সর্দির অবনতি ঘটায় যেসব অভ্যাস

সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হাওয়ার পর বিভিন্ন অভ্যাস এই অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2022, 03:11 PM
Updated : 21 March 2022, 03:12 PM

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং শিকাগো’য়ের ‘ইন্টারন্যাশনাল পেশেন্ট সার্ভিস প্রোগ্রাম অ্যাট অ্যান্ অ্যান্ড রবার্ট এইচ. লুরি চিলড্রেনস হসপিটাল’য়ের ‘মেডিকাল ডিরেক্টর’ টিনা কিউ. ট্যান ‘রিয়েল সিম্পল’ ওয়েবসাইট’য়ের এক প্রতিবেদনে বলেন, “সর্দি তিন থেকে পাঁচ দিন স্থায়ী হয়। তবে সর্দি ভালো হয়ে যাওয়ার পরও বুকে কফ জমে থাকতে পারে, নাক বন্ধ হয়ে থাকতে পারে। এর পেছনে কারণ হতে পারে জীবনযাত্রার বিভিন্ন বদভ্যাস।”

অসুস্থতার সময় ব্যায়ামের তীব্রতা না কমানো

অসুস্থ অবস্থায় ব্যায়াম আপনার মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে। তাই বলে অসুস্থ অবস্থায় শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে ব্যায়াম করাটা স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে।

ডা. ট্যান বলেন, “আপনার যদি নাক দিয়ে পানি পড়ে বা নাক বন্ধ থাকে তবে ব্যায়ামের মাত্রা মাঝারি বা কম রেখে সতর্কতার সঙ্গে ব্যায়াম করা উচিত। আর যদি জ্বর, কাশি, বুকে ব্যথা এবং পেট খারাপ থাকে তবে সেগুলো ভালো না হওয়া পর্যন্ত ব্যায়াম বন্ধ রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।”

অসুস্থতা অস্বীকার করা

অসুস্থ অবস্থায় নিজেকে অসুস্থ মনে না করে মনের জোরে স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার ধারণা শরীরের জন্য কখনই ভালো নয়। এসময় শরীরকে বিশ্রাম দিতে হবে, সেরে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।

এই অবস্থায় অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া ধীর হবে।

আর এসময় অন্যদের সঙ্গে মিশে স্বাভাবিক কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে থাকলে আশপাশের মানুষগুলোকেও রোগাক্রান্ত করে ফেলবেন। তাই বিশ্রাম নিন, সুস্থ হয়ে উঠুন দ্রুত।

ঘুমের অভাব

ঘুমকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেন না অনেকেই।

হাওয়াই’য়ের আলেয়া প্রদেশের ‘ফিজিশিয়ান’ লিন্ডা আনাগেওয়া বলেন, “অসুস্থ অবস্থায় ঘুম আরও বেশি জরুরি হয়ে যায়। ঘুম পর্যাপ্ত না হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এতে সর্দি সেরে উঠতে বেশি সময় লাগবে। তবে নাক বন্ধ থাকলে, বুকে কফ জমে থাকলে ঘুমাতে সমস্যা হবে। এজন্য ওষুধ খেতে হবে।”

মদ্যপান করা

অ্যালকোহল পান করলে জীবাণু ধ্বংস হবে এই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সব ধরনের অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘প্লাশকেয়ার’ হাসপাতালের চিকিৎসক রিচার্ড বারাস বলেন, “মদ্যপান আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দমিয়ে রাখে এবং শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে। ফলে রোগ সারতে সময় লাগে বেশি।”

মানসিক চাপ লাগাম ছাড়া

ডা. ট্যান বলেন, “ক্রমাগত মানসিক চাপ আর অসুস্থতা ডেকে আনবে শারীরিক বিপর্যয়। মানসিক চাপের কারণে শরীরে যে হরমোন নিঃসরণ হয় সেগুলো রোগ ও তা থেকে সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করতে পারে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কাজ করতে হয় বেশি। তাই অসুস্থ অবস্থায় বিশ্রামের মাঝেই থাকা উচিত।”

নাকের ড্রপের অত্যাধিক ব্যবহার

সর্দির সময়ে নাকের ড্রপ ব্যবহারের ফলে ভালো অনুভব হয়। আর এটি আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করবে।

ডা. আনাগেওয়া বলেন, “দুই দিনের বেশি সময় ধরে নাকের ড্রপ ব্যবহারের ফলে সমস্যা হতে পারে। তিন দিনের বেশি নাকের ড্রপ ব্যবহার করলে সেটাই আবার নাক বন্ধ হওয়ার কারণ হতে পারে।”

তরল খাবারের অপর্যাপ্ততা

অসুস্থ অবস্থায় শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। তাই এসময় পর্যাপ্ত পানি ও তরল পান খুবই জরুরি।। পানি, চা এবং সুপ ভালো কার্যকর বলে মনে করা হয়।

ডা. বারাস বলেন, “পানি, চা এবং সুপ এসময় শরীরকে আরাম দেবে। সর্দি লাগলে শরীর থেকে যা কিছু নিঃসৃত হয় সেগুলোকে পাতলা করে তরল খাবার।”

আরও পড়ুন-