ক্যালরি বহুল হলেও বাদাম খাওয়া উপকারী

প্রক্রিয়াজাত খাবার যত কম খাওয়া হবে ততই মঙ্গল।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 05:09 AM
Updated : 24 June 2021, 05:09 AM

* যুক্তরাষ্ট্রের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. রবার্ট লাস্টিগের মতে, স্বাস্থ্যকর খাবার যকৃত ও অন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

* খাবার তালিকায় শর্করা ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের চেয়ে আঁশ-জাতীয় বাদাম ও শাক-সবজি রাখা উচিত।

* এতে করে দীর্ঘমেয়াদী রোগ, যেমন- হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা হ্রাস পায় বলে জানা যায়।

বহু বছর খাদ্যাভ্যাস-সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসা করতে যেয়ে শিশুবিশেষজ্ঞ এবং এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ডা. রবার্ট লাস্টিগ, অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের আসক্তির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে ক্যালরিবহুল স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে বরং কম ক্যালরিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণকে সমর্থন করেন।

ইনসাইডর ডটকম’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা যা খাই সেটাই দেহে প্রকাশ পায়। তবে এখন বলতে বাধ্য হই, তারা যা দেখায় সেটাই আমরা খাই আর সেসবই দেহে প্রকাশ পায়।”

বিভিন্ন প্রক্রিয়াজত ও চিনিযুক্ত খাবারের প্রচারণা সম্পর্কে এভাবেই বিরক্তি প্রকাশ করেন এই চিকিৎসক।

তার ‘মেটাবোলিক’ বইতে তিনি দেখান যে, শিল্পায়ীত খাবার স্বাস্থের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই তিনি খাবার তালিকা থেকে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

তার মতে, অপ্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন- সবজি, বাদাম, চর্বিহীন মাংস বা প্রোটিন গ্রহণ করা ও শর্করা এবং ভাজাপোড়া বাদ দেওয়া অন্ত্র ও যকৃতকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।

বাড়তি চিনি বাদ দেওয়া

যকৃতকে ভালো রাখতে প্রথমেই খাবার থেকে অতিরিক্ত চিনি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। চিনি যকৃতের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়ে রাসায়নিক উপজাত তৈরি করে যা যকৃত, হৃদরোগ ও বিপাকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেইট হজমের ফলে দেহে ভেঙে গ্লুকোজ বা সাধারণ চিনিতে পরিণত হয়। যা দেহের জন্য ক্ষতিকর।

লাস্টিগের মতে, উচ্চ ফ্রুক্টোজ ধরনের কর্ন সুপ একটা পরিচিত প্রক্রিয়াজাত খাবার। তবে এর ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

বেশি করে বাদাম ও শাকসবজি খাওয়া

লাস্টিগের মতে, স্বাস্থ্যকর খাবারের দ্বিতীয় অংশ হল- অন্ত্র সুস্থ রাখার খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আঁশ-জাতীয় খাবার যেমন- সবজি, বীজ ও বাদাম এর অন্তর্ভুক্ত।

আঁশ-জাতীয় খাবার পাচনতন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে যা হজমে সহায়তা করে।

গবেষণায় প্রমাণ মেলে যে, আঁশ-জাতীয় খাবারের ঘাটতিতে ব্যাক্টেরিয়াগুলোর শ্লেষ্মার স্বাস্থ্যকর স্তর ভেঙে পাচনজনিত রোগের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে অন্ত্রের আস্তরণগুলো ভাঙা শুরু করতে পারে।

ওজন ঠিক রাখতে, বিপাক বাড়াতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পর্যাপ্ত আঁশ-জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি।

সেক্ষেত্রে উদ্ভিজ্জ উপাদান যেমন- সবজি, শস্য, মাছ ও অন্যান্য খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উপকারী।

পর্যাপ্ত ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ

বাদামের উচ্চ চর্বি ও ক্যালরির জন্য তা পুষ্টিকর খাবার তালিকার বহির্ভূত ছিল। তবে লাস্টিগের মতে, এটা অন্যতম পুষ্টিকর খাবার যা যকৃত ও অন্ত্র সুস্থ রাখে।

একইভাবে, মাছ ও ডিম পুষ্টিকর খাবার এগুলো অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ বলে জানান, তিনি।

প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দেওয়া

লাস্টিগের মতে, বাড়তি চিনি ও কম আঁশ সমৃদ্ধ খাবার স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিপন্থি। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবারের মেয়াদ বাড়াতে সংরক্ষক উপাদান ব্যবহার করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, এসব খাবার হৃদরোগ ও ক্যান্সারসহ নানান রোগ সৃষ্টি করে এবং দৈনিক প্রায় বাড়তি ৫০০ ক্যালরি যোগ করে।

লাস্টিগের মতে, সুস্থ থাকতে কম কার্বোহাইড্রেট, উচ্চ আঁশযুক্ত উদ্ভিজ্জ খাবার খাওয়া জরুরি। এতে যকৃত ও অন্ত্র সুস্থ থাকে।

আরও পড়ুন