বাসা থেকে কাজ: কর্মচারীদের প্রতি কর্মকর্তাদের যা করা উচিত

বিশেষ করে কর্মজীবী মায়েদের ক্ষেত্রে সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2021, 11:09 AM
Updated : 29 July 2021, 11:09 AM

বাসায় বসে মাসের পর মাস অফিসের কাজ করে যাবে তা কজনই বা ভাবতে পারেন। তবে মহামারীর কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বাধ্য হয়েছিল সে অভাবনীয় ঘটনাকে বাস্তবে রূপ দিতে।

আর প্রায় দুই বছরের ‘হোম অফিস’য়ের সুবাদে মালিক আর কর্মী সবাই বুঝতে পেরেছেন কাজটা হওয়াই মূল বিষয়, সেটা অফিসে বসে হোক আর ঘরে।

এবিষয়ে ‘বেস্টলাইফ’ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সমসাময়িক চিত্র নিয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘গ্লোবাল কোচিং ফার্ম টকিং ট্যালেন্ট’য়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তেরেসা হপকে।

সেই প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল বিস্তারিত।

দীর্ঘমেয়াদে কর্মজীবীদের মানসিকতায় একটা বড় ছাপ রেখে যাবে এই নতুন অভ্যাস। অনেকেই চাইতে পারেন ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ, ‘ফ্লেক্সিবল ওয়ার্কিং আওয়ার’।

বিশেষ করে কর্মজীবী মায়েদের কিংবা নতুন বাবা-মা হওয়া দম্পতিদের জন্য এই সুবিধাটা অসংখ্য সমস্যার সমাধান হয়ে আসবে।

অপরদিকে কর্মীদলের মানসিকতার এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে কর্মকর্তাদেরও।

কর্মীদল যখন যার যার ঘরে বসে কাজ করছে তখন ওই পুরো দলটাকে নেতৃত্ব দেওয়া যার কাজ তারও দক্ষতার বিভিন্ন দিকও সামনে উঠে আসবে।

কর্মীরা যখন অফিসের বাইরে বসে কাজ করবে তখন ম্যানেজারকে কাজের দায়িত্বটা পুরোপুরি কর্মীর হাতেই ছেড়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে কর্মীকে পুরোপুরি বুঝিয়ে দিতে হবে তার কাছ কী আশা করা হচ্ছে আর তার কাজের জন্য জবাবদিহিতাও ওই কর্মীকেই করতে হবে। 

দক্ষ কর্মী খুঁজে পাওয়া ও তাকে ধরে রাখা সবসময়ই প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে মহামারীতে সেই চিন্তাধারাতেও সামান্য পরিবর্তন এসেছে।

‘রিমোট ওয়ার্কিং’য়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় শুধু কর্মকর্তারা বসেন তা নয়, সঙ্গে কর্মীরাও যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়। ফলে সবস্তরের কর্মীদের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়, সবাই উন্নতি করার সুযোগ পায়।

একইসঙ্গে কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপকরাও হয়ে ওঠেন কর্মী কেন্দ্রিক, শুধু কাজ কেন্দ্রিক নয়।

এমন পরিবেশে টিকে থাকতে হলে কর্মকর্তাদের আরও কৌতুহলী হতে হবে, বাড়াতে হবে কর্মীদের প্রতি সহানুভূতি।

কর্মীদের ওপর কখন ছাড় দিতে হবে, কখন কঠোর হতে হবে সেটা কর্মকর্তাদের আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে। এজন্য তাদের আচরণ, বাচনভঙ্গির দিকে নজর রাখতে হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক আলোচনা শেষে কর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলা উচিত কর্মকর্তাদের। যাচাই করা উচিত তাদের সন্তুষ্টির মাত্রা। তারা নিজের মত প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছে কি-না এবং সেই মতামতগুলো গুরুত্ব পাচ্ছে কি-না সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।

অনেক কর্মী আছেন যারা শুধু চোখ বুঁজে কাজ করে যেতে চান না। জানতে চান, বুঝতে চান তাদের কাজটা প্রতিষ্ঠানে, সমাজে, মানুষের জীবনে কতটুকু প্রভাব ফেলে।

কর্মজীবনের একটা পর্যায়ে শুধু পয়সাটাই আর মূখ্য বিষয় থাকে না। তাই কর্মকর্তাদের বুঝতে হবে তার অধিনস্ত কর্মীদের কী অনুপ্রেরণা যোগায়।

নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা কর্মস্থলের মানুষগুলো বুঝবে, ক্ষেত্র বিশেষ সহানুভূতি দেখাবে এমনটা কর্মীরা তাদের সহকর্মীদের কাছ থেকে আশা করতেই পারেন।

এমন পরিবেশ যে কর্মস্থলে থাকে না সেখানে কর্মীরা বেশিদিন থাকতেও চান না। আর সেক্ষেত্রে কর্মিদের ক্ষোভটা প্রতিষ্ঠানের প্রতি নয়, ব্যবস্থাপক বা কর্তাব্যক্তির ওপরেই রয়ে যায়।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন