ঢাকায় এখন বেশ কয়েকটি মানসম্পন্ন ‘কফি শপ’ চালু হয়েছে। কাছের মানুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটানো কিংবা বন্ধুবান্ধব-পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আড্ডা— কফির স্বাদে আনন্দময় সময় কাটাতে পারেন এইসব কফি শপে।
বাড়ি ১/এ, রোড -২৩, গুলশান-১। সময় : সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা।
প্রচলিত ইতিহাস মতে পৃথিবীর প্রাচীনতম কফি শপের নাম থেকে এই নাম এসেছে। যে দোকানের শুরু হয়েছিল ১৪৭৫ সালে। এমনটাই জানালেন ঢাকার কিভা হান কফি শপের কর্ণধার সামিত বিন সালাম।
২০০৭ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন কফি ‘পাগল’ এই তরুণ উদ্যোক্তা। শেষে ২০১৩ সালে কফি প্রেমীদের জন্য ‘কিভা হান’ এর দরজা খুলেছেন। কফির প্রতি ভালোবাসা তার আগেই ছিলো। শুধু কফিশপ খোলার আগে নিজেই কফি বানানোর বিদ্যা রপ্ত করেছেন বিলাত ও সিঙ্গাপুর থেকে। এছাড়া চোখে পড়ার মতো যে কাজটি করেছেন তা হলো নিজের স্থাপত্যবিদ্যার জ্ঞ্যান ও চিন্তা ভাবনা যেন ঢেলে দিয়েছেন অকাতরে। মিশ্র ধরনের পেইটিং যেমন আছে তেমনি আছে পোস্টমডার্ন ঘরানায় সাজানো চেয়ার টেবিল। সঙ্গে চমৎকার কফি।
কর্ণধারের একটাই চাওয়া. “কফি প্রেমিরা যেন এখানে এসে সুন্দর পরিবেশে যতক্ষণ খুশি কফি নিয়ে সময় কাটিয়ে যায়।”
খ-৪৭-১ (দ্বিতীয় তলা), প্রগতি সরনি, নতুন বাজার -গুলশান ঢাকা-১২১২। সময়: শনি থেকে বৃহস্পতি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১০টা।
নর্থ এন্ডের প্রথম বৈশিষ্ট হচ্ছে, কফির ‘মাতাল’ করা ঘ্রাণ টের পাবেন সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়। দরজা খুললেই মনে হবে ‘হারিয়ে’ গেছেন কফির রাজ্যে!
চোখে পড়বে কাউন্টারের পেছনে থরে থরে সাজানো আমদানী করা কফির বস্তা। ব্রাজিল, কোস্টা রিকা, ইথিওপিয়া, গুয়াতেমালা, ইন্দোনেশিয়া এমন কি চট্টগ্রামের কফি।
পুরো শপ জুড়েই চোখে পড়ে কফির আবহ। রিক বলেন, “এই যে কফির জন্য ব্যবহৃত চটের ব্যাগ থেকে পর্দার আইটেম। কফি খাওয়ার জায়গা থেকে দৃষ্টিসীমার মধ্যে রাখা বস্তা ভর্তি কফিবিন, রোস্টিং মেশিন। এসবই এমনভাবে রাখা হয়েছে যাতে পুরো ক্যাফেতে কফির পরিবেশ তৈরি হয়।”
আর এই কফিবিন রোস্টিং প্রতি সকালে নিজেই করেন কর্ণধার রিক হাবার্ড। তার মতে, “কফি রোস্টিং আমার কাছে নেশার মতো হয়ে গেছে।”
কফির দুনিয়ার খুটিনাটি শিখতে চাইলে চলে আসতে পারেন এখানে। ৩ দিনের মোট ৯ ঘন্টার কোর্স। রিক হাবার্ড নিজেকে দোকানের মালিক মনে করার চেয়ে বরং নিজেকে কফিপ্রেমিক মনে করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার প্রমান এই কথায় -“দেখুন, কফি হচ্ছে একটা এক্সপেরিয়েন্স, একটা ভালো সময় কাটানো।”
বাড়ি ৩৫, গুলশান অ্যাভনিউ ঢাকা-১২১২। সময়: সকাল ৭টা থেকে রাত ১টা।
এই কফিশপে ঢুকতেই চোখে পড়ে বেশ আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা। ছোট টেবিলের পাশাপাশি বড় টেবিলও রয়েছে। যেখানে বন্ধুরা অথবা পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে কফির স্বাদে ‘হারিয়ে’ যেতে পারেন! তবে কফির কদর যারা করেন, তাদের কাছে যে ব্যাপারটি ভালো লাগবে তা হল চার দেয়ালে আটকে থাকা কফির মোহনীয় সুঘ্রাণ।
শপের পেছনের অংশে প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে কফির স্বাদ উপভোগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। সবুজ পরিবেশ আর বিশ্বখ্যাত বোস সাউন্ডসিস্টেমে সংগীত উপভোগ করতে পারবেন। ভেতর ও বাইরে মিলিয়ে ১৫০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে।
বাড়ি এসই(এফ), ১ গুলশান অ্যাভনিউ। সময়: সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা।
ইতালিয়ান লাভাৎজা ব্র্যান্ডের কফিবিন দিয়ে কফি প্রস্তুত করা হয় এখানে। এসপ্রেসো, কাপুচিনো, লাটে, মোকাসহ আরও নানান রকমের কফি পাওয়া যায়। ছিমছাম বসার ব্যবস্থা। দেয়ালের রংয়ের সঙ্গে আলোর ব্যবহার বেশ মানানসই। ছাত্র বা পেশাজীবি সবাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন বলা যায়। গুলশান আউটলেটের আসন ব্যবস্থা ৩০ জন।
৫৪/এ গুলশান অ্যাভনিউ। সময়: সকাল ১১টা থেকে রাত ১১টা।
শহরের নতুন চালু হওয়া কফি শপের মধ্যে ‘কফি রিপাবলিক’ অন্যতম। নিজস্ব কারখানায় রোস্ট করা কফিবিন ব্যবহার করেন তারা। ১১টি ভিন্ন ধরনের বিন মিশিয়ে ব্লেন্ডিং করা হয়। হাত-পা ছড়িয়ে কফি পান সঙ্গে আড্ডা— সময় বেশ আয়েশে কাটনো যায় এখানে। যারা খেতে যাবেন তাদের জন্য একটি গিটার রাখা আছে। চাইলে বাজিয়ে সময় কাটাতে পারেন।
এছাড়া যারা এসপ্রেসোর ভক্ত তারা বনানী ১১ নম্বরের ‘ক্লাব জেলাতো’তে যেতে পারেন।