শখের বাজরিগার

দেখতেও টিয়ার মতো। টিয়ে প্রজাতির ছোট এই পাখিটি বিভিন্ন রংয়ের হয়। সারাদিন ক্যাচক্যাচ শব্দে মাতিয়ে রাখে। ঝোঁকের বশে পোষা শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারেন না অনেকেই। অথচ একটু যত্ন নিলেই শখের বাজরিগার থেকেও করা যায় বাড়তি আয়। সেই তথ্যই জানাচ্ছেন শৌখিন পাখিপালক পার্থ দাশ। 

প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2013, 07:48 AM
Updated : 15 Sept 2014, 11:21 AM

বাড়িতে আলাদা সৌন্দর্য আনতে শৌখিন মানুষরা বাজরিগার পোষেন। এই জাতের পাখি পোষার জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। শুধু দরকার সঠিক পরিচর্যা। মাত্র  ১০ ফুট দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার একটি ঘরে প্রায় ১০০ জোড়া বাজরিগার পাখি পোষা যায়।

ব্যয়

নিচে ৪ মাস হিসেবে পাখি পালনের খরচ দেওয়া হল।

* ১০০ জোড়া বাজরিগার পাখি পালন করতে নির্দিষ্ট মাপের ঘর বানাতে খরচ পড়বে ২ হাজার টাকা।

* ৪ মাস বয়সী এক জোড়া পাখির দাম ৪শ টাকা, ১০০ জোড়া পাখির দাম হবে পড়বে ৪০ হাজার টাকা।

* ১০০ জোড়া পাখির খাবার বাবদ প্রতি মাসে আনুমানিক খরচ ৩০০ কেজি X ২০ টাকা, ৬ হাজার টাকা। ৪ মাস খাবার বাবদ খরচ পরবে আনুমানিক ২৪ হাজার টাকা।

* ৩ মাসের ভ্যাক্সিন বাবদ খরচ হবে আনুমানিক ২ হাজার টাকা।

* ১০০টি কলসি যা পাখির বাসা হিসেবে ব্যবহার হবে। প্রতিটি ১৫ টাকা হিসেবে দাম পড়বে ১৫শ টাকা।

আয়

বাজরিগার পাখির বয়স যখন ৮ মাস হবে, তখন থেকেই ডিম দেওয়া শুরু করবে। অর্থাৎ পাখি কিনে এনে খাঁচায় পালনের বয়স যখন ৪ মাস হবে তখন ১০০ জোড়া পাখি থেকে গড়ে প্রায় ৩০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যাবে।

২ মাস বয়সী প্রতি জোড়া বাচ্চা প্রায় ৩শ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। অর্থাৎ ৩০০ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা যাবে ৯০ হাজার টাকায়। এই হিসেবে মোট ব্যয় তুলে আনতে সময় লাগবে আনুমানিক ৪ মাস।

এভাবে সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করা যায় খুব সহজেই। বাজরিগার প্রতি ৩ মাস পরপর ৬ থেকে ৮টি বাচ্চা ডিম থেকে ফোটায়।

এভাবে চলতে থাকলে ৩ মাসের খাবার ও ভ্যাক্সিনসহ খরচ হবে আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা। প্রতি ৩ মাস পরপর বাচ্চা পাওয়া যাবে প্রায় ৩০০ জোড়া। যা বিক্রি হবে আনুমানিক ৯০ হাজার টাকায়। এতে করে প্রতি মাসে আয় হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা।

অল্প পরিসরে মাত্র ৭০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে, প্রতিদিন মাত্র ২-৩ ঘণ্টা সময় দিয়ে ৪ মাসের মধ্যে বিনিয়োগ করা টাকাসহ লাভ উঠিয়ে আনা সম্ভব।

রোগ-নিরাময়

সাধারণত এই পাখির তেমন কোনো অসুখ হয় না। তবে খুব বেশি হলে রাণীক্ষেত রোগ হতে পারে। সবুজ মল ত্যাগ করা এই রোগের লক্ষণ। এছাড়া পাখায় একধরণের ঘা হতে পারে।

যে কোনো রোগের ওষুধের জন্য কাঁটাবনের পাখির দোকানে গেলেই সমাধান পাওয়া যাবে।

এই পাখি সাধারণত ৫-৬ বছর বাঁচে।

যেথায় পাবেন

সারাদেশেই বাজরিগার পাখি পালন হয়। রাজধানীতে কাঁটাবন, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গুলিস্থানসহ বিভিন্ন হাটে এই পাখি পাওয়া যায়।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম www.facebook.com/groups/244883885536799/Bangladesh Animal & Bird Bazaar-সহ অনলাইন ক্রয়-বিক্রয় ওয়েবসাইটেও বাজরিগার পাওয়া যাবে।

চাকুরি বা পড়াশোনার পাশাপাশি বাজরিগার পাখি পালন করা সম্ভব। বাড়তি আয় ছাড়াও এই শখ পূরণ করতে গিয়ে অবসর সময়টাও ভালোভাবে কাটানো যায়।