ক্যামেরার বাজারদর

প্রিয় মূহূর্তগুলো ধরে রাখতে ক্যামেরা ছাড়াতো উপায় নেই। তাই অনেকেই শখে ক্যামেরা কিনেন। আবার পেশাগত কারণেও অনেকে ক্যামেরা ব্যবহার করেন।

আজরাফ আল মূতীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2014, 01:51 PM
Updated : 29 May 2014, 06:00 AM

ভিডিও ক্যামেরার চাইতে, স্টিল ক্যামেরার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ভিডিওচিত্র ধারণ ও সম্পাদনার জন্য যথেষ্ট প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া বর্তমানে ডিজিটাল স্টিল ক্যামেরাগুলোতে ভিডিও করার সুবিধাও থাকে। 

নিকন ও ক্যানন ব্র্যান্ডের ক্যামেরা বাংলাদেশে বেশি জনপ্রিয়। তবে অনেকেই ক্যামেরা কিনতে গিয়ে বুঝতে পারেন না কোনটা কিনবেন।

নিকন ও ক্যাননের যে ক্যামেরাগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর বর্তমান মূল্য ও আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়েই এই আয়োজন।

ক্যানন

১০ হাজার ৩শ’ থেকে ২৮ হাজার টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে ক্যাননের কমপ্যাক্ট ক্যামেরা। বর্তমানে ইক্সাস-145, ইক্সাস-155, ইক্সাস- 265 H3, পাওয়ারশুট 5x জুম এইচএস এবং পাওয়ারশুট s110 এই মডেলের ক্যামেরাগুলোই পাওয়া যাচ্ছে ক্যাননে।

এ ছাড়াও ক্যাননে আছে বিভিন্ন মডেলের ডিএসএলআর ক্যামেরা। ক্যানন বিক্রেতাদের দোকানগুলোতে ৩৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিটলেন্সসহ পাবেন এ ক্যামেরাগুলো।

রাজধানীর বিসিএস কম্পিউটার সিটির আইডিবি শাখার ক্যানন ডিলার জেএএন অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের জেষ্ঠ্য ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ-আল-শাফি ডিএসএলআর ক্যামেরা কেনা প্রসঙ্গে বলেন, “আমি মনে করি ডিএসএলআর অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি যন্ত্র। তাই খোঁজ-খবর নিয়ে সঠিক বিক্রেতার কাছ থেকে কেনা উচিত।”

ডিএসএলআর সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে তারপর কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং যেখান থেকে কেনা হচ্ছে তারা পরে কী ধরনের বিক্রয়োত্তর সেবা দিবে— সে বিষয়টিও পরিষ্কারভাবে জেনে নেওয়ার অনুরোধ জানান শাফি।

আগ্রহী ক্রেতাদের সুবিধার্থে এখন বাজারে জনপ্রিয় যেসব ক্যানন ডিএসএলআর ক্যামেরা রয়েছে, সেগুলোর সাম্প্রতিক দাম তুলে ধরা হল।

ইওস 1100D (১৮-৫৫ এমএম লেন্স) ৩৫ হাজার টাকা। ইওস 600D (১৮-৫৫ এমএম লেন্স) ৫০ হাজার টাকা।

ইওস 700D (১৮-৫৫ এমএম এসটিএম লেন্স) ৬৫ হাজার টাকা। ইওস 60D (১৮-১৩৫ এমএম লেন্স) ৮৫ হাজার টাকা। ইওস 70D (১৮-১৩৫ এমএম এসটিএম লেন্স) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ইওস 6D (২৪-১০৫ এলআইএস ইউএসএম লেন্স) ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। ইওস 5D মার্ক থ্রি (২৪-১০৫ এলআইএস ইউএসএম লেন্স)-৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

নিকন

১০ হাজার থেকে শুরু করে ৫৮ হাজার টাকার মধ্যেই কেনা সম্ভব নিকনের কমপ্যাক্ট ক্যামেরা। প্রতিষ্ঠানটির কুলপিক্স L30, L830 , S2800, S3600, S5300 এবং S6600 মডেলের ক্যামেরাগুলো কিনতে বর্তমানে খরচ পড়বে ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা।

এ ছাড়াও ২৩ হাজার থেকে ৫৮ হাজার টাকার মধ্যেই পাবেন নিকনের কুলপিক্স A, S9700, AWU110 (ওয়াটারপ্রুফ) এবং কুলপিক্স S9600 মডেলের ক্যামেরাগুলো।

আগ্রহী ক্রেতাদের জন্য নিকনের জনপ্রিয় এবং বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এই ধরনের ডিএসএলআর ক্যামেরাগুলোর মডেল ও মূল্য দেওয়া হল।

নিকন D3100 (১৮-৫৫ এমএম ভিআর লেন্স) ৩৫ হাজার টাকা। নিকন D3200 (১৮-৫৫ এমএম ভিআর লেন্স) ৪০ হাজার টাকা। নিকন D5100 (১৮-৫৫ এমএম ভিআর লেন্স)৩৬ হাজার টাকা। নিকন D5200 (১৮-৫৫ এমএম ভিআর লেন্স) ৫০ হাজার টাকা। নিকন D7000 (১৮-১০৫ এমএম ভিআর লেন্স) ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নিকন D7100 (১৮-১০৫ এমএম ভিআর লেন্স) ১ লাখ ৪ হাজার টাকা। নিকন D600 ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নিকন D800 ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। নিকন D800E ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। নিকন D4 ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

কিস্তিতেও কেনার সুযোগ রয়েছে নিকনের ডিএসএলআর ক্যামেরা। তবে সেজন্য আমেরিকান এক্সপ্রেস কিংবা স্ট্যান্ডার্ড চার্টাডের ক্রেডিট কার্ডধারী হতে হবে।

ফ্লোরা লিমিটেডে কার্ডটি সঙ্গে নিয়ে গেলেই নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে ১২ মাসে পরিশোধ করতে পারবেন ক্যামেরার দাম। কিছু মডেল ছাড়া বেশিরভাগ ক্যামেরার কিস্তি পরিশোধে অতিরিক্ত কোনো অর্থ প্রদান করতে হবে না।

এ ছাড়াও নিকন বাজারে নিয়ে এসেছে ডিএফ মডেলের ডিএসএলআর। বর্তমান মূল্য ২ লাখ ২০ থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

ক্যামেরা মূল্যের এই তারতম্য’র প্রসঙ্গে রাজধানীর বিসিএস কম্পিউটার সিটির আইডবি শাখার ফ্লোরা লিমিটেডের সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো: রেজাউল হাসান বলেন, “মেগাপিক্সেল, স্ক্রিনের আকৃতি, জুম ক্ষমতা এবং অভ্যন্তরীণ ফিচারের উপর আমাদের কমপ্যাক্ট ক্যামেরাগুলোর দাম নির্ভর করে।”

এছাড়া রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি ও ধানমণ্ডির প্লাজ এআর সেন্টারে রয়েছে বেশ কয়েকটি ক্যামেরার দোকান। এখানে নানান মডেলের নিকন ও ক্যাননের ক্যামেরা কিছুটা কম দামে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেনে রাখা ভালো

ক্যাননের আব্দুল্লাহ আল-শাফি ক্যামেরা কেনার আগে কিছু বিষয় খেয়াল করার পরামর্শ দেন।

* অবশ্যই ডিলারের কাছ থেকে কিনবেন নতুন ডিএসএলআর ক্যামেরা।

* কেনার সময় বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে জেনে নিন। বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সার্ভিসিং ল্যাব রয়েছে সেটিও খোঁজ করুন।

* নিশ্চিত হয়ে নিন ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি সম্পর্কে। অনেকেই মনে করেন ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায়। তবে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিজের দেশের বাইরে দুই বা ততোধিক দেশেই শুধু এ সেবাটি পাওয়া যায়।

* ডিএসএলআর কেনার আগে ক্যামেরার বডি, লেন্স, অভ্যন্তরীণ সেন্সর, প্রতি সেকেন্ডে কতোটি ছবি তুলতে পারে, অটো ফোকাস পয়েন্ট, শাটার স্পিড, আইএসও, মেগাপিক্সেল ইত্যাদি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। প্রয়োজনে এসব তথ্য জানতে বিক্রয় প্রতিনিধির সাহায্য নিন।