শিশুর পরিচর্যা

দিনে গরম, সন্ধ্যায় শীতের আমেজ। এই মৌসুমের মিশ্র আবহাওয়ায় বড়দেরই খাপ খাওয়াতে সমস্যায় পড়তে হয়। সেখানে ছোটদেরতো আরও বেশি সমস্যা। এই সময়ে শিশুরা সবচেয়ে বেশি যে অসুখে ভোগে তা হচ্ছে সর্দি-কাশি। শিশুদের পরিচর্যা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন নিবেদিতা হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক শরীফুল হক।

মরিয়ম সেঁজুতিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2013, 03:10 AM
Updated : 31 Oct 2013, 03:10 AM

শিশুর জন্য সর্দি হওয়াটা বেশ কষ্টের বিষয়। কারণ এর জন্য প্রায়ই নাক বন্ধ হয়ে যায়। নাকের ভেতর শিরশির করে, পানি ঝরে। তাই সর্দি লাগা মাত্রই খেয়াল রাখতে হবে যাতে অসুখ আর বাড়তে না পারে। অনেক সময় এই কারণে শিশুর জ্বরও হয়। শুধু সর্দির জন্য ডাক্তার দেখানোর দরকার নেই। তবে জ্বর হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

পাশাপাশি দরকার শিশুর সঠিক যত্ন। সর্দি-কাশি হলে বাচ্চার শরীরে বাতাস লাগাবেন না। শরীর ঘেমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে শুকনো তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে দিন। কারণ ঘাম বসে গেলেই তা অনেক ক্ষেত্রে জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সর্দি-কাশি বা জ্বর হলে শিশুকে সবসময় বিছানায় রাখুন। রাতে যে ঘরে ঘুমায় সেই ঘরের জানালা বন্ধ করার দরকার নেই। তবে শরীরে যেন সরাসরি বাতাস না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সর্দির মধ্যে শিশুকে গোসল না করিয়ে বরং কুসুম গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে শরীর মুছে দিন। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে দেবেন। শরীর মোছার সময় ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে দিন যাতে শিশুর ভেজা শরীরে বাতাস না লাগে।

জ্বর কমানোর জন্য তার জামা-কাপড় খুলে রাখতে হবে। অনেক মা-বাবা আছেন যারা শিশুর শরীর স্পঞ্জ না করে শুধু মাথায় পানি ঢালেন। এতে জ্বর কমতে অনেক সময় লাগে। তাই শরীরে স্পঞ্জ করার পাশাপাশি মাথায় পানি দিলে উপকার হবে। তবে মাথায় পানি দেওয়ার পর শুকনো তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছে দিতে হবে, নইলে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন শিশুর কানে যেন পানি না যায়।

জ্বর হলে শিশুকে অতিরিক্ত জামাকাপড় পরাবেন না। এতে শরীরের তাপ আরও বেড়ে যায়। শিশু ঘামতে শুরু করে। এই ঘাম থেকে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। তাই সাবধান থাকতে হবে।

সর্দি-জ্বর হলে শিশুর মুখে রুচি থাকে না। তাই সে কিছুই খেতে চায় না। এ ব্যাপারে মাকে একটু সচেতন থাকতে হবে। শিশুর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জ্বর হলে তার শরীরে পানির চাহিদা বেড়ে যায়। তাই তাকে বারবার খাওয়াতে হবে।

এ সময় তাকে পছন্দ মতো খাবার দিন। খাবার যেন হয় হালকা অথচ পুষ্টিকর। যা সহজে হজম হয়। যেমন পাতলা দুধ, হরলিক্স, মুরগির স্যুপ, দুধ, সুজি, ফিরনি অর্থাৎ আধা তরল ধরনের খাবার। খেয়াল রাখবেন খাবার যেন একটু গরম থাকে।

সর্দি-জ্বরে শরীর ব্যথা হয়। গলা খুশখুশ করে। এ জন্য শিশুকে কুসুম গরম পানি খাওয়াতে হবে। মোটকথা শিশুর সর্দি কিংবা সর্দি-জ্বর এমন কিছু মারাত্বক অসুখ নয়। শুধু যত্ন আর পরিচর্যার মধ্য দিয়েই শিশুকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

অনেক সময় বড়দের থেকেও শিশুদের সর্দি-জ্বর হতে পারে। এই বিষয়ে তাই সাবধান থাকতে হবে। শিশুর মায়ের যদি জ্বর হয়ে থাকে তাহলে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাচ্চার খাবার তৈরি করার সময় ভালো করে হাত ধুয়ে নেবেন।