ছুটিতে খাগড়াছড়ি

পার্বত্য চট্টগ্রামের ভ্রমণ স্বর্গ খাগড়াছড়ি। এই জেলায় ভ্রমণের জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে তাই বেড়িয়ে আসতে পারেন পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে।

মুস্তাফিজ মামুনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2014, 03:25 AM
Updated : 21 July 2014, 11:16 AM

বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলার অন্যতম খাগড়াছড়ি। চট্টগ্রাম থেকে এই জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ১২২ কিলোমিটার। চারিদিকে পাহাড়ের মাঝে অনেকটা সমতলে এই শহর।   

খাগড়াছড়ির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভ্রমণের জায়গা হল আলুটিলা পাহাড়। জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে মহাসড়কের পাশেই রয়েছে এই পাহাড়। প্রায় এক হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে পুরো খাগড়াছড়ি শহরকে পাখির চোখে দেখা যায়। এখান থেকে চেঙ্গি নদীকে দেখলে মনে হয়, সাপের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে ছুটে চলেছে।

সাজেক যেতে পাহাড়ী পথ। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

পাহাড়ী নদী কাসালং। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

আলুটিলা পাহাড়ের আরেকটি আকর্ষণীয় জায়গা হল, প্রাচীন একটি গুহা। পাহাড়ের নীচে গুহার ভেতর দিয়ে বয়ে চলছে শীতল জলধারা।

শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে মনোরম এক প্রাকৃতিক ঝরনা রিছং। এটি আলুটিলা ছেড়ে সামনে আরও তিন কিলোমিটার দূরে। পাহাড়ের গা বেয়ে নামতে হয় এ ঝরনায়। বিশাল পাথরের একপাশ দিয়ে পানি বয়ে যায়।

খাগড়াছড়ি জেলাশহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সদর উপজেলার নুনছড়িতে উঁচু এক পাহাড়ের উপরে দেবতার পুকুর। এ পুকুরে উঠার পথ বেশ দুর্গম। শিশুদের নিয়ে এখানে বেড়াতে যাওয়া কষ্টকর।

নীল আকাশের নীচে লাল ইটের পথ। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

রিসাংয়ের পথে। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে মেঘের কোলে বেড়ানোর জায়গা সাজেক। জায়গাটি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার অন্তর্গত হলেও খাগড়াছড়ি থেকে যাওয়াই সহজ।

খাগড়াছড়ি থেকে পাহাড়ি পথ বেয়ে যেতে এ পথে দেখা যাবে কাসালং আর মাসালং নদী। বাঘাইহাট সেনা ক্যাম্পের সামনে কাসালং এবং মাসালং নদী একত্রে এসে মিলেছে। সাজেকে যেতে হলে বাঘাইহাট ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। এখান থেকে পাহাড়ি পথগুলোও বেশ দুর্গম।

সাজেক যাওয়ার পথে আছে মাসালং বাজার। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষেরাই মূলত এ বাজারে জমায়েত হন। পাহাড়ি পথ বেয়ে মাথা বোঝাই বাজার সদাই নিয়ে বাড়ি ফেরেন তারা।

আলুটিলা থেকে দেখা চেঙ্গী নদী, দূরে খাগড়াছড়ি শহর। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মানিকছড়িতে দেবতার পাহাড়। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

একেবারে সাজেকের পাহাড় চূড়ায় আছে আদিবাসীদের গ্রাম কংলাকপাড়া। এ গ্রামে উঠলে চারপাশে দেখা যায় দূরের পাহাড়ের সৌন্দর্য। খাগড়াছড়ি শহর থেকে চাঁদের গাড়ি (পুরানো জিপ) ভাড়া করে যেতে হবে সাজেক। সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যেই ফিরতে হয়। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ির ভাড়া সাধারণত আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।

কীভাবে যাবেন

ঢাকার কমলাপুর থেকে বিআরটিসির এসি বাস যায় খাগড়াছড়ি। ভাড়া ৭শ’ টাকা। এছাড়া ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে এস আলম, সৌদিয়া, ঈগল, শ্যামলী ও শান্তি পরিবহনের নন এসি বাসও চলাচল করে এ পথে। ভাড়া ৫২০ টাকা।

পাহাড়ের উপরে দেবতার পুকুর। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

পাহাড়ী ঝরনা রিসাং। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

কোথায় থাকবেন

খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল রয়েছে, ফোন ০৩৭১ ৬২০৮৪-৮৫। ঢাকার মহাখালীতে পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এ হোটেলে বুকিং দেওয়া যায়।

হোটেলের নন এসি দ্বৈত কক্ষে ভাড়া ১ হাজার ৩শ’ টাকা এবং এসি কক্ষের ভাড়া ২ হাজার ১শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।

এছাড়াও খাগড়াছড়ি শহরে সাধারণ মানের কিছু হোটেল হল: হোটেল শৈল সুবর্ণা, হোটেল গাইরিং এবং হোটেল ফোর স্টার। এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায় কক্ষ মিলবে।