সম্পর্কের শুরুতে শুভ পূর্বাভাস

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের মন সাধারণত যেকোনো বিষয়ের নেতিবাচক দিকের প্রতিই বেশি মনযোগী হয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2021, 02:57 PM
Updated : 7 Dec 2021, 02:57 PM

তবে ইতিবাচক দিকগুলোও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

একটা সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায়ে অপরপক্ষের শুধু নেতিবাচক কিংবা সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে ইতিবাচকের দিকে নজর দিলে সেই সম্পর্কটা মধুর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ লওরেল হাউস বলেন, “সম্পর্কে কোনটা ইতিবাচক আর কোনটা নেতিবাচক সেই বিশ্লেষণে যাওয়ার আগে একটা সম্পর্কে অপরপক্ষের কাছ আপনার চাহিদা আর প্রয়োজনীয়তাগুলো নিশ্চিত হতে হবে।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “চাহিদা আর প্রয়োজনীয়তা কিন্তু এক নয়। কারণ প্রয়োজনীয় দিকগুলো না থাকলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা মুশকিল। আপনার সকল চাহিদা একজন মানুষ পূরণ করতে পারবে না। আর তার জন্য সম্পর্ক ভাঙা মোটেই যুক্ত সঙ্গত নয়।”

ভালো দিকগুলো কী?

এই প্রতিবেদনে লওরেল হাউস বলেন, “সম্পর্কে নিজের চাওয়াগুলো চিহ্নিত করার পর সাধারণ ভালো দিকগুলো বিবেচনা করতে হবে। এই ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, যার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার কথা ভাবছেন তিনি নিরাপদ এবং সামনে এগোনো যায়।”

“ওই মানুষটির সাধারণ কিছু ভালো গুণ থাকে এটাও বুঝে নিতে পারবেন যে তার প্রতি আপনি আগ্রহী কি-না। যতই তার ভালো দিকগুলো আবিষ্কার করবেন ততই তার সঙ্গে সম্পর্কে গড়ার আগ্রহ তীব্র হবে।”

“এটাও ঠিক যে একজন ব্যক্তির কাছে আরেক ব্যক্তির যে গুণটা ভালো অন্যজনের কাছে তা মন্দ হতেই পারে। আর সেজন্যই নিজের পছন্দটা সম্পর্কে আগে খতিয়ে দেখতে হবে।”

সাধারণ ভালো দিক

চোখে চোখ রাখা: যুক্তরাষ্ট্রের সনদস্বীকৃত ‘সেক্স থেরাপিস্ট’ এবং ‘ম্যারেজ থেরাপিস্ট’ জ্যাকলিন মেন্ডেজ (এলএমএফটি) বলেন, “এমন নয় যে কোনো ব্যক্তি যদি চোখে চোখ না রাখে তবে তার সঙ্গে সম্পর্কে গড়াই যাবে না। তবে চোখে চোখ রাখার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি আগ্রহটা বোঝানো যায়। এর মাধ্যমে এটাও বোঝানো যায় যে ওই ব্যক্তি আশপাশের কোনো কিছুতে নয় শুধু আপনার প্রতিই মনযোগী, আর আপনিও তাই।”

‘না’কে সম্মান জানানো

মেন্ডেজ বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। কোনো বিষয়ে আপনি না বলেছেন তো সেটা না ই, সেখানে কোনো কৈফিয়ত থাকবে না। কোনো অনুরোধ থাকবে না।”

যেমন- সারাদিন কাজ করে আসার পর যেই মানুষটার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছেন সেই আপনাকে দেখা করতে বলছে। কিন্তু আপনি অত্যন্ত ক্লান্ত। এমতাবস্থায় আপনি যদি দেখা করবো না বলেন তো অপরপক্ষ তা বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নেবে, আপনার ক্লান্তিটা বুঝবে। তবে তা না করে যদি দেখা করার জন্য অনুরোধ করে তবে সেটা ভালো দিক নয়।

আপনার চাহিদাও জানতে চায়

সম্পর্কে শুধু একপক্ষেরই চাওয়া থাকবে তা নয়। তাই সম্ভাব্য সঙ্গী যদি আপনার চাহিদাগুলো সম্পর্কে জানতে চায় তবে তা অবশ্যই ভালো দিক।

তবে সেই আলোচনাগুলো যদি কেউ এড়িয়ে যেতে চায় তবেই বিপত্তি। 

নিজেকে বোঝে

যে ব্যক্তি নিজেকে জানে সে অন্যদের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের সময় সত্যনিষ্ঠ হয়। নিজের চাহিদাগুলো নিয়ে আলাপ করার ক্ষেত্রেও তারা সৎ থাকেন। তাই এমন বৈশিষ্ট্য একজন ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে ভালো দিক।  

এখন আপনি কীভাবে বুঝবেন যে ওই মানুষটা নিজেকে জানে কি-না।

হাউস বলছেন, “বিষয়টা বোঝার একটা উপায় হল একজন নিজের যত্ন কতটুকু নিতে পারে সেটা যাচাই করা। হতে পারে সে নিয়মিত শরীরচর্চা করে, কেউ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলে কিংবা সবার ওপরে নিজেকে প্রাধান্য দেয়। যেটাই হোক না কেনো, এ থেকে বোঝা যায় এই মানুষগুলো নিজেকে একাই সামলাতে জানেন। আর একটা সম্পর্ক গড়ার প্রাথমিক পর্যায়ে এটা বেশ ভালো লক্ষণ।

চোখের আড়াল হলেও মনে আড়াল করে না

মেন্ডেজ বলেন, “সম্পর্কের শুরুর দিকটায় দুজন মানুষ একসঙ্গে অনেক সময় কাটাবে এটা যেমন স্বাভাবিক, একটা পর্যায়ে তা কমে আসবে এটাও তেমন স্বাভাবিক।”

তবে শুরুতে অনেকসময় একসঙ্গে কাটালেও তা সবসময় তো আর হবে না। যে সময়টায় আপনারা একসঙ্গে নেই কিন্তু দূরে থাকলেও সম্ভাব্য সঙ্গী যদি আপনার খোঁজ নেয় নিয়মিত তবে সেটাও একটা বড় ধরনের ভালো দিক।

“এ থেকে বোঝা যায় ওই ব্যক্তি আপনাকে একজন মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করেন এবং সেটা আপনি তার সঙ্গে না থাকলেও।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আপনিও আছেন

মাত্র কদিনের পরিচয়েই কেউ আপনাকে নিয়ে বড় কোনো পরিকল্পনা করে বসবে এমনটা ভেবে নেওয়া বোকামি। তবে প্রতিটি মানুষ তার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরিকল্পনা সাজায়।

আর কেউ যদি তার সেই পরিকল্পনায় আপনাকে অন্তর্ভূক্ত রাখে তার মানে সেই ব্যক্তিটি আপনার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের কথা ভাবছে।

সম্পর্কটাকে সামনে এগিয়ে নিতে যেতে চাইছে। আর নিঃসন্দেহে এটা শুভ লক্ষণ।

আরও পড়ুন