সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হল মিথ্যা বলা কিংবা তথ্য গোপন করা। আর এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করাও বেশ কঠিন।
২০১৩ সালে ‘কমিউনিকেইশন স্টাডিজ’য়ে প্রকাশিত এক গবেষণায় অনুযায়ী, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের কাছে সপ্তাহে পাঁচবার মিথ্যা বলে। সরাসরি মিথ্যা না বললেও সত্য গোপন করে। আর মিথ্যা বা তথ্য গোপনের প্রবণতা আর্থিক বিষয়গুলো নিয়েই বেশি হয়।
সম্পদ নিয়ে মিথ্যা বলেন এক তৃতীয়াংশেরও বেশি
‘দ্য ন্যাশনাল এনডোমেন্ট ফর ফাইন্যানশল এডুকেশন (এনইএফই) মানুষের আর্থিক প্রতারণা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এক দশকের বেশি সময় ধরে।
২০১৮ সালে সংস্থাটি ‘হ্যারিস পোল’য়ের একটি দ্বিবার্ষিক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে। মোট দুই হাজার মানুষ অংশ নেয় এই জরিপে। আর তার মধ্যে ৩৭ শতাংশই জানিয়েছেন, তারা তাদের সঙ্গীর কাছে কোনো কিছু কেনা, কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট, বিল, নগদ অর্থ ইত্যাদি বিষয়ে প্রিয়জনের কাছে মিথ্যা বলেছেন কিংবা সেগুলো গোপন করেছেন।
এই জরিপ ধরে ‘বেস্টলাইফ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ৩৭ শতাংশের মধ্যে প্রায় ২১ শতাংশই লুকিয়েছেন নগদ অর্থ, ২০ শতাংশ লুকিয়েছেন কোনো কিছু কেনার ঘটনা, ১২ শতাংশ লুকিয়েছেন কোনো বিল, ৬ শতাংশ পুরো একটা অ্যাকাউন্টের খবর চেপে গেছেন। আর ৫ শতাংশ বলেছেন যে তারা লুকিয়েছেন বড় ধরনের কিছু কেনার ঘটনা।
সঙ্গীর সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে পাঁচজনের মধ্যে একজন মিথ্যা বলেন
কিছু মানুষ প্রশ্নের মুখোমুখি হলে সরাসরি সবকিছু স্বীকার করে নেন, কেউ আবার লুকিয়ে রাখেন।
এই পর্যবেক্ষণে আরও দেখা গেছে, ১৮ শতাংশ স্বীকার করেছেন যে তারা প্রতিনিয়ত তাদের মাসিক উপার্জন কিংবা ব্যক্তিগত ঋণ সম্পর্কে তাদের সঙ্গীকে মিথ্যা বলেন।
১৩ শতাংশ গোপন রাখেন তাদের আর্থিক বিষয়গুলো। আর ৭ শতাংশ মিথ্যা বলেন ঋণ নিয়ে।
এমনকি পাঁচ শতাংশ মানুষ নিজেদের মাসিক উপার্জন নিয়েও মিথ্যা বলেন।
আর্থিক বিষয়ে তথ্য গোপন করার কারণ
এর পেছনের কারণগুলো মানুষভেদে ভিন্ন।
জরিপ বলছে, ৩৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বিশ্বাস করেন তাদের আর্থিক দিকগুলোর কিছু দিক তার জীবনসঙ্গীর না জানাই মঙ্গল। ২৬ শতাংশ পূর্বে তাদের জীবনসঙ্গীকে আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে সবকিছু আলোচনা করতেন এবং বুঝেছেন যে তাদের সঙ্গী সেগুলো সমর্থন করবে না।
১৬ শতাংশ মনে করেন, সঙ্গীর সঙ্গে আর্থিক বিষয় নিয়ে তারা কখনই আলাপ করেননি কারণ তাদের বিশ্বাস সঙ্গী সেগুলোকে সমর্থন করবে না।
প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন তাদের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে কারও সঙ্গে আলাপ করতে বিব্রত বোধ করেন কিংবা ভয় পান। এজন্যই অন্যান্যদের মতো জীবনসঙ্গীও তাদের আর্থিক বিষয়গুলো জানুক এমনটা চান না।
সম্পর্কের ওপর প্রভাব
এই জরিপের ৭৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী স্বীকার করেছেন যে তাদের আর্থিক বিষয়গুলো গোপন রাখা বা তা নিয়ে মিথ্যা বলার কারণে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
৪৪ শতাংশের মাঝে ঝগড়া হয়েছে, ৩৫ শতাংশের ভেঙেছে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস।
এমনকি ১৩ শতাংশের এই কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ দেখা দিয়েছে, ১০ শতাংশ আলাদা হয়েছেন।
আরও পড়ুন: