রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘ফ্লেইভানয়েডস’

বিভিন্ন ধরনের সবজি ও উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে মিলবে এই ‘ফ্লেইভানয়েডস’।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2021, 03:05 PM
Updated : 14 August 2021, 03:05 PM

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অনন্য এক উপায় হল ‘ফ্লেইভানয়েডস’।

‘জেনি ক্রেইগ সাইন্স অ্যাডভাইজরি বোর্ড’য়ের সদস্য পুষ্টিবিদ অ্যাবি গেলম্যান বলেন, “এক ধরনের উদ্ভিজ্জ ‘পিগমেন্ট’ বা ‘ফাইটোকেমিকাল’ এই ‘ফ্লেইভানয়েডস’। সাধারণত এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’য়ের চাইতেও বেশি সক্রিয় ও কার্যকর।”

রিয়েল সিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “কোলাজেন ফাইবার’য়ের সঙ্গে ‘ফ্লেইভানয়েডস’য়ের সম্পর্ক আছে। ‘কোলাজেন’ শরীরের সবচাইতে অবহেলিত প্রোটিন। তবে শরীরের বিভিন্ন ‘টিস্যু’কে নিজ নিজ অবস্থানে ধরে রাখতে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। শরীরে কোনো প্রদাহ হলে তা এই ‘কোলাজেন’কে ধ্বংস করে। আর সে কারণেই ‘ফ্লেইভানয়েডস’ অত্যন্ত জরুরি, যাতে ‘কোলাজেন’য়ের সরবরাহে ঘাটতি না হয়।”

পেঁয়াজ: গেলম্যান বলেন, “পেঁয়াজে থাকে ‘কোয়েরসেটিন’ নামক ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ যা প্রদাহ ও অ্যালার্জি কমায়। ‘ইনসুলিন’সহ আরও কয়েকটি হরমোন নিয়ন্ত্রণে এই উপাদানের ভূমিকা আছে। আর রান্নার ক্ষেত্রে পেঁয়াজ প্রায় সব পদেরই ভিত্তি হতে পারে।”

আঙুর: এতে থাকা ‘অ্যান্থোসায়ানিডিনস’ পিগমেন্ট কোষে গিয়ে সেখানে ভিটামিন সি’য়ের মাত্রা বাড়ায়। এই উপাদান শরীরকে মুক্ত মৌলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচায়। ‘কোলজেন’কেও সুরক্ষা দেয়। আর আঙুর খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই আছেন। স্ন্যাকস হিসেবে যেমন খাওয়া যায় তেমনি টকদই, ওটমিল, বেইক করা খাবার, সালাদ ইত্যাদিতে যোগ করেও খাওয়া যায় মিষ্টি এই ফল।

জাম: ‘নিউরাল মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অলিভিয়া অড্রে (এনডি, বিসিএনডি) বলেন, “‘ফ্লেইভানয়েডস’ আর ভিটামিন সি, দুটোরই আদর্শ উৎস জাম। পাশাপাশি মিলবে ভোজ্য আঁশ ও ‘বায়োটিন’- দুটাই ত্বকের জন্য উপকারী।”

জামজাতীয় বিভিন্ন ফল ‘ব্লেন্ডার’য়ে নিয়ে স্মুদি বানিয়ে সকালে পান করার অভ্যাসটা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। আবার দিনের অন্যবেলার খাবারের পর ‘ডেজার্ট’ হিসেবেও তা মজাদার।”

সবুজ খাবার: ‘রিসা গ্রোউক্স নিউট্রিশন এবং ফুডফ্রেম প্রোগ্রাম’য়ের প্রতিষ্ঠাতা রিসা গ্রোউক্স বলেন, “সব ধরনের সবুজ পত্রল শাক সবজিকে বলা যায় ‘সুপারফুড’। যে সবজিতে ক্যালরি কম, সেগুলো রক্তচাপ কমায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভোজ্য আঁশ ও পানির মাত্রা বেশি এমন সবজি কোষ থেকে বর্জ্য বের করে দেয়। পালংশাক, ব্রকলি, ‘সেলেরি’ ইত্যাদি আদর্শ সবুজ পত্রল সবজি।”

লাল সবজি: গ্রোউক্স বলেন, “লাল-মরিচ, গাজর, লালশাক, লাল পেঁয়াজ ইত্যাদিতে প্রচুর ‘ফ্লেইভানয়েডস’ পাওয়া যায়। সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন, রান্না করে খেতে পারেন। আবার অন্য সবজির সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন। উপকারিতায় কমতি আসবে না।”

মসলা ও ভেষজ উপাদান: ফল কিংবা সবজির স্বাদ আর স্বাস্থ্যগুন দুটোই কয়েকগুন বাড়িয়ে দিতে পারে মসলা। টমেটো, আলু, শসা ইত্যাদির সঙ্গে ‘পার্সলে’, লেবু, ‘থাইম’, ‘ওরিগানো’ ইত্যাদি বেশ মানানসই। খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে দারুচিনিও অনন্য। আর পুষ্টিগুনেও ভরপুর।

সিট্রাস: ‘ফ্লেইভানয়েডস’ আর ভিটামিন সি’তে টইটম্বুর সকল ‘সিট্রাস’ বা টক ধরনের ফল ও সবজি। পানীয়, সস, রান্নার পদ সবকিছুরই স্বাদ যেন বাড়িয়ে দেয় এই খাবারগুলো। লেবু, কমলা, আঙুর, লাইম ইত্যাদি সিট্রাস ফলের আদর্শ উদাহরণ।

বীজজাতীয় খাবার: সয়াবিন, ‘ব্ল্যাক বিন্স’, কিডনি বিন্স’ ইত্যাদিও ‘ফ্লেইভানয়েডস’ যোগায়। অন্যান্য পুষ্টিগুন তো আছেই, স্বাদও চমৎকার। লম্বা সময় পেট ভরা রাখতেও এদের ভূমিকা অনেক।

চকলেট: চকলেট ও ‘পাউডার্ড কোকো’ থেকে ‘ফ্লেইভানয়েডস’ মেলে। চকলেট যত বেশি কালচে রংয়ের, তাতে পুষ্টিমান ততই বেশি।

আরও পড়ুন