যেসব খাবার মিলিয়ে খেলে ওজন কমানোতে বাধা পড়বে

ওটসের সঙ্গে শুকনা ফল কিংবা জ্যাম দিয়ে টোস্ট খেলে ওজন কমানোর পরিকল্পনা মাঠে মারা যাবে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2022, 01:17 PM
Updated : 17 June 2022, 01:17 PM

ওজন কমানো সহজ কথা নয়। তবে সঠিক জীবনধারা, খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়ামের মাধ্যমের স্বাস্থকর ওজন ধরে রাখা সম্ভব।

আর ওজন কমানোর লক্ষ্যে থেকেও অনেকক্ষেত্রে সফল না হওয়ার কারণ থাকতে পারে ভুলভাবে খাবার গ্রহণ।

আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্র মতে, কিছু খাবার একসঙ্গে হজমে সমস্যা হয়। পাশাপাশি বাড়তে পারে ওজন।

এদিকে হেল্থলাইন ডটকম জানাচ্ছে, খাওয়ার ক্ষেত্রে দুই ধরনের খাবার মিশিয়ে খাওয়া ঠিক না। একটি হল- হজম করতে ভিন্ন ধরনের পাচক রসের প্রয়োজন পড়ে এমন খাবার। অন্যটি হল- হজম করতে একই রকম সময় লাগে না এরকম খাবার মেশানো।

এখন কথা হচ্ছে কোন খাবার একই সময়ে হজম হয় আর একই রকম পাচক রস দেহ ব্যবহার করে তা জানা সম্ভব না।

তবে বেশ কয়েকটি খাবার আছে যা অন্তত মিলিয়ে মিশিয়ে খেলে দেহের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

কলা ও দুধ

হজম প্রক্রিয়ার সুস্থ ধারা হারালে পাকস্থলীর ভেতরের আবরণ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি ক্যালোরির গ্রহণের অব্যবস্থাপনার কারণে বাড়তে পারে ওজন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দি আয়ুর্বেদা ইন্সটিটিউট’য়ের তথ্যানুসারে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই দুই খাবারই মিষ্টি এবং ঠাণ্ডা প্রকৃতির। এদের হজম হওয়ার প্রক্রিয়া ভিন্ন।

এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণার ফলাফল থেকে জানায়, দুধ-কলা মিশিয়ে খাওয়ার ফলে হজম প্রক্রিয়াতে দ্বিধা সৃষ্টি হয়। যা থেকে বিষাক্ততা, অ্যালার্জির পাশাপাশি দেহে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।

টোস্ট সঙ্গে জেলি

বহুদিনের পুরানো এই খাদ্য পদ্ধতি জনপ্রিয় হলেও এই সময়ে বলা হচ্ছে এই মিলিত খাবার গ্রহণে অনেকরকম প্রয়োজনীয় উপাদান শরীরে শোষিত হয়না।

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের চিকিৎসক লরেন মানাকার বলেন, “টোস্টের সঙ্গে জ্যাম মানে হচ্ছে কার্বে ওপর কার্ব। বরং জ্যামের পরিবর্তে বাদামের মাখন ব্যবহার করলে পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যকর চর্বি।”

প্রক্রিয়াজত খাবার খেলে কার্বোহাইড্রেইট গ্রহণের পরিমাণ বাড়ে। পাশাপাশি রক্তে হঠাৎ শর্করার (গ্লুকোজ) মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। কার্বের কারণে তো ওজন বাড়বেই। পাশাপাশি দেহ অতিরিক্ত গ্লুকোজ ভেঙে তৈরি করবে ফ্যাট বা চর্বি।

চিপস ও সালসা সস

সালসা সসে মাখিয়ে চিপস খেতে যতই আনন্দ জাগুক, নিউ ইয়র্কের নিউট্রিশন গ্রুপের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ লিসা মস্কোভিটজ বলেন, “আঁশ, প্রোটিন ও চর্বি- পুষ্টির এই তিন উপাদানের সঠিক সমন্বয় যেসব খাবারে থাকে না সেসব খাবার খেতে আমি পরামর্শ দেই না।”

চিপস ও সালসাতে শুধু লবণের পারিমাণই বেশি থাকে না, এগুলো খাওয়া হয়ে যায় বেশি। যা থেকে বাড়ে মেদ।

গ্রিল্ড চিজ ও টমেটো সুপ

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিষয়ক ও ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান ‘মেডিফেস্ট’য়ের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ জেনিফার ক্রিস্টম্যান বলেন, “অবশ্যই দুটি খাবার একসঙ্গে খেতে স্বর্গীয় অনুভূতি হয়। তবে বেশিরভাগ কৌটাজাত টমেটো সুপে থাকে অতিরিক্ত চিনি। কারণ এতে মেশানো হয় ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ। আর গ্রিল্ড চিজ মানে উচ্চমাত্রার চর্বি।”

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপের মতো উচ্চ মাত্রার শর্করা যুক্ত খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করা হয়ে যায়। যা থেকে ওজন বাড়া ছাড়াও দেখা দেয় নানান স্বাস্থ্য সমস্যা।

তাছাড়া গ্রিল্ড চিজ ও টমেটো সুপে থাকে অতিরিক্ত লবণ, যা শুধু ওজনই বাড়ায় না পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকিও ডেকে আনে।

ওটস ও শুকনা ফল

ওজন কমানো জন্য ওটস খাওয়ার কথা বলা হয়। সঙ্গে কোনো ফল।

তবে পু্ষ্টিবিদ মস্কোভিটজ বলেন, “ওটসের সঙ্গে ড্রায়েড ফ্রুট বা শুকনা ফল খেলে খুব কম পরিমাণে আঁশ পাওয়া যা। আর সেখানে প্রোটিন আর চর্বির পরিমাণ থাকে না বললেই চলে।”

তিনি আরও বলেন, “এই দুই খাবার মিশিয়ে খাওয়ার ফলে বাড়ায় রক্তের শর্করা, ইন্সুলিনের মাত্রা বাড়ে যা থেকে নির্গত হয় চর্বি সংগ্রহ করে রাখা হরমোন।”

তাই তিনি ওটসের সঙ্গে চর্বিহীন মাংস ও কম চর্বিযুক্ত খাবার মেশানোর পরামর্শ দেন। যেমন হতে পারে- দই, বাদাম, বীজজাতীয় খাবার বা মুরগির মাংস।

এর ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতি থাকবে। আর ওজন কমানোর লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া সহজ হবে।

আরও পড়ুন