অলিভচর্চা

সৌন্দর্য সুরক্ষায় অলিভ বা জলপাই ব্যবহার হচ্ছে অনেক আগ থেকেই। কেবল ত্বকের যত্ন নয়, চুল এমনকি মেইকাপ সামগ্রী হিসেবেও ব্যবহৃত হয় অলিভ থেকে নিঃসৃত তেল।

ফাতেমা বিনতে মমতাজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2014, 02:59 AM
Updated : 6 Feb 2014, 02:59 AM

বিশেষ করে এই শুষ্ক আবহাওয়ায় অলিভ অয়েল দারুণ কার্যকর। সাধারণত তিনধরনের হয়ে থাকে এই তেল। এক্সট্রা ভার্জিন, ভার্জিন এবং রিফাইনড। অলিভ অয়েল টাইমস ডটকমের মতে খাওয়া ছাড়াও সৌন্দর্য সুরক্ষায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের ব্যবহারই সর্বৎকৃষ্ট।

ত্বকের যত্নে

ত্বক উজ্জ্বল এবং নরম রাখতে অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। ভারতের অন্যতম সৌন্দর্য বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্টাইল কেয়ার’ জানাচ্ছে, শরীর বা মুখের ত্বক— যেখানেই ব্যবহার করা হোক না কেনো এ তেল শরীরের সবজায়গার জন্যই আদর্শ। নিয়মিত সারা শরীরে অলিভ অয়েল মাখলে ত্বক-সংক্রান্ত নানান সমস্যার থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া যায়। বিশেষ করে যাদের ত্বক শুষ্ক তারা শীত-গ্রীষ্ম সবসময়ই এ তেল ব্যবহার করতে পারেন। 

স্কিন ময়েশ্চারাইজার

প্রতিদিন গোসলের পর কিংবা রাতে শোবার আগে ময়শ্চারাইজার হিসেবে বেছে নিতে পারেন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল। ত্বকের শুষ্কতা এবং বিবর্ণভাব রোধে এটি দারুণ কাজ করে। ‘ডেইলিগ্লো ডটকম’ বলছে, বেশি কার্যকর ও ত্বকে সতেজভাব বাড়িয়ে তোলার জন্য অলিভে অয়েলের সঙ্গে মেশাতে পারেন অল্প পরিমাণ লেবুর রস। এরসঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন সবধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী একটি ময়শ্চারাইজার।

এক্সফোলিয়েটর হিসেবে

দি প্যাশোনেট অলিভ ডটকম জানাচ্ছে— শুষ্ক ও খসখসে ত্বকের জন্য অলিভ অয়েলের সঙ্গে লবণ মিশিয়ে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। সমপরিমাণ অলিভ আয়েল এবং লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে স্কার্ব তৈরি করে ত্বকের উপর ধীরে ধীরে ভালভাবে ম্যাসাজ করুন। কয়েকদিনেই ত্বক নরম হয়ে উজ্জ্বল আভা চলে আসবে। কিংবা প্রতিদিনকার গোসলের পানিতে ৩ টেবিল-চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক বা দু’ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। শরীরের ক্লান্তি কাটিয়ে ফুরফুরে হয়ে উঠতে এর জুড়ি নেই।

নখের যত্নে

ভঙ্গুর নখ এবং নখের চামড়ার বাইরের স্তর সুস্থ, সুন্দর এবং কোমল রাখার জন্যও অলিভ অয়েল আদর্শ। স্টাইল কেয়ার ডটকমের এর তথ্য অনুসারে কয়েক ফোঁটা একস্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল হাতের আঙুলে নিয়ে নখের উপরে এবং চারপাশের কিউটিকলে ভালোভাবে মালিশ করলে নখ শক্ত ও উজ্জ্বল হয়। পাশাপাশি নখের চারপাশ থাকবে নরম এবং আদ্র।

আই মেইকাপ রিম্যুভার

সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের মেইকাপ তোলার জন্য সবচেয়ে ভালো হচ্ছে অলিভ অয়েল। অ্যাবাউট ডটকমের তথ্য মতে চোখ অনেক সংবেদনশীল বলেই এর মেইকাপ তুলতে সাবধানতা খুবই জরুরি। তাই বাজারের ময়শ্চারাইজার ব্যবহার না করে তুলার মধ্যে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে আস্তে আস্তে ঘষে ভালোভাবে মেইকাপ তুলে ফেলুন। চোখের পাপড়িতে লাগানো মাশকারা ওঠাতে কিংবা চোখের নিচের কালো দাগ এবং রিঙ্কল দূর করতেও এটি কাজ করে।

চুলের যত্নে

চুল এবং মাথার ত্বকের পরিচর্যাতেও অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। রিডার’স ডাইজেস্ট জানাচ্ছে ডিপ কন্ডিশনার এবং ড্যানড্রাফ কন্ট্রোলার হিসেবে এই তেল বেশ ভালো কাজ করে। শ্যাম্পু করার পর সমপরিমাণ পানি এবং অলিভ অয়েল নিয়ে সারা মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। পাঁচ মিনিট এভাবেই রেখে দিন যাতে চুল ও মাথার ত্বক ভালোভাবে তেল শুষে নেয়। তারপর শ্যাম্পু করে প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে মাথার ত্বকের শুষ্কভাব দূর হবে। চুলও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

যাদের চুল পাতলা, তারা চুল ঘন কালো করতে আধা কাপ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মাথায় ম্যাসাজ করে নিন। তারপর একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে ভালোভাবে নিংড়ে নিয়ে সারা মাথায় জড়িয়ে ৩০ মিনিট রাখুন।

যাদের চুল ভঙ্গুর বা অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা তেলের সঙ্গে একটি ডিম ভালোভাবে ফেটে মেশান। মিশ্রণটি সারা মাথায় মেখে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট রাখুন। সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি পালন করতে পারলে একমাসেই চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

ছেলেদের ত্বক

শেইভিং ক্রিমের খুব ভালো বিকল্প হতে পারে অলিভ অয়েল। রিডার’স ডাইজেস্ট জানাচ্ছে, এই তেল দাড়ি নরম করে। পাশাপাশি নিখুঁত ও নরম শেইভ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। শেইভিং ক্রিম ব্যবহারে অনেক সময় এলার্জির আশংকা থাকে, অলিভ অয়েলে সে ভয় থাকেনা। এমনকি যারা দাড়ি রাখেন তারাও দাড়ি ভালো রাখার জন্য নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করতে পারেন।