মধু কিন্তু ‘ভেজ’ নয়

তাই ‘ভেজ’ বা উদ্ভিজ্জ খাবারে অভ্যস্ত হতে চাইলে মধুর বিকল্প খাবার খুঁজে নিতে পারেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2022, 01:48 PM
Updated : 18 May 2022, 01:48 PM

প্রাণিজ উৎস থেকে আসা খাবার যারা বাদ দিয়েছেন বা দিতে চাচ্ছেন তাদের জানা উচিত মধু একটি প্রাণিজ খাবার। কারণ মধু তৈরি করে মৌমাছি এবং তাদেরই খাবার এটি।

রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ের খাদ্য-বিষয়ক সম্পাদক ও পুষ্টিবিদ, সামান্থা লেফলার তার লেখা এক প্রতিবেদনে জানান, মধু থেকেই প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেইট, অ্যামিনো অ্যাসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদির যোগান পায় মৌমাছি।

মধু তৈরির প্রক্রিয়া

ফুল থেকে ‘নেকটার’ বা মধু সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে মৌমাছির মধু তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এই ‘নেকটার’ তারা ভিন্ন একটি পাকস্থলিতে রাখে, অর্থাৎ মৌমাছির দুই ধরনের পাকস্থলি থাকে একটি খাবারের জন্য একটি ‘নেকটার’ সংরক্ষণের জন্য।

এই পাকস্থলি পূর্ণ হয়ে গেলে তা মৌমাছির চাকে পৌঁছায়। সেখানে অন্যান্য মৌমাছি এই নেকটার চাবায় এবং আরেক মৌমাছিকে দেয়। এভাবেই ফুল থেকে সংগ্রহ করা ‘নেকটার’ পরিণত হয় মধুতে।

মধু তৈরি হয়ে যাওয়ার পর তা রাখা হয় চাকের মধ্যকার বিশেষ ‘হানিকম্ব সেল’য়ে। মধুকে আরও শুষ্ক ও আঠাল করতে মৌমাছি নিজেদের পাখা দিয়ে তাতে বাতাস দেয়।

সবশেষে মোমজাতীয় উপাদান দিয়ে ‘হানিকম্ব সেল’য়ে মধু বদ্ধ করে রাখা হয় যাতে তা পরিষ্কার থাকে।

এই সংরক্ষিত মধু শীতকালে খাবার হিসেবে ব্যবহার হবে যা বসন্ত আসা পর্যন্ত মৌমাছির বেঁচে থাকার উপায় হবে। এভাবেই চক্র চলতে থাকবে।

মধু তৈরির খামারগুলোতে অনেকসময় ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। যেমন- কিছু খামারী রানি মৌমাছির পাখা কেটে দেয়, যাতে সে তার দল নিয়ে উড়ে না পালায়।

আবার কিছু খামারী চাক থেকে মধু সরিয়ে তাতে অন্য মিষ্টি উপাদান যেমন- প্রচুর ফ্রুক্টোজ দেওয়া কর্ন সিরাপ দিয়ে দেন।

এতে মৌমাছি তার প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান হারায়। এসব কারণে অনেকে শাকাহারি মধু বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন। 

উদ্ভিজ্জ বিকল্প

তাই যারা ‘ভেগান’ হতে চাচ্ছেন তারা মধুর বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন অন্যান্য উদ্ভিজ্জ মিষ্টি তরল।

ম্যাপল সিরাপ: মধুর মতো আঠাল নয় এটি। তৈরি করা হয় ম্যাপল গাছের কষ থেকে। বেইকিং ছাড়া যে কোনো কাজে মধুর বিকল্প হিসেবে ম্যাপল সিরাপ ব্যবহার করা যাবে। ম্যাপল সিরাপের রং যত গাঢ় হয়, তার স্বাদ ততই ভালো হবে।

গুড় বা ঝোলাগুড়

তৈরি হয় আখের রস বা খেজুরের রস থেকে। বেইক করা খাবারে এটি ব্যবহার করা যায়।

খেজুরের সিরাপ ও পেস্ট

খেজুর পানিতে ফুটিয়ে, মিশিয়ে, ছেঁকে তৈরি হয় সিরাপ। আর খেজুর পেস্ট অনেকটা জ্যাম’য়ের মতো।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার হয়। ইজরায়েলিরা মুরগি ও ভেড়ার মাংসের বিভিন্ন রান্নার পদেও এগুলো ব্যবহার করে।

বেইক করা খাবারে খেজুরের এই দুই পদ বেশ ভালো মানানসই। ফলে মধুর বিকল্প হিসেবে দুটোই কার্যকর।

কোকোনাট নেকটার

অনেকটাই মধুর মতো এটি, ফলে যতটুকু মধু ব্যবহার করতে হয় কোনো খাবারে ঠিক ততটুকুই ‘কোকোনাট নেকটার’ ওই খাবারে যথেষ্ট।

নারিকেল গাছের ফুলের কষ থেকে এটি তৈরি হয়। এর মিষ্টি খুব তীব্র নয়, ফলে অনেক রান্নার পদে এটি ব্যবহার করা যায়।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন