মাড়িতে ব্যথা হলে সেসব খাবার খাওয়া ঠিক না

যখন যন্ত্রণা শুরু হয় তখনই চোয়ালের হাড়ের কথা মনে পড়ে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 04:17 AM
Updated : 18 Oct 2021, 04:17 AM

আর সেসময় কোন খাবার খাওয়া উপকারী আর অপকারী সেই বিষয়েও টনক নড়ে।  

নানান কারণে মাড়ির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মাড়ি ব্যথার সবচেয়ে পরিচিত কারণ

নিউ ইয়র্ক জেনারেল ডেন্টিস্ট্রি’র ডা. ইনা চের্ন এই বিষয়ে বলেন, “দাঁতের ডা.ক্তারের কাছে গিয়ে অনেকক্ষণ ধরে মুখ হা করে থাকার ফলে মাড়িতে বা চোয়ালে ব্যথা হতেই পারে। এছাড়াও নানা রকম মাড়ির ক্ষত, প্রদাহ ও সংক্রমণের কারণেও ব্যথা হয়।”

মাড়ির রোগের একটি ক্ষুদ্র রূপ হল জিঞ্জিভাইটিস। এর ফলে মাড়িতে লালচে ও ফোলাভাব হয়। প্রধান কারণ হল যথেষ্ট পরিমাণে ব্রাশ ও ফ্লস না করা। এই লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, ডা. চের্ন আরও বলেন, “মাড়ির ব্যথার অন্যতম কারণ হল মুখের ক্ষত ও ফোলাভাব। এই ঘা যে কোনো সময় ঠোঁট, গালের ভেতর, চোয়াল, জিহবা বা মাড়িতে দেখা দেয়।”

এই চিকিৎসকের মতে, “মাড়িতে ব্যথা হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে ঝাল মসলাদার খাবার। এই ধরনের খাবার খাওয়া সরাসরি ব্যথার সৃষ্টি করে না। তবে সংবেদনশীলতার সমস্যা থেকে থাকলে এমনটা দেখা দেয়।” 

তবে ডা. চের্ন-এর মতে সুখবর হল, মাড়ির ব্যথা সাময়িক সমস্যা। আর এই সময় ব্যথার জন্য উপকারী ও অপকারী খাবার সম্পর্কে ধারণা রাখা কার্যকর।

মাড়ির ব্যথার জন্য উপকারী খাবার

“ব্যথা যদি মাড়ির প্রদাহ বা সাম্প্রতিক দাঁতের কাজের কারণে হয় তাহলে নরম-জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. চের্ন।

এক্ষেত্রে ভাত, আলু ভর্তা, সুপ, মাছ, অ্যাভোকাডো, মটরশুঁটি, ছোলা, টফু, পাস্তা, ওটমিল, ডিম, পনির এবং ভালোভাবে রান্না করা সবজি খাওয়া উপকারী।

দাঁতের ‘আইএমএইচও’ করানোর পর কষ্ট কমাতে আইসক্রিম খাওয়া যেতে পারে বলে জানান এই চিকিৎসক।

মাড়িতে ক্ষত বা ফুসকুড়ির কারণে যদি ব্যথা হয় হবে খাবারে কিছুটা পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন ডা. চের্ন।

মসলা খাবারের স্বাদ  বাড়ালেও এই সময়ে তা বাদ দিতে হবে। এছাড়াও অতিরিক্ত অ্যাসিডিক খাবার বাদ দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।

ডা. চের্ন-এর মতে, “অনেক সময় খাবারের তাপমাত্রাও মাড়ির ওপরে প্রভাব ফেলে। তাই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরম খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এই নিয়মাগুলো মেনে চললে মাড়ির ব্যথা অনেকাংশেই এড়িয়ে চলা যায়।”

ব্যথার মাত্রা বেশি থাকলে ডা. চের্ন, গরম পানি দিয়ে মুখ কুলকুচি করার পরামর্শ দেন। এর সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

মাড়ি ব্যথার যেসব খাবার এড়াতে হবে

ব্যথার ওপর ভিত্তি করে কী খেতে হবে আর কী বাদ দিতে হবে তা নির্ধারণ করা যায়।

তবে দাঁতের কাজ না করানো ছাড়াও ব্যথা থাকে তাহলে মাড়িতে আটকে যেতে পারে এমন খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. চের্ন।

এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে বীজ, শস্য ও মাংস ধরনের খাবার।

মাড়িতে ক্ষত বা মসলাদার খাবারের জন্য ব্যথা হলে এসব খাবারের পাশাপাশি অম্লীয় খাবার যেমন- টক ফলের রস, টমেটো সস ও কফি গ্রহণ না করার পরামর্শ দেন ডা. চের্ন।

কার্বোনেটেইড বা কোমল পানীয়তে পিএইচয়ের মাত্রা কম থাকে এবং অম্লীয় হয় যা মাড়ির ক্ষতি করে। তাই এই ধরনে খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন ডা. চের্ন।

উপরের নিয়মাগুলো মেনে চললে মাড়ির ব্যথা কমানো সম্ভব।

তবে ব্যথার মাত্রা গুরুতর হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন ডা. চের্ন।

আরও পড়ুন