাজার ২শ’ থেকে ৭ হাজার ৩শ টাকা।
ভারতীয় এবং চায়না শালের বাজারে দেশীয় ধাঁচের চাদর পেতে ঢুঁ দিতে পারেন শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে।
এই মার্কেট ঘুরে দেখা গেল বিভিন্ন দোকানে খাদি, উল ও সুতি কাপড়ের তৈরি শাল পাওয়া যাচ্ছে। যুগান্তর, নন্দন কুটির, বাঙ্গাল, অন্যরকম, এক পলক, নোঙ্গর ইত্যাদি দোকানে খাদি, সুতি ও উলের তৈরি শাল পাওয়া যাবে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকার মধ্যে।
হাতছানি দোকানে পাওয়া যাবে কুমিল্লার খাদি কাপড়ের তৈরি শাল। একরঙা শালের দাম ৫২০ টাকা। খাদির উপর ব্লক শালের দাম ৫৮০ টাকা।
তাছাড়া দেশীয় জনপ্রিয় ফ্যাশন ঘর কে ক্রাফট, বিবিয়ানা, দেশাল, রং ইত্যাদিতেও পাওয়া যাবে নানান ধরনের শাল। নকশা এবং কাপড় ভেদে শালগুলোর দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে।
মডেল: ওশিন, পোশাক: ধান শালিক, আজিজ মার্কেট।