অফিসে প্রেম!

দিনের প্রায় অনেকটা সময় অফিসে কাটানো হয়। এক্ষেত্রে সহকর্মী কাউকে ভালো লাগতেই পারে।

ওমর শরীফবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2014, 12:17 PM
Updated : 25 June 2015, 09:57 AM

কথায় বলে প্রেম নাকি একবারই হয়। সত্যিই তাই, স্কুলে একবার, কলেজে একবার, বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার, অফিসে একবার। এভাবে এক এক করে জীবনে বহুবারই প্রেম আসে।

তবে অফিস বা কর্মজীবনে প্রেমের যে অনুভূতি কাজ করে তা অনেকটা পরিণত বয়সের সম্পর্কই বলা যায়।

আর পরিণত বয়সের সম্পর্ক গড়ার আগে অবশ্যই ভেবেচিন্তে পা ফেলা দরকার।

তাই অফিসে রোমান্টিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে নিজেকেই প্রশ্ন করুন এই সম্পর্কের ভবিষ্যত কী?

এই বিষয়ে মনস্তত্ববিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন থেকে বাছাই করা ৭টি প্রশ্ন রাখা হল আপনার সামনে।

১. প্রতিষ্ঠানের নীতি বিরুদ্ধ কি না?

সহকর্মীর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠানেই বিধিনিষেধ থাকে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের নিয়ম থাকে না। অনেকসময় এরকম নিয়মও থাকে কোনো অফিস সহকর্মীর সঙ্গে কোনো প্রকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলে তা প্রতিষ্ঠনের মাথা থেকে শুরু করে জনসংযোগ বিভাগ পর্যন্ত জানাতে হয়।

তাই যদি কোনো সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার আগে প্রতিষ্ঠানে এরকম কোনো নিয়ম আছে কি না সেটা জেনে নিন।

২. সত্যিই কি আমি তাকে চাই?

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যতক্ষণ অফিসে কাজ করা হয় ততক্ষণ একটা ভালোলাগা কাজ করে। অফিসের বাইরে সেই অনুভূতি আর কাজ করে না।

কারণ অফিসে একসঙ্গে কাজ করা, কোনো প্রজেক্ট তৈরি করা ইত্যাদি কারণে অনেকক্ষণ একসঙ্গে থাকা হয়। ফলে একটা ভালোলাগা কাজ করতেই পারে।

এটা অনেকটা চোরাবালির মতো ব্যাপার। তাই সম্পর্কে জড়ানোর আগে চিন্তা করুন রোমান্টিক অনুভূতি কি শুধু অফিসে থাকলেই কাজ করছে নাকি বাইরেও কাজ করে?

৩. সবচেয়ে বাজে কী হতে পারে?

সহকর্মীর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কে জাড়ানোর আগে ভাবুন এর চূড়ান্ত ফলাফল কী হতে পারে! কারণ যতই ভালো হোক, সম্পর্ক যে কোনো সময় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

অনেকদিন সম্পর্ক চলার পর যদি ভাঙন ধরে তাহলে ক্যারিয়ারের উপর সেটা প্রভাব ফেলবে কি না, তা আগেই ভাবা উচিত। কারণ এমনও হতে পারে সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কারণে অফিসের পরিবেশ আপনার অনুকূলে না থাকায় এই চাকরি ছাড়তে হচ্ছে। 

আর ইন্টারনেটের যুগে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অফিস সংক্রান্ত অনেক ছবি হয়ত ফেইসবুক, টুইটারে চলে যাবে যেগুলোতে দুজনের একসঙ্গে অনেক ছবিই থাকতে পারে। যা পরিবার, অফিসের অন্যান্য সহকর্মী বা বন্ধুবান্ধবের ফেইসবুকসহ নানান মাধ্যমে থেকে যাবেই।

এই বিষয়গুলো ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলবে কি ফেলবে না সেই বিষয়ে আগেই নিশ্চিত হয়ে নেওয়া দরকার।

৪. সে কি বিবাহিত?

হু, শুধু ভালো লাগলেই তো হবে না, আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যাকে ভালো লাগছে তার কোনো সম্পর্ক আছে কি না!

৫. সে কি কারও 'বস'?

যাকে ভালো লাগছে হতে পারে সে কারও 'বস'। আর যার 'বস', সে হতে পারে আপানার সহকর্মী। এই ক্ষেত্রে সম্পর্ক কীভাবে চর্চা করবেন সেটা অবশ্যই আগে ভাবতে হবে, নইলে অফিসের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অনেক সময় অধস্তনের সঙ্গে প্রেম হয়। আবার অফিসের 'বস'কেও ভালো লাগতে পারে। এই ধরনের সম্পর্ক গড়ার আগে ভাবুন ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে অফিস বা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশে প্রভাব ফেলবে কি না। আর সেগুলো কীভাবে সামলাবেন?

৬. নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ

সঙ্গীর সঙ্গে একই অফিসে কাজ করা, সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকা সত্যিই আনন্দের ব্যাপার। তবে অনেক ক্ষেত্রে এটা ক্লান্তিকর হতে পারে।

আবার একই অফিসে কাজ করে একজনের প্রমোশন হয়ে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দুজন কীভাবে সামলাবেন সেটাও ভাবতে হবে। এমনকি অফিসের কারণে সম্পর্ক যাতে নষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে চাকরি বদলানোর মনমানসিকতাও থাকতে হবে।

তাই আবেগে জড়ানোর আগে এসব বিষয় ভাবুন সবার আগে।

৭. নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া

যদি মনে হয় অফিস প্রেম আপনার জন্য ভালো, তবে সঙ্গীর সঙ্গে সবকথা খোলাখুলি আলোচনা করে নেওয়া উচিত। কারণ অফিসের পরিবেশ সুস্থ রাখার জন্য শারীরিক স্পর্শ থেকে শুরু করে অফিস বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে 'দরজা বন্ধ' করে মিটিং করার সময় অন্তরঙ্গ হয়ে যাওয়ার থেকে বিরত থাকার বিষয়গুলো কীভাবে চর্চা করবেন তা আগেই ভাবা দরকার।

অনেক মেয়েই সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমের বিষয়টি গোপন রাখতে চান। এতে অফিসের অন্যান্য সহকর্মীর সঙ্গে সাবলীলভাবে কাজ করতে সুবিধা হয় বলে মনে করেন তারা। তবে সেটা না করাই ভালো।

দুজনের প্রেমের বিষয়টি জানা থাকলে সহকর্মীদের কাছ থেকে বরং অনেকরকম সহযোগিতা পাওয়া যায়।