কফি ছাড়াও সজাগ থাকার পন্থা

মন ফুরফুরে রাখতে কিংবা অবসাদ কাটাতে কফি পান করা ছাড়াও অনেক উপায় রয়েছে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2022, 06:56 AM
Updated : 17 Jan 2022, 06:56 AM

কাজের ফাঁকে মন চাঙ্গা রাখতে কফি জগত বিখ্যাত। তবে অতিরিক্ত কফি পান অনিদ্রা বাড়ানোর পাশাপাশি নানান স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।

স্টার ইন্সাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে কফি ছাড়াও সজাগ থাকার কয়েকটি উপায় এখানে দেওয়া হল।

যাদের জীবনযাত্রা বেশ ব্যস্ত তাদের সাধারণভাবেই ঘুমের ঘাটতি থেকে যায়। ফলে দিনে কাজের মধ্য চাঙ্গা থাকতে কফির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়।

এর যেমন উপকারী দিক রয়েছে। তেমন রয়েছে অপকারী দিক।

কয়েকটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, দিনে এক থেকে তিন কাপ কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেমন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কফি অনেকাংশে ভূমিকা রাখে।

ঝুঁকি

যদিও গবেষণাগুলোতে অতিরিক্ত গরম কফি পানের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। অতিরিক্ত কফি পান রক্তচাপ বাড়ায়, অনিদ্রা এমনকি উদ্বেগ ও হতাশার মত সমস্যা সৃষ্টি করে।

তাই নিজেকে চাঙ্গা রাখতে কফির বিকল্প হিসেবে অন্যান্য উপাদান নির্বাচন করা যেতে পারে।

খাবার: খাদ্যাভ্যাস থেকে ক্যাফেইনের পরিমাণ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর উপাদান যোগ করা মন ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।

অতিরিক্ত খাওয়া: একবারে বসেই অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া উচিত। খাবারের পরে ক্লান্তি অনুভব করা স্বাভাবিক। তবে বেশি খাওয়ার পরে ঘুম পেলে তা কাটাতে এক কাপ কফি পান চমৎকার কাজ করে।

অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ: ভাত বা পাস্তার মতো অতিরিক্ত শর্করা ও কার্বোহাইড্রেইট ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। দিনে পর্যাপ্ত প্রোটিন না খাওয়া দুর্বলতার প্রাথমিক কারণ।

আর্দ্র থাকা: দিনে বার বার কফি পান না করে পানি পানে অভ্যস্ত হওয়া জরুরি। আর্দ্র থাকা কর্মশক্তি বাড়ায় এবং মন ভালো রাখে।

এছাড়াও পানি পানের রয়েছে নানামুখি উপকারিতা। পানি শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সচল রাখে। দেহের বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়। ফলে হাঁটা চলার পরিমাণও বাড়ে।

ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা: ঘরের সঠিক তাপমাত্রা ও আবহাওয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকতে সহায়তা করে। এছাড়াও ঘুম ভালো হতে এর অবদান রয়েছে।

উষ্ণতা: ঘরের তাপমাত্রা খুব বেশি হলে ঘুমভাব কাটাতে কফিই ভরসা। বাড়তি উষ্ণতা নির্জীবভাব আনে এবং কাজের অনিহা বাড়ায়। 

গান শোনা: মোবাইল ফোনে পছন্দের গান রেখে দেওয়া এবং সময় কাটাতে ‘হেডফোনের’ সাহায্যে তা শোনা মন ভালো রাখতে সহায়তা করে। 

শব্দের মাত্রা: গান শোনার ক্ষেত্রে এর শব্দের মাত্রার প্রতি সতর্ক থাকা উচিত। উচ্চ শব্দে গান শোনা কানের ক্ষতি করে। তাই নিজের সহনীয় মাত্রায় শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। 

বিকল্প পানীয়

মন ভালো রাখতে উপরের এসব কাজ করার পাশাপাশি বিকল্প কিছু খাবার খাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে-

গ্রিন টি: কেবল শরীরের জন্য নয় এটা মনের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। গ্রিন টি চর্বি কাটায়, স্বাস্থ্য ভালো রাখে, মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

চুইং গাম: কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, চুইং গাম মনকে সচল রাখে। তাই মন ভালো রাখতে ও দাঁতের ক্ষতি এড়াতে চিনি ছাড়া চুইং গাম খাওয়া উপকারী।

কম্পিটার বা ‘স্ক্রিন টাইম’: কম্পিউটারে কাজ করার সময় ‘কফি বিরতি নেওয়া’ শুনতে বেশ ভালো শোনায়। তবে নিজের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে কম্পিউটারে কাজ করার সময় দশ থেকে ১৫ মিনিট বিরতি নেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়াও যদি গরম কিছু খেতেই মন চায় তাহলে গ্রিন টি পান করা যেতে পারে।    

অফলাইনে থাকা: রাতে ঘুমানোর আগে কফি না খাওয়াই ভালো। রাতে অফিসের কাজের প্রয়োজন হলে মুঠোফোনের পরিবর্তে কমিউটার ব্যবহার করা যেতে পারে এবং সকল প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অফলাইনে যাওয়া উপকারী।  

কোনো কিছুই কাজ না করলে

কফি পান বাদ দেওয়ার পরেও যদি চরম মাত্রায় অনিদ্রায় ভুগতে হয়, তবে উপরের সকল পদ্ধতি অনুসরণ করার পরেও কাজে না দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। আর তাদের দেওয়া স্বাস্থ্যকর বিকল্প উপায় গ্রহণ করে উপকার পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন