উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চাই প্রোটিন

সুন্দর ত্বক পেতে চাইলে প্রায় নয় ধরনের প্রোটিন-জাতীয় খাবারের প্রয়োজন হয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2021, 05:13 AM
Updated : 27 Sept 2021, 05:13 AM

তাই শুধু রূপচর্চা কিংবা প্রসাধনী ব্যবহার করলেই হবে না, সুস্থ সুন্দর উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চাই পুষ্টিকর খাবার।

ত্বক বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদেরা মনে করেন, প্রোটিন ও সুষম খাবার খাওয়া ত্বক ভালো রাখতে সহায়ক।

মেক্সিকোতে বসবাস তবে চীনা ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডা. জিনিন ম্যাহন রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “দেহের অভ্যন্তরিন অবস্থার প্রতিচ্ছবি হল ত্বক। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস ত্বকে উজ্জ্বলতা ও মসৃণভাব আনে।”

যুক্তরাষ্ট্রের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ‘সার্ফেস ডিপ’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. অ্যালিসিয়া জালকা সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য কতটা প্রোটিন জরুরি সে সম্পর্কে হিসাব রাখার এবং খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণের পরামর্শ দেন।

“সমস্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার পুষ্টি বা ত্বকের জন্য সমানভাবে উপকারী না। যেমন- প্রোটিনের একটি ধরন হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখে, কোনটা পেশির কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। এমন খাবার বাছাই করা উচিত যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং সংরক্ষক, স্যাচুরেইটেড ফ্যাট, হরমোন এবং অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ কম থাকে।

প্রাণিজ প্রোটিন

উচ্চ চর্বি, সোডিয়াম ও পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে নানা উপকারী অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন। এবং কোনো সংরক্ষক বা স্যাচুরেইটেড চর্বি থাকে না। ফলে তা ত্বকের উপকার  করে বলে জানান, জালকা।

স্যামন: নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ সামান্তা ক্যাসেটি বলেন, “স্যামন প্রোটিনের ভালো উৎস। প্রতি তিন আউন্স স্যামনে ২০ গ্রাম প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই সকল চর্বি প্রদাহ কমায় এবং যারা পর্যাপ্ত অ্যামিনো অ্যাসিড গ্রহণ করেন তাদের ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকে, বলিরেখা ও বয়সের ছাপ ধীর হয়।”

সামুদ্রিক খাবারের ওপর করা সমীক্ষা থেকে জানা গেছে সপ্তাহে দুবার স্যামন ও টুনা মাছ খাওয়া অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা পুরণ করে ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

ডিম: যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ কেরি গ্যান্স বলেন, “ডিম প্রোটিনের কঠিন যৌগ এবং দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন সমৃদ্ধ। এই দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষিত রাখে।”

সাধারণ টক দই: প্রোটিন ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ গ্রিক দই ক্যালসিয়ামেরও ভালো উৎস বলে জানান জালকা। এক কাপ দইয়ে ২৫ গ্রাম প্রোটিন ও উপকারী ব্যাক্টেরিয়া থাকে বলে জানান ক্যাসেটি।

অন্ত্রে থাকা ব্যাক্টেরিয়া মাইক্রোবায়োম গঠন করে এবং মাইক্রোবায়োম দেহের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া কমায়। এতে ত্বকের নানাবিধ সমস্যা যেমন- ব্রণ ও একজিমা দূর করে ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখে।

ত্বক বান্ধব উদ্ভিজ্জ প্রোটিন

উদ্ভিজ্জ প্রোটিন সাধারণত প্রাণিজ প্রোটিনের তুলনায় কম স্যাচুরেইটেড চর্বি সমৃদ্ধ।

জালকা বলেন, “যদি নিরামিষভোজী হয়ে থাকেন তাহলে অ্যামিনো অ্যাসিডের ঘাটতি পূরণ করতে বাদামি চাল বা সয়া খাওয়া যেতে পারে।”

খাবারে প্রোটিন ও অ্যামিনো অ্যাসিড যোগ করতে নিচের উদ্ভিজ্জ উপাদানগুলো যোগ করা যেতে পারে।

কাঠ-বাদাম: গ্যান্স বলেন, “কাঠ-বাদাম প্রোটিন, ভিটামিন ই এবং মনোস্যাচুআনস্যাচুরেইটেড অ্যাসিড সমৃদ্ধ। নিয়মিত এই বাদাম খাওয়া মেনোপোজের পরে হওয়া মুখের বলিরেখা কমাতে সহায়তা করে।”

নাস্তা বা অন্য খাবারের সঙ্গে কাঠ-বাদাম যোগ করে খাওয়া অভ্যাসে পরিণত করে নেওয়া উপকারী।

টফু: “টফু সয়াবিনের তৈরি যা পলিফেলনিক যৌগ আইসোফ্লাভোনেস সমৃদ্ধ। যা ত্বক সুস্থ রাখে ও বয়সের ছাপ কমায়,” বলেন গ্যান্স।

ডাল: উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও শক্তির ভালো উৎস। ডাল কেবল প্রোটিনই সরবারহ করে না বরং এটা উন্নত আঁশও সরবারহ করে বলে জানান, জাল্কা।

এছাড়াও ডাল খাবারে ফোলাট ও পটাশিয়াম যোগ করে। এতে স্যাচুরেইটেড চর্বি ও সোডিয়াম নেই।

আখরোট: ম্যাহন বলেন, “আখরোট উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ যা মস্তিষ্ক সচল রাখে, চুল শক্ত ও উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে।”

শণ বীজ: ক্যাসেটি বলেন, “ত্বক ভালো রাখতে শণ বীজ উন্নত উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। তিন টেবিল-চামচ শণ বীজ থেকে ১০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।”

এছাড়াও এতে আছে এএলএ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মাছে থাকা প্রদাহনাশক উপাদানের সমতুল্য।

স্মুদি, ওটমিল, সালাদ বা সবজিতে শন বীজ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন