অতিরিক্ত জিনিস কমিয়ে হাত ব্যাগ রাখতে পারেন হালকা।
Published : 15 Oct 2021, 05:45 PM
পুরুষের ব্যবহার্য ব্যাগগুলো দেখতে যেমন একঘেয়ে, নারীদের ব্যাগগুলো যেন ততোটাই আকর্ষণীয়। তবে এই আকর্ষণীয় ব্যাগগুলোর ভেতরটা যেন আরেকটি দুনিয়া, যার মাঝে ব্যাগের মালিকও হারিয়ে যায় প্রায়ই।
ব্যাগের ভেতরে হারিয়ে যাওয়ার এই পরিস্থিতি থেকে নিস্তার পেতে দিন শেষে কিছু জিনিস ব্যাগ থেকে কমিয়ে ফেলতে পারেন, কিছু জিনিস নতুন করে সাজাতে পারেন।
রিয়েল সিম্পল ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে আলোকে জানানো হল সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
রিসিট: পুরো সপ্তাহ নানাধরনের খরচের পর ব্যাগে অসংখ্য ‘মানি রিসিটি’ জমে।
সংসারের খরচের হিসাব রাখা, অফিসের জন্য করা খরচ হলে তার বিল হিসেবে জমা দেওয়া, পণ্য ফেরত কিংবা পরিবর্তন করা জন্য ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে এই রশিদগুলো গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবই নয়।
যেগুলো কাজে আসবে না সেগুলো ফেলে দিন। প্রয়োজনীয়গুলোর মধ্যেও যেগুলো কাগজের কপি না দিয়ে শুধু ছবি দিলেই কাজ হবে সেগুলো ছবি রেখে কাগজটা ফেলে দিন।
আর যা রেখে দিতে হবে সেগুলোর জন্য প্রয়োজনে আলাদা একটি ছোট ব্যাগ রাখুন, যাতে শুধুই প্রয়োজনীয় রসিদ থাকবে।
নানান ধরনের মোড়ক: আশপাশে ময়লা ফেলার স্থান খুঁজে না পেলে বিভিন্ন জিনিসের প্যাকেট হাতব্যাগে রাখা হয়। পরে সারাদিন সেগুলো আর ফেলার কথা মনে থাকে না। বিশেষ করে খাবারের প্যাকেট ব্যাগে রাখলে খাবারের গুঁড়া ব্যাগে ছড়ায়।
উপায় হল এই প্যাকেটগুলো ব্যাগের বাইরের পকেটগুলোতে রাখা। যাতে চট করে ফেলে দেওয়া যায়। আর ভুলে গেলে সেই প্যাকেটগুলো ব্যাগ নোংরা না করে।
প্রসাধনী: সবসময় মনে রাখবেন, যে প্রসাধনী সঙ্গে না থাকলে দিনটা পার করাই সম্ভব নয়, শুধু সেগুলোই ব্যাগে রাখা যাবে। আর সেগুলো ছড়িয়ে না রেখে, ব্যাগের ভেতরের আরেকটি ছোট ব্যাগে সেগুলো রাখুন। কিছু প্রসাধনী ভারী হয়। সেগুলো ছোট কোনো কৌটায় বহন করতে পারেন কিংবা বহন করার জন্য একটা ছোট সেট কিনে নিতে পারেন।
কার্ড: নিজের এবং পরিচিত মানুষের মিলিয়ে পুরুষের মানিব্যাগ ফুলে ওঠার একটি বড় কারণ ‘ভিজিটিং কার্ড’। কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রেও এটা ব্যতিক্রম নয়।
অন্যদের কার্ডের ক্ষেত্রে ছবি তুলে মোবাইলে একটা ফোল্ডার বানিয়ে রেখে দিলেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কোনো ব্যক্তির ফোন নম্বর মোবাইলে সেভ করে রাখার সময় সেখানেই তার ‘ভিজিটিং কার্ড’য়ের ছবিটি রেখে দিলে আরও ভালো।
বাকি থাকল নিজের কার্ড মানুষকে দেওয়ার জন্য রাখা। সেটার জন্য আলাদা একটি ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন গড়ে যতটুকু প্রয়োজন হয় সেই হিসাব করে অল্প কিছু কার্ড সঙ্গে রাখতে পারেন।
ঋতুস্রাবের সরঞ্জাম: মাসের ওই বিশেষ দিনগুলোতে বাইরে বেরিয়ে যদি দেখেন ব্যাগে একটাও প্যাড নেই, তবে বিষয়টা সব নারীর জন্যই আতঙ্কের হবে। আর সেই ভয় থেকে বাঁচতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্যাড দিয়ে ব্যাগ ভরে ফেলার প্রবণতা দেখা দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
বুদ্ধিমানের কাজ হবে প্র্রতি রাতে শুধু পরের দিনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যাগে নেওয়া। এতে ব্যাগ ভারী হবে না, বিপদেও পড়বেন না।
পয়সা: ব্যাগের একটি পকেট শুধু কয়েন বা পয়সার জন্য নির্দিষ্ট করে রাখুন। যেখানে সেখানে রাখলে কয়েন কাজের সময় খুঁজে পাবেন না। আবার পার্স কিংবা মানিব্যাগে পয়সা রাখলে তা ভাঁজ করতে সমস্যা হয়। অনেক সময় বাইরের দিকে পয়সার আকৃতিতে একটা অংশ ফুলে ওঠে সেখান থেকে রং নষ্ট হতে থাকে।
ওষুধ: একইভাবে প্রাত্যহিক ওষুধের জন্যও একটা আলাদা ব্যাগ রাখা উচিত। আবার পুরো ওষুধের পাতা নিয়ে ঘোরাও বোকামি হবে। দিনে যতটুকু প্রয়োজন শুধু ততটুকু রাখার জন্য একটা বাক্স কিনে নিতে পারেন।
ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে করণীয়
প্রয়োজনীয় সব অনুসঙ্গ কিনলেন ঠিকই কিন্তু তা মনে করে সঠিকভাবে ব্যবহার করলেন না, তাহলে সবই বৃথা।
নিউ ইয়র্ক’য়ের পেশাদার সরঞ্জাম সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান ‘ডান অ্যান্ড ডান হোম’য়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান লাইটফুট বলেন, “বাইরে যে ব্যাগটা নিয়ে যাচ্ছেন, সেটায় শুধু আপনার ওইদিন প্রয়োজন আর জরুরি মুহূর্তের জিনিসগুলো ঠাঁই পাবে। চাবি, হেডফোন, টাকা ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি ব্যবহার্য জিনিসগুলো উজ্জ্বল রংয়ের ব্যাগে রাখা উচিত।
ব্যাগ পরিবর্তনের সময় এগুলো অন্য ব্যাগে নিয়েছেন কি-না সেটা নিশ্চিত করতে এই উজ্জ্বল রং আপনার সহায়ক হবে।
প্রতিদিন ব্যাগ থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস বের করে দিতে আর প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যাগে আছে কি-না তা নিশ্চিত করতে কয়েক মিনিট সময় ব্যয় করার অভ্যাস করতে হবে, বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিট মেথড’য়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মেরিসা হ্যাগমায়ার।
“এই কয়েক মিনিট পরের পুরো দিনটা আপনাকে নিশ্চিন্ত রাখবে যে প্রয়োজনীয় সবই আপনার সঙ্গে আছে আর ব্যাগটাও থাকবে আপনার আয়ত্তে।”
ট্রাভল সাইজ: আপনার ব্যাগের সবচাইতে বড় জিনিসটা কী? সেটা কি ছোট করে আনার সম্ভব? যদি সম্ভব হয় তবে সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরও পড়ুন