ওজন বাড়াতে পানীয়

অতিরিক্ত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্যালোরি এবং চর্বিজাতীয় পদার্থের উৎস হিসেবে ভারী খাবারে পাশাপাশি বিভিন্ন পানীয় দেহের ওজন বাড়াতে পারে।

কামরুন নাহার সুমিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2014, 03:02 PM
Updated : 24 Sept 2014, 03:02 PM

স্বাস্থবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সার্টিফায়েড পুষ্টিবিদ এবং 'ফুড কোচ এনওয়াইসি'র প্রতিষ্ঠাতা ডানা জেমস বলেন, "কোন ধরনের পানীয়তে কী আছে তা বেশিরভাগ মানুষই জানে না, তাই তারা বুঝতেই পারে না পানীয় থেকে কতটা উপাদান তারা গ্রহণ করছেন।"

প্রতিবেদনে বিভিন্ন পানীয় থেকে ওজন বাড়ার উপাদান সম্পর্কে জানান এই পুষ্টিবিদ।

সবুজ পানীয়

শরীর ভালো রাখার জন্য এই পানীয় উপকারী। তবে কিছু অপকারিতাও আছে। বেশিরভাগ সবুজ রংয়ের পানীয় তৈরিতে স্পিরুলিনা ব্যবহার করা হয়। এটা একপ্রকার চিনির বোমা বলা যেতে পারে। যার একটি 'সার্ভিংয়ে' শতাধীক ক্যালোরি থাকতে পারে।

ফল-এ অনেক পুষ্টি আছে। আর ফলের রসে সুফল বেশি পাওয়া যায়। এক টুকরা ফল খাওয়ার পর এর আঁশ শরীরে গ্লুকোজ তৈরির পদ্ধতি গ্লাইসেমিক প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়।

আর ফলের রসে কোনও আঁশ থাকে না। তাই যে কোনও ফল 'জুস' করে পান করলে শরীর সেখান থেকে শর্করা বেশি গ্রহণ করে।

পানি না খাওয়া

বেশিরভাগ মানুষই জানে না পানি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিশেষ করে পানির হাইড্রোজেন শরীরের বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। দৈনিক ১২ আউন্স পরিমাণ ছয় গ্লাস পানি খাওয়া উচিত।

পানি কম খাওয়ার কারণেও খিদে বেশি লাগতে পারে। তাই পরিমাণ মতো খাওয়ার জন্য পরিমাণ মতো পানিও পান করার অভ্যেস গড়তে হবে।

বিয়ার

ওজন বাড়ানোর ফাঁদ হলো অ্যালকোহল। আর বিয়ার এর মধ্যে অন্যতম। কারণ এই পানীয়তে আছে প্রচুর পরিমাণ কাবোর্হাড্রেইট। যা শরীরে বাড়তি ওজন তৈরিতে সাহায্য করে।

স্মুদিস

ওজন বাড়ানোর জন্য এই পানীয়র জুড়ি নেই। যাদের ওজন কম, স্মুদি খাওয়ার অভ্যেস করলে অল্প দিনেই ১০ পাউন্ড ওজন বাড়িয়ে ফেলতে পারবেন।

আর এই পানীয়তে নাট-বাটার, চিয়া সিডস, ফ্লেক্স সিডস ও নারিকেল তেল যোগ করলে পাবেন বাড়তি ৮০০ ক্যালোরি। চাইলে প্রোটিন পাউডারও দিতে পারেন। যা শরীরের অনিয়মিত গ্লাইসেমিক প্রতিক্রিয়ার ভারসাম্য রক্ষা করবে। 

ডায়েট সোডা

যদিও 'ডায়েট' কথাটা আছে, তবে ভুল করবেন না যেন! প্রতিদিন ডায়েট সোডা বা পানীয় খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জিহবায় মিষ্টি স্বাদ পাওয়া মাত্রই হজমের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ইনসুলিন তৈরি করতে শুরু করে শরীর। যা 'ফ্যাট স্টোরেজ' বা চর্বি জমানোর হরমন হিসেবে কাজ করে।

শুধু তাই নয়, মিষ্টি পেলে শরীর কীভাবে কাজ করবে সেই কার্যপদ্ধতিতেও বিরূপ প্রভাবে ফেলে ডায়েট সোডা। কারণ মিষ্টি স্বাদ পেলেও তাতে কোনও চিনি নেই। এটা খাবারের স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতাও নিস্তেজ করে দেয়।

ককটেইল

সবাই জানে ফাস্টফুট ওজন বাড়ায়। বিভিন্ন ধরনের পানীয়র সংমিশ্রণে তৈরি ককটেইল ফাস্টফুড খাওয়ার ঝোঁক বাড়ায়। যদিও এটা কেনো হয় তা এখনও বের করা যায় নি। 

কফি

কফি কাজে মনোযোগ বাড়ায়। মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করে। তবে দিনে তিনকাপের বেশি কফি আপনাকে অবসন্ন করে দিতে পারে।

কফি খেলে চাঙা বোধ করার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এই পানীয় অ্যাড্রেনালিন উৎপন্ন করে। এই বৃক্করস হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির কার্যকলাপে বাঁধা তৈরি করে।

'প্লেইন' কফি পান না করে সিরাপ এবং দুধের সঙ্গে পান করলে ওজন বাড়ে।

প্রতিদিন যদি চাহিদার চাইতে বাড়তি ১২০ ক্যালোরি গ্রহণ করা হয় তবে বছরে ১৩ পাউন্ড ওজন বাড়তে পারে।

আর কফির সঙ্গে দুধ, চিনি বা সিরাপ মিশিয়ে খেলে, এক বসাতেই শরীরে আড়াইশ থেকে তিনশ ক্যালোরি ঢুকে যায়।