শারীরিক সম্পর্কও যখন ক্লান্তিকর

কর্মব্যস্ত একটা দিন পার করার পর, ঘরে ফিরে ঘুমকেই সবচাইতে আপন মনে হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2022, 08:36 AM
Updated : 27 June 2022, 08:57 AM

শারীরিক সম্পর্ক তখন অনেকেরই চাহিদার তালিকায় স্থান পায় না। তার মানে এই নয় যে, আপনাদের সম্পর্ক থেকে ঘনিষ্ঠতা হারিয়ে যাচ্ছে।

শিকাগো’র ‘প্লেজার প্রোডাক্ট’ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘আর্লি টু বেড’য়ের কর্ণধার ও ‘সেক্স এডুকেটর’ সিয়েরা ডেস্যাক বলেন, “শারীরিক, মানসিক, পরিস্থিতিগত অসংখ্য কারণে এমন মানুষের শারীরিক সম্পর্কের চাইতে ঘুম কিংবা বিশ্রামের প্রতি আগ্রহ বেশি হতে পারে।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “নতুন বাবা-মা হওয়া, কর্মজীবন আর ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য না থাকা, কোনো রোগের কারণে অবসাদগ্রস্ততা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ।”

ব্যাপারটা কালেভদ্রে হলে ভালো। তবে নিয়মিত হয়ে গেলেও ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অনেক দম্পতিই এমন একটা সময় পার করেন যখন তারা ঘুমের ঘাটতি মেটাতে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকেন।

ঘন ঘন শারীরিক সম্পর্ক হতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই

‘সেক্সুয়াল প্লেজার রিটেইলার’ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রোমেসেন্ট’য়ের ‘সেক্স মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড স্বনদস্বীকৃত ‘ইউরোলজিস্ট’ ও ‘সেক্স-মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ র‌্যাচেল রুবেন বলেন, “সপ্তাহে বা মাসে কতবার শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেই হবে এমন কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। দুজনার সম্মতিতে যত ইচ্ছা কম কিংবা যত ইচ্ছা বেশি হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দুজনার চাওয়া পাওয়ার ভারসাম্য বজায় রাখা।”

ডেস্যাক বলেন, “শারীরিক সম্পর্ককে ধরাবাঁধা রুটিনে ফেলে না রাখলেই বরং তৃপ্তির মাত্রা বেশি থাকে।”

মাত্রা নয়, মানে মনযোগ বাড়ান

শারীরিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ মার্লা রেনে স্টুয়ার্ট বলেন, “যৌনজীবনে তৃপ্ত হওয়ার প্রধান দিক হল শারীরিক সম্পর্ক থেকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাওয়া। কতবার সঙ্গম করালেন তা গুরুত্বপূর্ণ। দায়সারা সঙ্গম কখনই তৃপ্তির হয় না। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্কে জড়ালে তা সন্তুষ্টি দিতে পারে না।”

সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলা

হতে পারে আপনি কিংবা আপনার সঙ্গী আরও ঘন ঘন শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে চান। একপক্ষ সঙ্গম চায় কিন্তু অপরপক্ষ ক্লান্তির কারণে মন থেকে সায় পাচ্ছে না। আর সেকারণে অপরাধী মনে হচ্ছে।

এই সময়গুলোতে খোলামেলা আলাপ জরুরি বলে জানান ডা. রুবিন।

তিনি আরও বলেন, “নিজের পক্ষ থেকে আলাপ করতে হবে। অজুহাত বা অন্যকে দোষারোপ কখনই ভালো ফল বয়ে আনবে না। দুপক্ষ নিজের চাহিদার কথা খোলামেলাভাবে বললে পরিস্থিতি সহজেই পরিষ্কার হবে, সমাধান বেরিয়ে আসবে দ্রুত।” 

ঘনিষ্ঠতার সময় নির্ধারণ

ডা. রুবেন বলছেন, “স্বামী-স্ত্রী মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে রুটিন করে রাখাও কার্যকর ফলাফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কিছু দম্পতি। রুটিন মানে এই নয় একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে রাখা এবং সেই সময়ের মধ্যেই শারীরিক সম্পর্কে ঝাপিয়ে পড়া। শারীরিক সম্পর্কে তখনই জড়ানো উচিত যখন দুজনাই সঙ্গমের আকাঙ্ক্ষা অনুভব করছেন। সময়টা এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং দুজনে একটা ঘনিষ্ঠ সময় কাটানো গুরুত্বপূর্ণ। তা যদি সঙ্গম পর্যন্ত গড়ায় তো ভালো, না হলেও ক্ষতি নেই।”

হস্তমৈথুন

ডা. রুবেন বলেন, “দুজন মিলে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর সময় ও শক্তি যদি নাই পান তবে হস্তমৈথুন’য়ের আশ্রয় নিতে পারেন। এতে সঙ্গমের তৃপ্তি পাবেন, মিলবে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিও।”

ডেস্যাক বলেন, “দুজন একসঙ্গে হস্তমৈথুন করাও হতে পারে ভিন্নমাত্রার এক অভিজ্ঞতা। আর তাতে সময় আর শক্তি দুটোই কম লাগবে।”

ডেস্যাক বলেন, “শারীরিক সম্পর্ক মানেই যে সবসময় যৌনসঙ্গম তাও নয়। সঙ্গম ছাড়াও একে অপরের সঙ্গে নানাভাবে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া সম্ভব। একটা রাত হোক না শুধুই ‘ফোরপ্লে’।”

চিকিৎসকের পরামর্শ

প্রচণ্ড অবসাদ কিংবা মাসের পর মাস ক্লান্তির কারণে সঙ্গম বন্ধ থাকলে বিষয়টা তখন শঙ্কার।

কারণ তখন আপনার অবসাদের পেছনে কোনো দূরারোগ্য ব্যধি আছে কি-না সেই চিন্তা করাটা যৌক্তিক। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন