গিজারের আদ্যপান্ত

বিদ্যুত খরচের কথা চিন্তা করে অনেকেই গিজার ব্যবহারের চিন্তা বাদ দেন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2021, 06:06 AM
Updated : 9 Dec 2021, 03:05 PM

তবে শীতের সময় গরম পানি করার ঝামেলা কমাতে পারে গিজার।

তাছাড়া বাড়িতে বৃদ্ধ কিংবা শিশু থাকলে গরম পানির চাহিদাও বেড়ে যায়। আর তা হাঁড়িতে গরম করে সামাল দেওয়া প্রায় সময় ঝামেলাকর।

বিদ্যুত খরচের কথা চিন্তা করে গিজার ব্যবহারের বিষয়ে পিছিয়ে গেলেও বাজার ঘুরে দেখা গেল খরচটা খুব বেশিও নয়।

গিজার’য়ের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ‘টিয়েরা ইন্টারন্যাশনাল’য়ের কর্ণধার মাইনুল ইসলাম খানের সঙ্গে।

প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন ভবনে পানি গরম করার যন্ত্র বসানোর পাশাপাশি ফেইসবুকের মাধ্যমেও ‘গিজার’ সরবরাহ করেন তারা।

মাইনুল ইসলাম বলেন, “গিজার’ মূলত হয় দুই পদের। ‘ইন্সট্যান্ট টাইপ’ আর ‘ট্যাংক টাইপ’।”

‘ইন্সট্যান্ট টাইপ’ গরম পানির যন্ত্রটি আসলে একটি কল। এর সঙ্গে পানি গরম করার ছোট একটি যন্ত্র বসানো থাকে। বাড়ির পানির লাইন থেকে আসা ঠাণ্ডা পানি ওই যন্ত্র হয়ে কল দিয়ে বাইরে আসবে। আর যন্ত্রটি চালু থাকলে তাৎক্ষণিক পানি গরম হবে।

এক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হল শুধু ওই কলটি থেকেই গরম পানি পাওয়া যাবে।

“ট্যাংক টাইপ গিজার’ হল একটি আলাদা পানির ‘ট্যাংক’ যেখানে জমে থাকা পানি ‘হিটার’য়ের মাধ্যমে গরম হবে। সেই গরম পানির বাড়ির যেকোনো কলেই আনা সম্ভব।

বাসাবাড়িতে যে ‘ট্যাংক টাইপ গিজার’গুলো সাধারণত ব্যবহার হয় সেগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা হয় ৩০, ৪৫, ৬৭ কিংবা ৯০ লিটার। এর চাইতেও বড় গিজার হয়। তবে সেগুলো ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রেড’ ফলে দাম বেশি।

৩০ থেকে ৯০ লিটারের ‘গিজার’গুলোর দাম ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। ধারণ ক্ষমতা যাই হোক না কেনো এতে থাকা ‘হিটার’ ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই ‘ট্যাংক’য়ের পুরো পানি গরম করতে সক্ষম।

এই ‘গিজার’গুলোতে পানির তাপমাত্রা পরিমাপের কোনো ‘সেন্সর’ থাকে না এবং তাতে সেন্সর আলাদাভাবে বসানোও সম্ভব না। তাই কতক্ষণ চালানো হয়েছে তার হিসাবে রেখে কিংবা পানি গরম হয়ে গেলে আপনাকেই তা খেয়াল করে বন্ধ করতে হবে।

অন্যথায় পানি অতিরিক্ত গরম হয়ে দুর্ঘটনা ঘটবে, আর বিদ্যুত খরচ তো বাড়বেই।

তবে যদি ক্রমাগত পানি ব্যবহার হতে থাকে তবে লম্বা সময়ও চালানো সম্ভব, খেয়াল রাখতে হবে গরম পানি জমা থাকা অবস্থায় ‘গিজার’টি যেন চলতে না থাকে।

আর এই মাথাব্যথা একেবারেই নিতে না চাইলে কিছু বেশি টাকা খরচ করে ‘বিল্ট ইন সেন্সর’ আছে এমন ‘গিজার’ কিনতে হবে। যা পানি নির্দিষ্ট মাত্রায় গরম হওয়ার পর গিজারটি স্বনিয়ন্ত্রিত ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।

‘গিজার’ বসানোর ব্যাপারে মাইনুল ইসলাম বলেন, “বাড়ির পানির লাইনে যদি ইতোমধ্যেই গরম পানি ও ঠাণ্ডা পানির জন্য পৃথক লাইন থাকে তবে ‘গিজার’ বসানোর কাজটি বেশি সহজ, খরচও বেশি নয়।”

মূল যন্ত্রটি ছাড়া আরও কিছু যন্ত্রপাতি বসাতে হয়। যার খরচ প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। আর মিস্ত্রির কাজের মজুরি প্রায় ৫শ’ টাকা।

সাধারণত বাড়ির শৌচাগারের ওপরে থাকা ‘ফলস’ ছাদে ট্যাংক আর অন্যান্য যন্ত্রপাতি বসানো হয়। ‘ফলস’ ছাদ না থাকলে শৌচাগারের ভেতরে কিংবা অন্য কোনো সুবিধাজনক স্থানেও তা বসানো সম্ভব।

তবে গরম পানির জন্য পৃথক লাইন না থাকলে নতুন করে লাইন করতে হবে। সেক্ষেত্রে খরচটা বাড়বে যা নির্ভর করবে কতটুকু পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম প্রয়োজন হবে তার ওপর।

গরম পানির যন্ত্রের বাজারে পরিচিত নামের মধ্যে আছে শামিম, ভিশন, মেলানো, ওয়ালটন ইত্যাদি।

বিদ্যুত খরচের দিক থেকে এই ‘গিজার’গুলো ব্যবহার করলে মাসিক খরচ প্রায় ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা বাড়তে পারে।

এছাড়া আরএফএল’য়ের আছে ‘রিমোট কন্ট্রোলড গিজার’। যে কেনো স্যানিটারি দোকানে সব ধরনের গিজার দেখে শুনে দামদর করে কেনা যায়।