‘আলৎঝাইমার’স’য়ের ঝুঁকি কমবে যেভাবে

বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে স্মরণ ও চিন্তা শক্তির ক্ষমতা হারানোর আগেই প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2021, 01:25 PM
Updated : 27 July 2021, 01:25 PM

স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়ার পদ্ধতিটা বয়সের সঙ্গে পাল্টে যায়। তবে হৃদরোগ কিংবা ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষিত থাকার পদ্ধতিগুলো বোঝা যতটা সহজ, ‘আলৎঝাইমার’স থেকে সুরক্ষিত থাকা ততটা সহজ নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আলৎঝাইমার’স অ্যাসোসিয়েশন’য়ের মতে, “আলৎঝাইমার’স একটি ‘নিউরোডিজেনেরেটিভ’ রোগ, যা প্রায় ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ‘ডিমেনশিয়া’র কারণ।

যুক্তরাষ্ট্রে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ‘আলৎঝাইমার’স ষষ্ঠ।”

তবে গবেষণা বলছে, একটি বিশেষ কাজ প্রতি সপ্তাহে দুবার, মাত্র ১০ মিনিটের জন্য করলেই ‘আলৎঝাইমার’স রোগের ঝুঁকি কমবে অনেকটা, আর তা হল ব্যায়াম।

‘জার্নাল অফ ‘আলৎঝাইমার’স রিসার্চ অ্যান্ড থেরাপি’ শীর্ষক সাময়িকীতে সাম্প্রতিক এই গবেষণা প্রকাশ পায়।

সাউথ কোরিয়া’র ‘ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মেডিসিন’য়ের গবেষক দল মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ১৪৯ জন মানুষের ‘মেডিকাল রেকর্ড’ নিয়ে কাজ করেন।

এই অংশগ্রহণকারীদের সবারই ২০০৫ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যেই ধরা পড়েছিল ‘মাইল্ড কগনিটিভ ইম্পেয়ারমেন্ট (এমসিআই)’।

এসময় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ৬৪ থেকে ৬৯ বছর। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল এই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কার ‘আলৎঝাইমার’স রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কেমন।

দেখা যায়, যাদের ‘এমসিআই’ ধরা পড়েছে, তাদের ‘আলৎঝাইমার’স হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুন বেশি।

পরে একই অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে আবারও দুবার ‘ফলো-আপ’ করা হয় গবেষণাকালে। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে তারা কতটুকু ব্যায়াম করেছেন সে ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয়।

ফলাফলে দেখা যায়, যারা সপ্তাহে দুবার ১০ মিনিট বা তার বেশি সময় ব্যায়াম করেছেন তাদের ‘আলৎঝাইমার’স হওয়ার সম্ভাবনা ১৮ শতাংশ কমে যায়, এই তুলনা করা হচ্ছে তাদের সঙ্গে যারা ব্যায়াম করেননি।

আরও বেশি সময় যদি ব্যায়াম করা যায় তাহলে স্বাস্থ্যগত উপকার আরও বেশি। এমনকি অভ্যাসটা যে বয়সেই শুরু করা হোক না কেনো।

দুদিন সামান্য ব্যায়াম করলেই রোগের ঝুঁকি তো কমবেই। তবে যত বেশি ব্যায়াম করবেন উপকারী ততই বাড়বে।

গবেষণার তথ্য বলে, “যারা সপ্তাহে ১০ মিনিট করে পাঁচ দিন ব্যায়াম করেছেন তাদের ‘আলৎঝাইমার’স হওয়ার ঝুঁকি আরও ১৫ শতাংশ কমে যায়।”

বেস্টলাইফ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে আরও জানানো হয়, যারা বৃদ্ধ বয়সে ব্যায়াম শুরু করেছেন তারা উপকার পেয়েছেন এমনটা দেখা যায় গবেষণায়।

‘এমসিআই’ শনাক্ত হওয়া পর যারা ব্যায়ামের অভ্যাস রপ্ত করেছেন তাদের এই রোগের ঝুঁকি কমতে দেখা গেছে ১১ শতাংশ। অপরদিকে যারা আগে ব্যায়াম করতেন কিন্তু, ‘এমসিআই’ শনাক্ত হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছিলেন তাদের ‘আলৎঝাইমার’স’য়ের ঝুঁকি আর সবার মতোই বাড়তে থাকে।

গবেষক দলের মতে, “নিয়মিত ব্যায়াম করলে ‘আলৎঝাইমার’স ডিজিজ’ থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। এমনকি রোগাক্রান্ত হয়ে গেলেও রোগের তীব্রতাকে দমিয়ে রাখা সম্ভব ব্যায়ামের মাধ্যমে।”

গবেষকদের মধ্যে একজন ডা. হানা চো বলেন, “মাইল্ড কগনিটিভ ইম্পেয়ারমেন্ট’ থেকে ‘আলৎঝাইমার’স ডিজিজ’য়ে মোড় নেওয়া থেকে সুরক্ষা দিতে পারে নিয়মিত শরীরচর্চা। তাই এমসিআই ধরা পড়লে চিকিৎসদের উচিত রোগীকে শরীরচর্চার জন্য শক্ত পরামর্শ দেওয়া। রোগাক্রান্ত হওয়া আগে যারা কোনোদিন ব্যায়াম করেননি তারাও উপকৃত হবেন।”

আরও পড়ুন