করোনাভাইরাস: আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার পর ত্বক ও চুলের প্রতিও নজর দিন

কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হওয়ার পর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে ত্বক ও চুলেও সমস্যা দেখা দেয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2021, 08:34 AM
Updated : 12 July 2021, 08:34 AM

ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘মণিপাল হাসপাতাল হোয়াইটফিল্ড’য়ের পরামর্শদাতা, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রবীণ ভারাদওয়াজ বলেন, “সমস্যাগুলো কোনোটা আগে দেখা দেয়, কোনোটা পরে।।”

করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পরও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার দিকে নজর রাখারও পরামর্শ দেন তিনি।

ম্যাকিউলোপ্যাপুলার র‍্যাশ

ত্বকের লালচেভাব বা ফুলে ওঠে অ্যালার্জির মতো। পায়ের আঙ্গুলেও দেখা দিতে পারে লালচে আভা।

দীর্ঘদিন সংক্রমণে ভুগলে রোগীদের মধ্যে এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে এই সমস্যা চলে যায়।

নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এই ধরনের ত্বকের সমস্যা দ্রুত দূর করতে সহায়তা করে।

আরটিক্যারিয়া

এটা এক ধরনের ত্বকের অ্যালার্জি। সাধারণভাবে চুলকানি বলা হয়। ত্বকে বিন্দু বিন্ধু লালচে দাগের সৃষ্টি হয়।

সাধারণত কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরপর রোগীদের এই সমস্যা দেখা দেয়।

এর ফলে অস্বস্তিকর চুলকানি ও জ্বলুনি হয়। যা কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

ডা. ভারাদওয়াজ বলেন, “সংক্রমণের পরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কিছুটা পরিবর্তন হয়। ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে অ্যালার্জি রোধী ওষুধ ও ত্বক শীতলকারী উপাদান ক্যালামাইন সমৃদ্ধ লোশন ব্যবহার উপকারী। এছাড়াও, খাবারে কিছুটা পরিবর্তন যেমন- প্রক্রিয়াজাত ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার বাদ দেওয়া উপকারী।”

ত্বকের সমস্যা সম্পর্কিত চিকিৎসা

ত্বকে র‍্যাশ, চামড়া ওঠা ইত্যাদি সাধারণ সমস্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজে থেকে ঠিক হয়ে যায়।

মুখের র‍্যাশ ও ফুসকুড়ি সারাতে ক্রিম ও মাল্টিভিটামিনের চিকিৎসার প্রয়োজন।

ত্বকের ছত্রাকজনিত সংক্রমণ ‘দাদ’ হিসেবে পরিচিত। যা অনেক রোগীর মাঝে দেখা দেয়।

এই ধরণের রোগ নিরাময়ে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ও ক্রিম ব্যবহৃত হয়।

ডা. ভারাদওয়াজ বলেন, “কোভিদ-১৯ য়ের চিকিৎসায় জটিলতা কাটাতে স্টেরয়েড ব্যবহৃত হয়। ফলে মাথার ত্বক, মুখ ও দেহে ছোট ফোঁড়া ও ব্রণের মতো দেখা দেয়। অনেকে মুখে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ও ব্রণের ক্রিমের পাশাপাশি পরিষ্কারক শ্যাম্পু ব্যবহার করে উপকার পেয়েছেন।”

চুল পড়া

কোভিড-১৯’য়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মানসিক চাপ বাড়ে ও চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। যাকে ‘টেলোজেন এফ্লুবিয়াম’ বলে। এটা সাধারণত আরোগ্য লাভের এক মাস পর থেকে দেখা দেয়। আর সপ্তাহখানেক স্থায়ী হয়।

যদিও এটা সাময়িক সমস্যা। তবে এর প্রখরতা বিবেচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

চুল পড়ার অন্যান্য শর্তগুলোও বিবেচনা করা প্রয়োজন রয়েছে। থাইরয়েড ও রক্ত পরীক্ষা করা এক্ষেত্রে সহায়ক। চুলে সিরাম ব্যবহার করার পাশাপাশি উন্নত ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা উচিত।

কোভিড-১৯’য়ের সংক্রমণ কাটিয়ে ওঠার পরে ত্বক ও চুলের সমস্যা দেখা দেয়। যা ভালো খাদ্যাভ্যাস, বিশ্রাম ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন