যে ধরনের তেল হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো

একেক তেল রান্নায় আনে একেক রকম স্বাদ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 08:27 AM
Updated : 15 Nov 2021, 08:27 AM

নারিকেল, সরিষা, অ্যাভোকাডো, জলপাই, সূর্যমুখী, ‘ক্যানোলা’ ইত্যাদি বিভিন্ন উৎস থেকে আসা তেল আজকাল রন্ধনপ্রণালীর অংশ হয়েছে।

তবে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কোন তেলটি ভালো?

এই প্রশ্নের আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর দিয়েছে ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ)’। সঙ্গে জানিয়েছে হৃদযন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে এমন ১০টি দিক সম্পর্কে।

এই সংস্থার মতে, তরল ‘নন-ট্রপিকাল’ উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা তেল যেমন- জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল এবং ‘সানফ্লাওয়ার অয়েল’ বা সূর্যমুখীর তেল হৃদযন্ত্রের জন্য হবে সবচাইতে উপকারী।

পুষ্টিবিদ লিসা মস্কোভিচ হলেন নিউ ইয়র্ক নিউট্রিশন গ্রুপ’য়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ‘দ্য কোর থ্রি হেলদি ইটিং প্ল্যান’ বইটির রচয়িতা।

তিনি বলেন, “নারিকেল তেল, পাম অয়েল ইত্যাদি ‘ট্রপিকাল’ তেল হৃদযন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টাকে বিবেচনায় আনলে মোটেই ভালো পছন্দ নয়। কারণ বহুল ব্যবহৃত এই তেলগুলোতে থাকা চর্বিতে থাকে অতিমাত্রায় ‘প্রো-ইনফ্লামাটরি স্যাচুরেইটেড ফ্যাট। মাত্রাতিরিক্ত ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ শরীরে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল ‘এলডিএল’য়ের মাত্রা বাড়ায়। আর সেখান থেকেই বাড়ে হৃদরোগ এবং ‘স্ট্রোক’য়ের ঝুঁকি।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মস্কোভিচ আরও বলেন, “অলিভ অয়েল’, ‘সানফ্লাওয়ার অয়েল’ ভালো বলা মানেই এই নয় যে, নারিকেল তেল কিংবা ‘ক্যানোলা অয়েল’ ক্ষতিকর। কোন তেলে কতটা ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ সেটাই মুখ্য বিষয়।”

আর সেই মাত্রা জানতে চাইতে তেলের বোতলের গায়ে লেখা ‘নিউট্রিশনাল ফ্যাক্টস’ পড়লেই জানা যায়। যে তেল কক্ষ তাপমাত্রায় যত বেশি জমে যায় তাতে ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’য়ের মাত্রা ততই বেশি।

অলিভ অয়েলের স্বাস্থ্যগুণ

এই তেলে উচ্চমাত্রায় মেলে ‘মনো-আনস্যাচুরেইটেড ফ্যাটি অ্যাসিড’। এই স্বাস্থ্যকর চর্বি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় বলে দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৪ সালে ৬৩,৮৬৭ জন নারী আর ৩৫,৫১২ জন পুরুষকে নিয়ে এবিষয়ে একটি গবেষণা চালানো হয়। এই অংশগ্রহণকারীদের হৃদরোগ, ক্যান্সার ইত্যাদি কোনো দূরারোগ্য ব্যধি কখনই ছিল না।

গবেষণার শেষে দেখা যায়, যারা দিনে আধা টেবিল-চামচ ‘অলিভ অয়েল’ গ্রহণ করেছেন তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমেছে ১৫ শতাংশ। পাশাপাশি ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’য়ের ঝুঁকি কমেছে ২১ শতাংশ।

মস্কোভিচ বলেন, “হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী তো বটেই, ‘এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল’য়ের আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণাগুণ। দৈনন্দিন বিভিন্ন বদভ্যাস, মানসিক চাপ থেকে প্রদাহের যে আশঙ্কা দেখা দেয় সেগুলো থেকে সুরক্ষা দেয় ওই ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’। প্রদাহে জর্জরিত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হজমশক্তি, হরমোনের ভারসাম্য, বিপাকক্রিয়া সবকিছুই দুর্বল হয়ে পড়ে।”

সূর্যমূখী তেলের গুণাগুণ

মস্কোভিড বলেন, “ভিটামিন ই’য়ের আদর্শ উৎস এই তেল। যা কাজ করে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে।”

এই তেলে আরও থাকে ‘ওমেগা-সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহনাশক। তবে এর সঙ্গে ভারসম্য বজায় রেখে খেতে হবে ‘ওমেগা থ্রি’ আছে এমন খাবার। যেমন- স্যামন মাছ, টুনা মাছ, কাঠবাদাম, ‘ফ্লাক্সসিড’ ইত্যাদি।

আরও পড়ুন