বিমান ভ্রমণে যা পরা উচিত নয়

‘মেটাল ডিটেক্টর’য়ে আটকে পড়ার চাইতে নিজেই সাবধান থাকুন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 06:41 AM
Updated : 25 Oct 2021, 12:30 PM

যাত্রীদের জ্ঞান হারানোর ঘটনা এড়াতে এয়ারলাইন্সগুলো বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। পাইলট, কেবিন ক্রু, যাত্রী সবার জন্যই একটা কথা প্রযোজ্য, আর তা হলো বিমানে হাঁটার সময় শরীর শক্ত করে রাখা যাবে না। আর আরামে ভ্রমণের জন্য পোশাকও গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন দেশের বিমানের সময়সূচি নিয়ে পর্যালোচনা করে এরকম একটি ওয়েবসাইট ‘এয়ারফেয়ারওয়াচডগ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে কেমন পোশাক পরিচ্ছদ বা অনুসঙ্গ বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বর্জনীয় সেগুলোর কয়েকটি তুলে ধরা হল।

আঁটসাঁট ও অস্বস্তিকর পোশাক

ভ্রমণে জিন্স হয়ত বেশ ফ্যাশনেবল একটা পছন্দ। তবে এর কারণেই আপনি অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন।

বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এমন পোশাক বেছে নিতে হবে যা সর্বোচ্চ রক্ত চলাচল নিশ্চিত করে।

বিমানযাত্রা যদি লম্বা হয় তবে এই রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়া থেকে ‘ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস’ দেখা দিতে পারে।

বিমান যখন ৪২ হাজার ফিট উচ্চতায়, তখন মানুষের শরীর কিছুটা ফুলে ওঠে। আর তাই আঁটসাঁট পোশাক বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে মোটেই সুখকর হবে না।

চোখে কন্টাক্ট লেন্স

বিমানের বাতাস আর সমতল ভূমির বাতাস মোটেই এক নয়। উচ্চতায় বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা থাকে কম। তাই এসময় চোখে যদি কন্টাক্ট লেন্স পরে থাকেন তবে তা চোখে প্রচণ্ড অস্বস্তি সৃষ্টি করবে।

তাই বিমানে ভ্রমণের সময় অবশ্যই কন্টাক্ট লেন্স খুলে রেখে চশমা ব্যবহার করা উচিত।

সহজে আগুন ধরে এমন কাপড়

বিমানে অগ্নিকাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা হয়ত কম। তবে দুর্ঘটনার জন্য সদা প্রস্তুত থাকাটা সবসময়ই বুদ্ধিমানের কাজ।

সুতি, লিনেন, ‘ফ্রিঞ্জ’ ইত্যাদি পাতলা কাপড়গুলোতে সহজেই আগুন ধরে। আগুন সম্পর্কিত যে কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে গায়ে মোটা কাপড় থাকা সবসময়ই অধিক নিরাপদ।

উঁচু হিলের জুতা

বিমান ওঠার আগেই বিমানবন্দরটাই একটা বিশাল এবং লোকে লোকারণ্য স্থান। সেখানেই ভীড়ে দম বন্ধ হওয়ার জোগাড় হতে পারে অনেকেরই। আর গেইট থেকে বিমান পর্যন্ত পৌছাতে অনেকটা পথ হাঁটাতে হয় প্রতিটি যাত্রীকেই।

তাই এসময় পায়ে আরামদায়ক হাঁটার জুতা থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রশ্ন যখন জীবন মরণের তখন প্রাণ বাঁচানোর জন্য পায়ে থাকা উচিত আরামদায়ক জুতা, উঁচু হিল নয়।  

পোশাক কম

বিমানের ভেতরের তাপমাত্রা বেশ ঠাণ্ডা রাখা হয় যাতে যাত্রীরা জ্ঞান না হারান। আর বিমানে যখন বসে আছেন লম্বা সময় তখন শীত লাগার সম্ভাবনা প্রবল। তাই বিমানযাত্রার সময় কয়েক পরত পোশাক পরাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ধাতব অলঙ্কার ও অন্যান্য অনুসঙ্গ

ধাতব অলঙ্কার তো অবশ্যই বিপজ্জনক। পাশাপাশি ধাতব অংশ আছে এমন জুতা, চকলেট কিংবা ‘চুইংগাম’য়ের মোড়ক, নারীর অন্তর্বাসের নিচের অংশের ধাতব ইত্যাদিও বিপজ্জনক।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বলয় সামলানো আপনার জন্য অনেক সহজ হবে যদি কোনো ধাতব অংশ আপনার শরীরে না থাকে। প্রয়োজনে তা খুলে হাতব্যাগে রেখে দিতে পারলে আরও ভালো।

খুলতে ঝামেলা হয় এমন পোশাক

বিমানে ভ্রমণের সময় শৌচাগারে গিয়ে পরনে পোশাক খুলতে বিপাকে পড়তে নিশ্চয়ই কেউ চাইবেন না। এই পোশাকগুলো পরা যেমন কঠিন, প্রয়োজনে তা খোলাও কঠিন। আবার এই পোশাকগুলো পরা অবস্থায় শৌচাগার ব্যবহার আপনাকে আরও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। তাই এমন পোশাক বেছে নিন যা আরামদায়ক, স্বস্তিদায়ক, সহজে পরা কিংবা খোলা যায়।

সুগন্ধি

আপনার প্রিয় সুগন্ধিটা বিমানের অন্যান্য যাত্রীদের জন্য অসহ্য হতেই পারে। বিমানের মধ্যে একই বাতাস ক্রমাগত প্রবাহিত হতে থাকে। তাই সুগন্ধ কিংবা দুর্গন্ধ যাই হোক না কেনো, তা জানালা খুলে বাইরে বের করে দেওয়ার সুযোগ নেই।

আবার বিমানের যাত্রীদের মধ্যে কারও হাঁপানি থাকতে পারে। কিংবা আপনার সুগন্ধির কোনো উপাদান হতে পারে অন্য কোনো যাত্রীর অ্যালার্জি’য়ের কারণ। তাই বিমানে সুগন্ধি ব্যবহার না করাই ভালো।

চুলকানি হয় এমন পোশাক

সব কাপড়, তা যতই ভালোমানের হোক না কেনো, আরামদায়ক নাও হতে পারে। যে কাপড়গুলো পরলে গায়ে চুলকানি হয় বা অন্য কোনো অস্বস্তি হয় সেই কাপড়ের পোশাকে ভ্রমণকালে পরা উচিত নয়।

আরও পড়ুন