টি-শার্টে আরাম

গরমে শুধু আরামদায়ক পোশাক পরলেই হবে না চলতি ফ্যাশনের ব্যাপারটিও মাথায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে ফ্যাশন আর আরামদায়ক পোশাকের কথা ভাবলে প্রথমেই মাথায় আসে টি-শার্টের কথা।

মরিয়ম মনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2013, 08:38 PM
Updated : 8 May 2013, 08:41 PM

এ সময়ে চাপা জিন্সের সঙ্গে মানানসই টি-শার্ট-- এই চলটাই চলছে বেশ। শুধু ছেলেরাই নয়, পিছিয়ে নেই মেয়েরাও। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীরা জিন্স আর টি-শার্টের সঙ্গে জড়িয়ে নিচ্ছেন রংবেরংয়ের স্কার্ফ। আর এটাই যেন হয়েছে বর্তমানের ট্রেন্ড।

গরমে আরাম বা বর্তমান ফ্যাশনের সঙ্গে টি-শার্টের সম্পর্ক নিয়ে জানতে চাইলে ফ্যাশন হাউজ ‘রঙ’-এর কর্ণধার ও ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, “শুধু আমাদের দেশেই নয় বিশ্বব্যাপী ছেলেদের পোশাকের জন্য জনপ্রিয় হল টি-শার্ট। আরামের পাশাপাশি সহনীয় দামের জন্যই বর্তমানের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে এই পোশাকটি। এটি যেন একজন ডিজাইনারের সাদা ক্যানভাস। তাই স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, বাটিকসহ বিভিন্ন ধরনের নকশা ব্যবহার করা হয় টি-শার্টে।”

সময়ের সঙ্গী টি-শার্ট

ফ্যাশনের ধারা ধরে রাখতে প্রয়োজন সঠিক পোশাক নির্বাচন। আর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় আর হাল ফ্যাশনের পোশাক হল টি-শার্ট। এটা যেন তারুণ্যের গান গায়। বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত সব কবি-সাহিত্যিকের লেখা গান, কবিতা, বিভিন্ন শিল্পকর্মসহ আমাদের সংস্কৃতির নানাদিক বক্ষে ধারণ করার জন্য যেন পণ করেছে বর্তমান প্রজন্ম। তাই তো কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে, বন্ধুদের আড্ডা বা যে কোনো অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পোশাকের ক্ষেত্রে তরুণদের প্রথম পছন্দ টি-শার্ট।

দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোর ভিন্নমাত্রা

টি-শার্টের আজকের এ জনপ্রিয়তার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো। পোশাকটির চিরচেনা গণ্ডি থেকে বের করে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছেন নকশাকাররা। টি-শার্টকে ক্যানভাস বানিয়ে নিত্যনতুনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। পোশাকটি যেন সময়ের কথা বলে। যেমন-- কারও গায়ে যদি লাল-সবুজের টি-শার্ট দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে সামনেই রয়েছে আমাদের জাতীয় কোনো দিবস। এভাবেই টি-শার্টের দিবসভিত্তিক উপস্থাপন আমাদের মধ্যে স্বদেশপ্রেম জাগ্রত করে।

এখন গরম, তাই হাফহাতা টিশার্টই বেশি চলছে। ফ্যাশন হাউজ রঙ-এ টি-শার্ট কিনতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মিল্টন। তিনি বলেন, “বাইরে যে প্রচণ্ড গরম, তাই আরামের জন্য টি-শার্টের বিকল্প নেই। এখন গ্রীষ্মকাল; আর বাজারে বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মকালীন ফল পাওয়া যাচ্ছে, তাই তরমুজের স্ক্রিন প্রিন্টের টি-শার্ট নিয়েছি।”

এভাবেই টি-শার্টের চিত্রগুলো সময়ের কথা বলে, দেশের কথা বলে, বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলে।

বর্তমানে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোর মধ্যে রঙ, আড়ং, নিত্যউপহার, তারা মার্কা, কে ক্রাফ্ট, কাপড়-ই বাংলা, রূপকথা, যাত্রা, অঞ্জনস, দেশালসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলোতে নিত্যনতুন ডিজাইনের টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে।

শপিংমলে টি-শার্ট

একটু পশ্চিমা ধাঁচের টি-শার্ট কিনতে চাইলে খোঁজ নিতে পারেন শপিংমলগুলোতে। ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে গোলগলা টি-শার্টের পাশাপাশি ভি-গলা ও কলারঅলা টি-শার্ট বেশ চলছে। কোনো কোনো টি-শার্টের জমিনে শোভা পাচ্ছে পকেট, বিভিন্ন দেশের পতাকা, ভালোবাসার বিভিন্ন চিহ্ন, ফুল, পাখি, চামড়ার বিভিন্ন ধরনের নকশা, কখনও কখনও বেল্টের ব্যবহার টি-শার্টকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এ ধরনের একটু ভিন্ন ধাঁচের টি-শার্ট পাওয়া যায় প্লাস পয়েন্ট, লা রিভ, রেক্স, ইজি, ওয়েক্সটেক্স, এক্সট্যাসি, ওটু, ইয়েলোসহ বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশন হাউজে।

নিউ মার্কেট ও ফুটপাথে টি-শার্ট

কিছুটা কমদামে সেই সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব ধরনের টি-শার্টের জন্য স্বর্গরাজ্য হল নিউ মার্কেট। বিভিন্ন ধরনের নকশার পাশাপাশি কাপড়েও রয়েছে তারতম্য। সুতি, সিল্কসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের টি-শার্ট পাওয়া যায় নিউ মার্কেটের ওভারব্রিজের সঙ্গে লাগোয়া মার্কেটগুলোতে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ফুটপাথও নানান ধরনের টি-শার্টের জন্য বিখ্যাত। এরমধ্যে অন্যতম হল ঢাকা কলেজের উল্টোপাশের মার্কেটের সামনের ফুটপাথটি।

স্থান ও দরদাম

দেশীয় ফ্যাশন হাউজের টি-শার্টগুলোর দাম পড়বে ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট, বেইলি রোড, ধানমন্ডি-২৭, বনানী ১১ নম্বর রোডসহ ঢাকা নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো গড়ে উঠেছে।

বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে টি-শার্টের দাম পড়বে ২৫০ থেকে এক হাজার টাকা। আর নিউ মার্কেটের টি-শার্টগুলোর দাম পড়বে ১৬০ থেকে ৩৫০ টাকা। ফুটপাথের টি-শার্টগুলোর দাম পড়বে ৪০ থেকে ১২০ টাকা।

ছবি: লা রিভ, ইয়লো, রঙ, রূপকথা