যে কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত না, তারপরও সুস্থ মানুষেরও উচিত রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2022, 02:14 PM
Updated : 5 April 2022, 02:14 PM

যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ‘জনস হপকিনস মেডিসিন’য়ের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বিল ম্যাকইভয় বলেন, “হৃদরোগের ঝুঁকি সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে ‘টাইপ ওয়ান’ ও ‘টাইপ টু ডায়াবেটিস’য়ের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে। বলা যেতে পারে এটাই সবচাইতে ক্ষতিকর হৃদযন্ত্রের জন্য।”

ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি পরামর্শ দেন যে, রক্তে শর্করার মাত্রা কম ও সেই সঙ্গে কোলেস্টেরল আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে তা হৃদযন্ত্রের জন্য হবে সবচাইতে উপকারী।

ওয়াশিংটন’য়ের ‘ইনভিগোর মেডিকাল’য়ের ডা. লিঅ্যান পোস্টন একই প্রতিবেদনে বলেন, “রক্তে শর্করার মাত্রা খুব শক্ত বিধি নিষেধের মধ্যে রাখতে হয় শরীরকে। খুব বেশি হলে এটি রক্তনালীর ক্ষতি করবে। আবার খুব কম হলে মাথা হালকা হয়ে যাওয়া, জ্ঞান হারানো, বমি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।”

১৪০ এমজি/ডিএল’য়ের নিচে থাকলেই রক্তে শর্করার মাত্রাকে স্বাভাবিক ধরা হয়।

রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ধরে রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয় ‘ইট দিস’ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে। 

ব্লাড সুগার বা রক্তে শর্করার মাত্রা আসলে কী?

‘ডক্টর অফ কাইরোপ্র্যাকটিক’ এবং অ্যারিজোনা’তে অবস্থিত ‘কাইজেন প্রোগ্রেসিভ হেল্থ’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. স্টিভ রুবি বলেন, “রক্তে কতটুকু শর্করা মিশে আছে সেটাই হলো ‘ব্লাড গ্লুকোজ’। ‘গ্লুকোজ’ হল এক ধরনের শর্করা যা আসে খাবার থেকে। এটাই শরীরের কর্মশক্তির মুল উৎস।”

খাওয়ার পর রক্তে এই শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। কারণ যা আপনি খেয়েছেন তা পেটে ভেঙে শর্করায় পরিণত হয় এবং তা আপনার রক্তে মিশে যায়। আর সেখান থেকে শক্তির উৎস হিসেবে এটি ব্যবহার হয়।

স্বাস্থ্যের ওপর শর্করার প্রভাব

ডা রুবি বলেন, “সময়ের পরিক্রমায় রক্তে থাকা অতিরিক্ত শর্করা শরীরের ক্ষতি করে। সৃষ্টি করে হৃদরোগ, ‘স্ট্রোক’, নষ্ট করতে পারে বৃক্ত, এমনকি অন্ধও করে দিতে পারে। রক্তে শর্করা বেশি থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। এসময় আপনি প্রতিটি মুহূর্তে ক্লান্তি ও বদমেজাজি থাকবেন।”

খাদ্যাভ্যাস

ডা. রুবির মতে, “রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার মুলমন্ত্র হল খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখা। খাদ্যাভ্যাসে এমন খাবার থাকতে হবে যাতে শর্করা ও ‘কার্বোহাইড্রেইট’ কম। প্রচুর ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। আর প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে।”

ব্যায়াম

“আরেকটি পন্থা হল শরীরচর্চা। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ধরে রাখবে। সপ্তাহের পাঁচ দিন কমপক্ষে আধা ঘণ্টা করে ব্যায়াম করা উচিত।” পরামর্শ দেন ডা. রুবি।

নজর রাখা

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিয়মিত এর ওপর নজর রাখতে হবে। নিশ্চিত হতে তা আসলেই স্বাভাবিক মাত্রায় থাকছে কি-না। এজন্য প্রতিদিন একবার হলেও রক্তে শর্করার মাত্রা মাপতে হবে। এতে এর পরিমাপের একটা ধারাবাহিকতা পাবেন এবং সেই অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চায় পরিবর্তন আনতে পারবেন।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ

ডা. পোস্টন বলেন, “মানসিক চাপ সামলাতে শিখতে হবে। মানসিক চাপের কারণে নিঃসৃত হয় ‘কর্টিসল’ হরমোন যা ‘সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম’কে সক্রিয় করে তোলে। এই দুয়ে মিলে যকৃতের সক্রিয়তা বেড়ে সেখান থেকে শর্করা গিয়ে পৌঁছায় পেশিতে। যাতে বিপদ মোকাবিলায় কর্মশক্তি হিসেবে তা ব্যবহার করা যায়।”

আরও পড়ুন