রক্তের শর্করার মাত্রা কম রাখার পন্থা

সহজ ও সাধারণ কিছু অভ্যাস গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2022, 12:38 PM
Updated : 20 March 2022, 12:38 PM

ওষুধ গ্রহণের পাশাপাশি জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

খাবার পরে হাঁটার অভ্যাস

প্রাক ডায়াবেটিকস অথবা ডায়াবেটিস আছে এমন ব্যক্তিরা বরাবরই শারীরিকভাবে কার্যকর থাকার গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে থাকেন। অনেক গবেষণা থেকে জানা গেছে, পেশিকে কার্যকর এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই।

ডায়াবেটিস কেয়ার জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা থেকে জানা যায়, খাবার পরে কিছুক্ষণ হাঁটা বয়স্কদের গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। খাবার পরে ১৫ মিনিট হাঁটা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে যা দিনের অন্যান্য সময় পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাঁটার সমান কার্যকর।

চিনির বিকল্প

ডায়াবেটিকদের চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদেরা বরাবরই শূন্য চিনি বা জিরো-সুগার গ্রহণের পরামর্শ দেন। যদিও তা চিনি থেকে কম মিষ্টি ও তৃপ্তিকর।

বর্তমানে চিনির সমপরিমাণ মিষ্টি ও স্বাদ প্রদান করে এমন বেশ কিছু বিকল্প উপাদান কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো খুব সহজেই বেইক করা খাবার বা গরম খাবারের সঙ্গে মিশে যায়।

নাস্তায় ওটমিল খাওয়া

সব কার্বোহাইড্রেইট সমপরিমাণে রক্তে শর্করা বাড়ায় না। আঁশ-জাতীয় কার্বোহাইড্রেইট গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণে ভিন্নমাত্রার প্রভাব রাখে যা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেইটের তুলনায় উপকারী।

অনলাইন সাময়িকী ‘নিউট্রিয়েন্ট’য়ে প্রকাশিত গ্রিসের গবেষকদের করা গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে জানা যায়, দ্রবণীয় খাবারের দ্রবণীয় আঁশ রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

আর এক্ষেত্রে সকালের নাস্তায় ওটমিল খাওয়া দেহে দ্রবণীয় আঁশ এর মাত্রা বাড়ায়। সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে কার্যকর আঁশ বেটা-গ্লুকান যোগ করে।

তাই্‌ সুস্থ থাকতে, হজমক্রিয়া উন্নত করতে সকালের নাস্তায় ওটস খাওয়া উপকারী।

ঘুমের সময় নির্দিষ্ট করা

রাতে ঘুম ভালো হলে পরদিন সবকিছুই ভালো থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘দি সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ অনুযায়ী দৈনিক সাত ঘন্টা কম ঘুমানো ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং পরদিন ক্লান্ত অনুভূত হয়।

এছাড়াও কম ঘুমের কারনে অনিয়মিত খাদ্যাভাস যেমন- উচ্চ ক্যালোরি, উচ্চ শর্করা ধরনের খাবার ইত্যাদির চাহিদা বাড়ায়।

পানির বোতল কাছে রাখা

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেও কাজের ফাঁকে খাওয়া কার্বোহাইড্রেইট, শর্করা এবং ক্যালোরি গ্রহণ পরিমিত রাখতে হবে। তবে আর্দ্রতা রক্ষার্থে পানি পানের ক্ষেত্রে কোন সীমারেখা নেই। সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে এবং দেহ সুস্থ রাখে।

সম্প্রতি ছয়টি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে করে ‘মেটা-অ্যানালিসিস’ করে ইরানের ‘স্কুল অফ নিউট্রিশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ডায়েটেটিকস’য়ের গবেষকরা।

পাবমেড ডটগভ’য়ে প্রকাশিত এই গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, বেশি পরিমাণে পানি পান টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

তাই প্রচুর পানি পান করা উচিত এবং প্রয়োজনে এর সামান্য স্বাদ পরিবর্তন করে নেওয়া যেতে পারে।

মিষ্টি হিসেবে ডার্ক চকলেট খাওয়া

ডার্ক চকলেট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্লাভানল যৌগে ভরপুর। এটা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ইন্সুলিন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২০১৫ সালে ইরানের ‘তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’, ‘তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’, ‘ইরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’ ও ‘ইসলামিক আজাদ ইউনিভার্সিটি’র গবেষকদের করা এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে- এক আউন্স ডার্ক চকলেট প্রতিদিন খাওয়া কেবল ইন্সুলিন বা গ্লাইসেমিকের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে না বরং রক্তনালীর সংকোচন ও প্রসারণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।

তাই মিষ্টি খাবারের আগ্রহ জাগলে ডার্ক চকলেট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।

আরও পড়ুন