মাতৃত্বকালীন মানসিক সমস্যা

সন্তান জন্মদান আনন্দের হলেও এই সময় মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার নানান পরিবর্তন ঘটে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2021, 06:45 AM
Updated : 3 Sept 2021, 06:45 AM

মাতৃত্বকালীন ব্যাধিগুলো বিশেষ করে নতুন মায়েদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। এর ফলে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও হতাশাও দেখা দিতে পারে।

শিশুচিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সেবামূলক ওয়েবসাইট ‘প্যারেন্টস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।

প্রসবোত্তর বিষণ্নতা

‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন’ বা পিপিডি অর্থাৎ গর্ভাবস্থা ও প্রসবের পরে হতাশায় ভোগা একটা মানসিক ব্যাধি। এটা নিরাময়যোগ্য। তাই এর লক্ষণগুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন।

* মৃদু দুঃখীভাব * মনোযোগে অসুবিধা * জীবনে সাধারণ আনন্দ উপভোগ না করা * সন্তানের সঙ্গে বন্ধন স্থাপনে অক্ষমতা।

যাদের অতীতে বিষণ্নতার সমস্যা থাকে তাদের প্রসবোত্তর হতাশার প্রবণতা বেশি। প্রসবের পরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোন হ্রাসের কারণে পিপিডি দেখা দিতে পারে।

ডিস্থাইমিয়া বা অবিরাম হতাশা

এক রকমের মানসিক ব্যাধি যা কমপক্ষে দুই বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এটা ‘পার্সিস্টেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার’ হিসেবেও পরিচিত।

এই লক্ষণগুলোর মধ্যে দৈনন্দিন কাজের অনিহা, হতাশা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। যে সকল নারীর আগেই ‘ডিস্থাইমিয়া’ ছিল এই সময় তাদের এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

গর্ভাবস্থা এবং প্রসবোত্তর সাধারণ উদ্বেগ

গর্ভাবস্থা মানসিক চাপ বাড়ায়। এই সময় উদ্বেগ ও দুঃশ্চিন্তা ভোগা স্বাভাবিক বিষয়।

তবে এই সমস্যা গুরুতর ও দীর্ঘস্থায়ী হলে বুঝতে হবে তা ‘প্রেগন্যান্সি অ্যান্ড পোস্টপার্টাম জেনারেল অ্যাংজাইটি’তে রূপ নিয়েছে।

এই সমস্যা দেখা দিলে অস্থিরভাব দেখা দেয়, হৃদস্পন্দন বাড়ে, অনিদ্রা ও চরম দুঃশ্চিন্তা দেখা দেয়।

এমন লক্ষণ দেখা দিলে তা অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ  নিতে হবে।

গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের পরে ওসিডি

গর্ভাবস্থা ও প্রসবের পরে ওসিডি বা ‘ম্যাটার্নাল অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার’ (ওসিডি) তিন থেকে পাঁচ শতাংশ নারীর ওপর প্রভাব রাখে।

এদের মধ্যে অর্ধেক নারী নিজের শিশুর ক্ষতি সম্পর্কে বেশি উদ্বিগ্ন থাকেন।

কোনো কিছু বারবার করা বা খুঁতখুঁত করাকে ‘ওসিডি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। কোনো বিষয় নিয়ে সারাক্ষণ চিন্তা করা, একটা কাজ বারবার করা এবং না চাইতেও বিভিন্ন চিন্তা মাথায় আসা ‘ওসিডি’র লক্ষণ।

‘দি বেবি ব্লুজ’

‘বেবি ব্লুজ’ এমন একটা অনুভূতি যা মায়েদের মন খারাপ, মেজাজের ওঠা-নামা এমনকি কান্নাভাবের কারণ হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সন্তান জন্মদানের পরে ৮০ শতাংশ নারীর মধ্যে ‘বেবি ব্লুজ’ দেখা দেয়।

যেহেতু এই লক্ষণগুলো হালকা এবং প্রায়ই দুএক দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়, তাই ‘বেবি ব্লুজ’ আনুষ্ঠানিকভাবে মাতৃত্বকালীন মানসিক সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয় না।

তবে এই লক্ষণগুলো যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় তাবে তা হতাশার কারণ হতে পারে। তখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া যাবে না।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন