এই ভেজালের যুগেও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে চাইলে মেনে চলুন কয়েকটি পন্থা।
Published : 21 Sep 2021, 07:35 PM
কিটো ডায়েট, নিরামিষ বা উদ্ভিজ্জ খাবার- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের নানান পন্থায় অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন কোনটি হবে উপকারী।
এই বিষয়ে শিকাগো’র ‘সিম্পল মিল্স’য়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাটলিন স্মিথ বলেন, “স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব একটা জটিল বা কঠিন কোনো বিষয় না।”
‘ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ের আয়োজনে এক কথোপকথন অনুষ্ঠানে এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, “স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে অনেক হৈচৈ চলে। তবে বিষয়টা অত একটা জটিল নয়।”
অনুষ্ঠানে স্মিথসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ব্রিজিট জেইটলিন এবং ডা. রুভিনি উইজেটিলাকা’র দেওয়া পরামর্শ অবলম্বনে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের কয়েকটি নিয়ম এখানে দেওয়া হল।
সাধারণ উপকরণ উপকারী: সারাদিন ব্যাস্ততার খাতিরেই মানুষ মোড়কজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। তবে সুস্থ থাকতে দেহের জন্য সাধারণ খাবার খাওয়া উপকারী বলে মনে করেন, স্মিথ এবং ডা. উইজেটিলেকা তা সমর্থন করেন।
মোড়কজাত খাবার সাধারণত প্রক্রিয়াজাত হয়ে থাকে। তাছাড়া এটা রান্না করা, পরিশোধিত করা বা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য রাসায়নিক উপাদান মেশানো হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
নিয়মিত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া স্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
তাই সুস্থ থাকতে প্রক্রিয়াজাত করা ছাড়াই খাবার খাওয়া উচিত। আর যদি তা প্যাকেটজাত হয় তবে উপকারণের তালিকা ভালো মতো খেয়াল করা প্রয়োজন।
উদ্ভিদ ভালো: বেশি উদ্ভিজ্জ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন, স্মিথ।
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) অনুযায়ী- আঁশ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা মেটাতে দৈনিক কমপক্ষে আড়াই কাপ শাকসবজি ও দুই কাপ ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন। উদ্ভিজ্জ খাবার হৃদ-স্বাস্থ্য ভালো রাখে, মৃত্যু ঝুঁকি কমায় ও সার্বিক সুস্থতায় সহায়তা করে।
খাবার হতে হবে আনন্দময়: “এমন খাবার খেতে হবে যা খেতে আপনার ইচ্ছা হয় ও ভালো লাগে,” বলেন জেইটলিন।
তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কপি খেতে ইচ্ছে না হলে খাবেন না। তার পরিবর্তে গাজর বা অন্য সবজি যেটা ভালোলাগবে সেটা খান।”
মিষ্টি খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রেও পছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। পছন্দের তালিকায় যদি চকো চিপ্স, বিস্কুট ইত্যাদি থাকে তাহলে তা স্বাস্থকর ও পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি যোগ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। এতে দেহ ও মন দুটো সুস্থ থাকে।
যখন কোনো খাবার বা খাদ্যাভ্যাস পুষ্টি না যুগিয়ে বরং মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়ায় তখন তা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন, জেইটলিন।
খাদ্য পরিকল্পনা: খাদ্য পরিকল্পনা সম্পর্কে জেইটলিন বলেন, “পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাসকে যদি শাস্তি বলে মনে হয় তাহলে তা না করাই ভালো। পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস দীর্ঘদিন অনুসরণ করতে হয় তাই বাইরে কোথাও গেলেও অপরিকল্পিত খাবার গ্রহণ না করে বরং বিকল্প খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।”
যদিও এমনটা করা বেশ কষ্টকর। তবে তা অসম্ভব নয়। সুস্থ থাকতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই।
প্রচুর পানি পান: জেইটলিন বলেন, “সুস্থ থাকার মূল চাবি কাঠি হল আর্দ্র থাকা এবং এটা ক্ষুধার ওপরেও প্রভাব রাখে।”
দেহের পানি শূন্যতা অনেক সম্য মস্তিষ্কে ক্ষুধার সংকেত দেয়। ফলে আমরা বাড়তি খাবার এমনকি বাড়তি শর্করা গ্রহণের দিকে ঝুঁকে পড়ি।
তাই ক্ষুধা অনুভূত হলে দ্রুত পানি পান করা উচিত।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন