শুষ্ক মাথার ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষার উপায়

মাথার ত্বক শুষ্ক হলে চুলকাবেই। সঙ্গে দেখা দেবে খুশকি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2022, 05:17 AM
Updated : 6 March 2022, 05:17 AM

ত্বক ভালো রাখতে আর্দ্রতার গুরুত্ব সম্পর্কে সবাই কম বেশি জানেন। আর সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্রিম, মশ্চারাইজার ও অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করেন। তবে মাথার ত্বক ভালো রাখতে আদ্রর্তা রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেকেরই হয়ত সঠিক ধারণা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনাতে অবস্থিত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিকোলজি’র প্রতিষ্ঠাতা ট্রিকোলজিস্ট (মাথার ত্বক ও চুল বিশেষজ্ঞ) উইলিয়াম গনিটজ ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মাথার ত্বক শুষ্ক হলে এতে চুলকানি ও নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মাথার ত্বকের আদ্রর্তা রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।“

যেভাবে বুঝবেন মাথার ত্বক শুষ্ক

মাথার ত্বক শুষ্ক কিনা সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।

গনিটজ বলেন, “শুষ্ক মাথার ত্বক বলতে বোঝায় মাথার ত্বকে চামড়ার রুক্ষ ভাব যা খুশকির অন্যতম কারণ। এর ফলে ‘সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিস’ ও ‘সিরোসিস’ হয়ে থাকে।”

নানান কারণে মাথার ত্বক শুষ্ক হতে পারে। এর মধ্যে ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়া অন্যতম কারণ। এছাড়াও রয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন, ভিটামিন-ডি, ফেরিটিন ও পুষ্টির স্বল্পতা এবং মাথার ত্বক শুষ্ক করে ফেলে এমন শ্যাম্পু কন্ডিশনার ও রাসায়নিক পণ্যের ব্যবহার।

মাথার ত্বকের শুষ্কতা বা শুষ্ক মাথার ত্বক এমন একটি শব্দ যার অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। তাই এই সমস্যা দেখা দিলে যেকোন ট্রিকোলজিস্ট বা মাথার ত্বক ও চুল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে।

এ থেকে বোঝা যাবে খুশকি, সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিস অথবা সিরোসিস- এর মধ্যে কোন ধরনের সমস্যায় ভুগছেন।

এটাও মনে রাখা দরকার, মাথার ত্বকের শুষ্কতার চিকিৎসা চুলের ধরন বা গঠনের ওপর নির্ভর করে না বরং এতে কী ধরনের পণ্য ব্যবহার করা হয় তার ওপরে বেশি নির্ভর করে।

যেমন- স্টাইলিং এবং রাসায়নিক পণ্যের ব্যবহার মাথার ত্বকের ওপরের স্তরের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে মাথার ত্বকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।

এছাড়াও, মাথার ত্বকের শুষ্কতা ধরন এবং এতে ব্যবহৃত প্রসাধনীর বিরূপ প্রভাব একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ভাবে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর করার উপায়

মাথার ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা দেখা দিলে শুরুতেই চিকিৎসা নেওয়ার আগে ভেতর থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি জুগিয়ে অবস্থার উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করার পরামর্শ দেন, গনিটজ।

ভিটামিন ডি-থ্রি মাথার ত্বকের শুষ্কতা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারে। ফলে খুশকি, সিরোসিস ও অন্যান্য মাথার ত্বকের সমস্যা দূর হয়।

খাবার তালিকায় ভিটামিন ডি ধরনের উপাদান বৃদ্ধি করা খাবার- মাছ, ডিম, ভেষজ পুষ্টি উপাদান যেমন- মাশরুম ইত্যাদি খাওয়া উপকারী।

অন্যদিকে ফেরিটিন শরীরের লৌহ সঞ্চয় করে। ঝিনুক, মসুর ডাল, সাদা মটরশুঁটি, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি খাবার দেহে আয়রন বা লৌহের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক।

গানিটজের মতে, “সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত গোসল করা, সপ্তাহে দুতিনবার মাথার ত্বকে খাঁটি নারিকেল তেল বা ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করে শ্যাম্পু করা উপকারী।

তেল কুসুম গরম করে তা সরাসরি মাথার ত্বকে মালিশ করলে এবং তার শোষণ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

“নারিকেল এবং ক্যাস্টর বা রেড়ির তেলের রয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য যা প্রদাহ কমিয়ে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। মাথার ত্বকে আর্দ্র রক্ষার পাশাপাশি, পুষ্টি যোগায়। মাথার ত্বকের প্রয়োজনীয় ‘ফ্যাট’গুলোকে জোরদার করে যা শেষ পর্যন্ত আর্দ্রতার একটি স্তর তৈরি করে।” বলেন গনিটজ।

এসব পরিচর্যা কেবল মাথার ত্বককে ভালো রাখে না বরং চুল ভালো রাখতেও সহায়তা করে।

“মাথার ত্বক সুস্থ থাকলে সিবাম নিয়ন্ত্রণে থাকে ও চুল গজায়। বাহ্যিক অনুপ্রবেশকারী উপাদান থেকে চুলের ফলিকলকে সুরক্ষিত রাখে। প্রদাহ কমে। এতে চুল স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়, চকচকে হয় এবং স্বাস্থ্যও ভালো থাকে বলে জানান, গনিটজ।

আরও পড়ুন