প্রাক্তনকে ভোলার সবচাইতে কার্যকর উপায়

সঙ্গীর প্রতি পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে যাওয়াটা এক ধরনের আসক্তি. যা কখনই ভালো নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2021, 07:36 AM
Updated : 4 July 2021, 07:36 AM

বিচ্ছেদের কারণটা যাই হোক, যে মানুষটা একসময় জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে বিরাজমান ছিল হঠাৎ তার অনুপস্থিতি মেনে নেওয়া দুজনের জন্যই কষ্টের।

আর যতই বলুন তাকে ভুলে গেছেন, নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন তো আসলেই কি তাকে পুরোপুরি ভুলতে পেরেছেন?

প্রাক্তনকে ভুলে যাওয়ার উপায় নিয়ে অনেকের অনেক ধরনের মতবাদ থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলেন, দ্রুত আর কার্যকর উপায় একটাই।

যোগাযোগ বন্ধ

বন্ধ মানে একেবারেই বন্ধ, সকল মাধ্যমেই বন্ধ। কয়েকদিনের প্রেমের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হয়ত সহজ। তবে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক কিংবা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জুটির বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বিষয়টা অত্যন্ত কঠিন, অনেকটা অসম্ভবও বলা যায়।

তবে যোগাযোগ বন্ধ না করলে সেই কষ্ট থেকে বের হওয়াও অসম্ভব।

‘ড. রোমান্স’স গাইড টু ফাইন্ডিং লাভ টুডে’র রচয়িতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘সাইকোথেরাপিস্ট’ ড. টিনা বি. টেসিনা বলেন, “তালাকের পর্যায়ে যখন আছেন তখন পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্বটা আইনজীবীর ঘাড়েই থাকা উচিত, কিংবা পরিবারের গুরুজনরা। যদি সন্তান থাকে তবে নিজেদের যোগাযোগ এড়ানো সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে যতটুকু না করলেই নয় ততটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকুন।”

‘বেস্টলাইফ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ফোন আর দেখা তো বন্ধ থাকবেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও একে অপরকে বার্তা পাঠানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।”

আরেক ‘সাইকোথেরাপিস্ট’ ও ‘লাইসেন্সড ক্লিনিকাল সোসাল ওয়ার্কার’ অ্যামি সোবেলম্যান বলেন, “বিচ্ছেদের পর প্রাক্তনের সঙ্গে আরেকবার কথা বলতে, দেখা করতে ইচ্ছা না হওয়াটাই বরং অস্বাভাবিক। যোগাযোগের আগ্রহটা যদি দমাতে পারেন তবে প্রাক্তনকে মন থেকে সরানোর জন্য যে দূরত্বটা তৈরি হওয়া প্রয়োজন সেটা তৈরি হওয়ার সুযোগ হবে।” 

টেসিনা বলেন, “প্রথমদিকে পরস্পর থেকে দূরে থাকাটা কষ্টের হবে। বিশেষত, যদি আপনি সম্পর্কের প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল থাকেন। সঙ্গীর প্রতি পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে যাওয়াটা এক ধরনের আসক্তি. যা কখনই ভালো দিক নয়। আর একমাত্র পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ করতে পারলেই সেই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। প্রথমে খুব কষ্ট হবে, পরে সহজ হয়ে আসবে।”  

বিচ্ছেদের কারণটা মনে রাখতে হবে

যখনই প্রাক্তনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ইচ্ছা হবে তখনই মনে করতে হবে কেনো আপনারা আর একসঙ্গে নেই।

নিউ জার্সির ‘রিলেশনশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশন এক্সপার্ট’ ক্লোয়ি বেলাতোরে বলেন, “পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হবে আপনার নিজের মনেই। প্রাক্তনের সঙ্গে কথা চালিয়ে গেলে কখনই কোনো সুস্থ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসা যায় না। তাই যোগাযোগ বন্ধ করে প্রাক্তনকে ছাড়া জীবনে মানিয়ে নেওয়া অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।”

তাকে মনে পড়ার অর্থ এই নয় যে দেখা করতে হবে

বিরহের সময়টাতে প্রাক্তনকে মনে পড়া স্বাভাবিক ঘটনা। মনে পড়া মানেই এই নয় যে আপনাদের একসঙ্গে থাকাটাই বিধির বিধান। এই সময়টাতে বিভিন্ন ঘটনা ও অনুভূতিকে কোনো অলৌকিক ইঙ্গিত হিসেবে মনে করে নেওয়াটা খুব সহজ ব্যাপার। তবে আসলে সেখানে কোনো ইঙ্গিত নেই।

আর মনে পড়ার মাত্রা কমাতে স্মৃতি তো মুছে ফেলা সম্ভব নয়। যতটুকু সম্ভব তা হল প্রাক্তনের স্মৃতি বিজড়িত যেকোনো কিছু চোখের সামনে না রাখা।

ফোন থেকে প্রাক্তনের ছবি মুছে ফেলতে হবে। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান, বেড়াতে যান, পরিবারকে সময় দিন। যতটা কম একা থাকা যায় এসময় ততই ভালো।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন