কাজের সরঞ্জাম হোক স্বাস্থ্যবান্ধব

কাজের সময় সঠিকভাবে না বসলে ঘটতে পারে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2022, 09:47 AM
Updated : 18 Feb 2022, 09:47 AM

কর্মজীবনে প্রযুক্তির কল্যাণে বেশিরভাগ কাজই কম্পিউটারের সামনে বসে কাটে অনেকটা সময়। আর সেখান থেকেই বাঁধে স্বাস্থ্যগত নানান বিপত্তি।

ক্রমেই তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে কাজের উপরও।

তবে একটু সময় নিয়ে চিন্তা করে কাজ করলেই কিন্তু সেই বিপত্তিগুলো এড়ানো যায়। এজন্য খুব বেশি কষ্ট নেই, শুধু সময় নিয়ে বের বের করতে হবে কোন পদ্ধতিটা আপনার জন্য কার্যকর।

সঠিক চেয়ার

যারা ‘ডেস্ক জব’ করেন তাদরে কর্ম ঘণ্টার প্রায় পুরো সময়টাই কাটে চেয়ারে বসে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফিজিকাল থেরাপিস্ট’ এবং ‘এলওয়াইটি ইয়োগা মেথড’য়ের প্রতিষ্ঠাতা লারা হেইম্যান রিয়েল সিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “এমন একটি চেয়ার বেছে নিতে হবে যা মেরুদণ্ডের নিচের অংশ ‘লাম্বার স্পাইন’কে ‘সাপোর্ট’ দেয়। এতে মেরুদণ্ড স্বাভাবিক আকৃতিতে থাকবে, সামনে বা পেছন দিকে বাঁকা হয়ে থাকবে না।”

“পাশাপাশি এভাবে বসলে আপনার মাথা ও ঘাড় সমান্তরালে থাকতে হবে। চেয়ারের বসার জায়গাটার উচ্চতা এমন হতে হবে যাতে বসার পর দুই পায়ের পাতা মাটিতে রাখা যায় আর হাঁটু থাকে নিতম্ব বরাবর। এতে পা ও মেরুদণ্ড ‘সাপোর্ট’ পাবে। এভাবে বসলে শরীর কয়েকটি ৯০ ডিগ্রি কোন তৈরি হবে।”

তিনি আরও বলেন, “একটি ‘আর্গোনমিকালি ডিজাইনড’ চেয়ারের আকৃতি এমন হয় যে তাতে বসলে শরীর আরাম পায়, শরীরের ‘পশ্চার’ ভালো থাকে, কোনো পেশি কিংবা হাড়ের ওপর ক্রমাগত চাপ পড়ে না।”

“এখন চেয়ার আপনার শরীরের মাপের সঙ্গে নাও মিলতে পারে। সেক্ষেত্রে চেয়ার বদলের খরচে না গিয়ে পায়ের নিচে পিঁড়ি নিতে পারেন। এতে চেয়ার উঁচু হলেও হাঁটু ও নিতম্ব সমান্তরালে রাখা যাবে। আবার চেয়ারের পেছনে ‘লাম্বার স্পাইন সাপোর্ট’ যদি না থাকে হবে কুশন ব্যবহার করতে পারেন। এই কুশন খুব বেশি নরম হওয়া চলবে না।”

টেবিলের উচ্চতা

চেয়ারের পাশাপাশি টেবিলের উচ্চতার শরীরের মাপের সঙ্গে মানানসই হওয়া জরুরি। টেবিলের নিচে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার পরও সেখান পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে যাতে আরাম করে পা রাখা যায় এবং নড়াচড়া করা যায় প্রয়োজন মাফিক। যদি নতুন টেবিল কেনেন তবে ‘অ্যাডজাস্টেবল ফিচার’ আছে বা টেবিলের পায়া ছোট বড় করা যায় এমন টেবিল কিনতে পারলে ভালো হয়।

যদি তা না থাকে তবে টেবিলের ওপর অনেকগুলো বই কিংবা বাক্স রেখে তার ওপর মনিটর বা ল্যাপটপ রাখা যেতে পারে।

ল্যাপটপ কিংবা মনিটরের উচ্চতা

হেইম্যান বলেন, “মনিটর বা ল্যাপটপ যা কিছুর দিকে চেয়ারে বসে লম্বা সময় তাকিয়ে থাকতে হবে সেটার উচ্চতা হওয়া উচিত চোখ বরাবর বা সামান্য নিচে। এতে করে ‘টেক নেক’ নামক সমস্যা থেকে নিস্তার পাবেন।

আবার ‘কিবোর্ড’ আর ‘মাউস’ যেহেতু ব্যবহার করবেন, তাই হাতের কব্জির অবস্থান যাতে আরামদায়ক হয় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। কাজ করার সময় হাতে কনুই আর কব্জি যেন সমান্তরালে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কিবোর্ডটা সামান্য হাতের দিকে ঝুঁকে থাকলে লম্বা সময় কাজ করার ক্ষেত্রে আরাম পাবেন। তারের কারণে সমস্যা হলে তারবিহিন মাউস কিবোর্ড ব্যবহার করতে হবে।

বিরতি নিন

সব পরামর্শের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপুর্ণ পরামর্শ এটাই। উপরের সবগুলো পরামর্শ সঠিকভাবে মেনে চলা সম্ভব হলেও বিরতি নেওয়ার গুরুত্ব কমেনা  একবিন্দুও। কারণ ঘণ্টার পর ঘণ্টা একইভাবে বসে থাকলে শরীরের ক্ষতি হবেই হবে, তাতে সেই বসার ধরন যতই ‘আরগোনমিক’ হোক না কেনো।

এক ঘণ্টা কাজ করার সময় অন্তত ১০ মিনিট হাঁটুন, হালকা ‘স্ট্রেচিং’ করে নিতে পারেন সুযোগ থাকলে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন