সঙ্গীর সঙ্গে ঘুমের রুটিন না মিললে

যে কোনো যুগল একসঙ্গে থাকলেও কাজের কারণে দুজনের ঘুমের সময় আলাদা হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2022, 12:48 PM
Updated : 28 June 2022, 12:48 PM

যিনি রাতে কাজ করেন তাকে ঘুমাতে হবে দিনে। এই রুটিনে চলতে গিয়ে নিজের ঘুমের সমস্যা তো হবেই, পাশাপাশি ভুগতে হয় জীবনসঙ্গীকেও।

আবার এমনও হতে পারে কোনো বাহ্যিক কারণ নয়, অভ্যাসের কারণেই একজন খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন আর আরেকজন গভীর রাতে ঘুমাতে যান।

এই দুজন মানুষ যদি একই বিছানায় ঘুমায় তবে যিনি আগে ঘুমাচ্ছেন তার ঘুমের সমস্যা হবেই। 

দুজনের মধ্যে আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্লিপ প্র্যাকটিস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা, ‘ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট অ্যান্ড স্লিপ মেডিসিন স্পেশালিস্ট’ হলি মিলিং বলেন, “নিজেদের ভালোমন্দ বিষয়গুলো নিয়ে পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করার অভ্যাসটা একটা সম্পর্কের সব ধরনের সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি হতে পারে। নিজের মনের কথা একে অপরকে খোলামনে বলতে পারার পরিবেশ থাকাটা তাই খুবই জরুরি।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “একজনের ঘুমের অভ্যাসের কারণে অন্যজনের ঘুমের যদি সমস্যা হয় তবে সেটাও হবে আলোচনার বিষয়। ভাবতে হবে সপ্তাহে কয়েকদিন হলেও আলাদা ঘুমানো দুজনের নির্ভেজাল ঘুমের জন্য ভালো হবে কি-না। যে দম্পতি একই বিছানায় শান্তিতে ঘুমায় তাদের মধ্যে আবেগ ও ভালোবাসার বন্ধন খুব দৃঢ় হয়। তবে এক সঙ্গী যদি অপর সঙ্গীর ঘুম নষ্ট করে তবে একসঙ্গে ঘুমানো হতে পারে সম্পর্কে ফাঁটল ধরার কারণ।”

তাই কোনটা দুজনের জন্য এবং পরিশেষে দাম্পত্য জীবনের জন্য মঙ্গলজনক সেই উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

ঘনিষ্ঠতাকে প্রাধান্য দিন

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইনডিভিজ্যুয়াল অ্যান্ড রিলেশনশিপ কাউন্সিলর’ জেনিফার কোয়াস্কি বলেন, “স্বামী স্ত্রী এক বিছানায় মানে শুধু ঘুম যেমন নয় তেমনি শুধু শারীরিক সম্পর্কও নয়। একসঙ্গে শুয়ে দুজনার গল্প করা, খুনসুটি এই সামান্য বিষয়গুলো বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তি। আর যেকারণেই হোক, দুজন আলাদা ঘরে ঘুমালে এই ঘনিষ্ঠতা হারিয়ে যেতে পারে।”

যে করেই হোক সেটা হতে দেওয়া যাবে না। দুজনেরই যেদিন ছুটি সেদিন নিজেদের জন্য সময় রাখতে হবে। সেদিন কাজ, ঘুম সবকিছুর ওপর প্রাধান্য পাবে আপনার সঙ্গী। 

ঘর আলাদা করার আগে অন্য উপায় যাচাই করা

কোয়াস্কি বলেন, “ঘুমের সমস্যা সমাধানের প্রথম উপায় ঘর বা বিছানা আলাদা হওয়া উচিত নয়, সেটা হওয়া উচিত নিরুপায়ের উপায়। যে পরে ঘুমাবে তাকে সাবধান হতে হবে অপরজনের যাতে ঘুমের সমস্যা না হয়। যদি ঘরেই রাত জাগতে হয় তবে অন্য ঘরে সময় কাটাতে হবে এবং সবশেষে ঘুমাতে যাওয়া সকল প্রস্তুতি শেষ করে নিঃশব্দে সঙ্গীর সঙ্গে বিছানায় যেতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য উপায়ে কাজ না হলে বিছানা কিংবা ঘর আলাদা করতেই হবে। কারণ একরাত ভালো ঘুম না হলেই পরদিন স্বাভাবিক কাজ করতে সমস্যা দেখা দেয়। আর প্রতিনিয়ত ঘুমের অভাব রয়ে গেলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। আর এক সঙ্গী যদি অপর সঙ্গীকে ক্রমাগত তার জন্য দুষতে থাকে তবে সম্পর্কেও আসবে তিক্ততা।”

“তবে মনে রাখতে হবে, ঘর কিংবা বিছানা আলাদা হয়েছে শুধু শান্তিতে ঘুমানো জন্য, সম্পর্ক আছে আগের মতোই। তাই ওই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতাকে বজায় রাখতে দুজনকেই সচেষ্ট হতে হবে। সুযোগ থাকলেই একসঙ্গে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে,” বলেন কোয়াস্কি।

আরও পড়ুন